বুধবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০১:৩২:৩৯

ক্ষোভের মুখে নেপালে ভারতীয় চ্যানেল নিষিদ্ধ

ক্ষোভের মুখে নেপালে ভারতীয় চ্যানেল নিষিদ্ধ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: নেপালে মঙ্গলবার থেকে বন্ধ করে দেওয়া হল ভারতীয় টেলিভিশন চ্যানেল। দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের নাক গলানোর অভিযোগ তুলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেখানকার কেবল টিভি অপারেটররা। এমনই খবর প্রকাশ করেছে নেপালের একটি জনপ্রিয় সংবাদপত্রে।

নেপালের সংবাদপত্রটির খবরে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের প্রদর্শন বন্ধ করে দেওয়া হয়। সোমবার ফেডারেশন অফ নেপাল কেবল টেলিভিশন অ্যাসোসিয়েশন সভা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের এই সিদ্ধান্তে আসার অন্যতম কারণ হল, নতুন সংবিধান প্রণয়নকে কেন্দ্র করে নেপালের ওপর অনানুষ্ঠানিক অবরোধ গড়ে তোলা। এছাড়া দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ভারতের নাক গলানোর অভিযোগ তোলেন তারা। মঙ্গলবার এই তথ্য রয়টার্সের খবরে প্রথম জানানো হয়।

অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশীল পারাজুলি জানিয়েছেন, এটি প্রতীকী। নেপালে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করতে তাদের ওপর বারবার চাপ আসছিল। তাই তারা স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে ওই সব চ্যানেল দেখানো বন্ধের সিদ্ধান্ত নেন।

হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ নেপাল। তবে নতুন সংবিধান অনুযায়ী, দেশটি এখন ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতন্ত্র। কেন্দ্রশাসিত সাতটি প্রদেশে বিভক্ত হচ্ছে দেশটি। এ ছাড়া নতুন সংবিধানে ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক স্বাধীনতা, প্রাচীন যুগ থেকে প্রচলিত ধর্ম ও সংস্কৃতির সুরক্ষা, ধর্মান্তকরণে নিষেধাজ্ঞা, ধর্মীয় ও লিঙ্গ ভিত্তিক সংখ্যালঘুদের প্রতি বৈষম্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা ইত্যাদি বিষয়গুলি রয়েছে।

ইতিমধ্যে নেপালের পোখারা, চিতোয়ান ও মহেন্দ্রনগরে ভারতীয় হিন্দি চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একটি আন্তর্জাতিকমানের পোর্টালে বলা হয়েছে, নতুন সংবিধান নিয়ে প্রভাবশালী প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে নেপালের খানিকটা তিক্ততার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও দেশটিতে নতুন সংবিধান প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় কয়েক দশক ধরেই অন্যতম সমর্থনকারী দেশ ভারত। কিন্তু নতুন সংবিধানের বিষয়ে ভারতের মত, এটা যথেষ্ট ব্যাপকতার ভিত্তিতে হয়নি। সংবিধানকে কেন্দ্র করে দেশটিতে যে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে ভারতেও।

এছাড়া ভারতের উদ্বেগের আরেকটি কারণ, দুই দেশের সীমান্তসংলগ্ন নেপালের তেরাই এলাকায় নতুন সংবিধান নিয়ে ব্যাপক সহিংস প্রতিক্রিয়া। ওই অঞ্চলের জাতিগত মদেশি ও থারু সংখ্যালঘুরা নতুন সংবিধান নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাদের আশঙ্কা, প্রদেশ ভাগ হয়ে গেলে তারা রাজনৈতিকভাবে প্রান্তিক হয়ে পড়বে। মদেশি ও থারু জনগোষ্ঠী মিলে নেপালের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ। মদেশিদের সঙ্গে ভারতের কিছু জায়গার জাতিগত ঘনিষ্ঠতাও রয়েছে।

প্রতিবেশী দেশ, ভারত বরাবরই বলে আসছে, আরও আলোচনার ভিত্তিতে সংবিধানটি প্রণয়ন করা। যাতে বিরোধ কম হয়। সংবিধানের বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনায় বসারও আহ্বান জানিয়েছে ভারত।

৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে