বুধবার, ২৭ জুলাই, ২০১৬, ০৭:৫২:১৯

‘সময়মতো কলেজে আসুন স্যার’

‘সময়মতো কলেজে আসুন স্যার’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার একটি কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকারা যেন সকাল ১০টা থেকে ১০.৩০ মিনিটের মধ্যেই কলেজে চলে আসেন সেটাই লিখেছেন শিক্ষার্থীরা।

জেলার নাড়াজোল রাজ কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদ তাদের ছাপানো প্যাডে ভারপ্রাপ্ত শিক্ষককে উদ্দেশ্য করে লিখেছে, 'রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সব সরকারী কর্মচারীকে ১০ টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে কাজে যোগ দিতে হবে। এই কলেজটিও যেহেতু রাজ্যেই অবস্থিত, তাই সব অধ্যাপক, অধ্যাপিকা আর কর্মচারীদের ওই সময়ের মধ্যে উপস্থিত হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।'

চিঠিটি ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক রনজিৎ খালুয়াকে দেয়া হয়েছে। অধ্যক্ষ না থাকায় অনেক কলেজেই ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকরা কলেজের প্রধান হিসাবে কাজ করেন পশ্চিমবঙ্গে।

রনজিৎ খালুয়ার সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কথা বলতে রাজী হন নি।

তবে একটি সংবাদপত্রকে তিনি বলেছেন, 'ওরা এভাবে চিঠি দিতে পারে না। মিটিং ডেকে আলোচনা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেব।'

শিক্ষকদের নিয়মানুবর্তিতা শেখানোর ছাত্রদের এই প্রচেষ্টা কলেজের অনেক শিক্ষকই ভালভাবে নেন নি।

কিন্তু ওই কলেজের আরেক অধ্যাপক আশীষ ভট্টাচার্য বলেন, 'আমরা অনেকেই দূর থেকে আসি। তাই হয়তো একটু দেরী হয়ে যায়। ছাত্ররা হয়তো সেটাই বলতে চেয়েছে। ওদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি ইতিমধ্যেই।'

শিক্ষকদের নিয়মানুবর্তিতা শেখানোর এই প্রচেষ্টা তৃণমূল ছাত্র পরিষদও ভালভাবে নেয় নি।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভানেত্রী দেবলীনা নন্দী জানিয়েছেন, 'এই ভাষায় স্যারেদের চিঠি লেখাটা হয়তো ওদের ঠিক হয় নি। অন্য ভাবেও বলা যেত বিষয়টা। এমনিতে ওই কলেজে আমাদের ছাত্রদের সঙ্গে কিন্তু শিক্ষকদের সম্পর্ক খুবই ভাল।'

রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চ্যাটার্জী এই চিঠি দেয়ার বিষয়ে বলছেন, 'শিক্ষকরা সময়মতো আসছেন কী না সেটা আমরা দেখব। শিক্ষা দপ্তর রয়েছে তার জন্য। ছাত্রদের এই অধিকার কে দিয়েছে?'

রাজ্যের কলেজগুলিতে শিক্ষক শিক্ষিকাদের সময় মতো না আসা নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। কিছুদিন আগে উত্তরবঙ্গের একটি কলেজে সময়মতো না আসায় কলেজের গেট বন্ধ করে দীর্ঘক্ষণ শিক্ষকদের বাইরে অপেক্ষা করতে বাধ্য করেছিল ছাত্ররা।

অভিযোগের তির সেখানেও ছিল ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধেই। তবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্ষমতাসীন দলের নিয়ন্ত্রনের চেষ্টা নতুন নয়। আগের বামফ্রন্ট সরকারের আমলেও সব কলেজ –বিশ্ববিদ্যালয়ের ওপরে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছিল সি পি আই এম।

বিশেষ করে শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত প্রয়াত নেতা অনিল বিশ্বাসের নাম উঠে আসত এই ব্যাপারে। তাই পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষা ব্যবস্থায় এই রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রনের নামই চলতি কথায় হয়ে গেছে শিক্ষার ‘অনিলায়ন’।-বিবিসি
২৭ জুলাই, ২০১৬ এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে