আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত সার্ক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে পাকিস্তান প্রশাসনের হাতে চূড়ান্ত হেনস্থার স্বীকার হতে হল ভারতীয় সাংবাদিকদের। তাদের মূল অনুষ্ঠান কভার করতে দেওয়া হয়নি। এমনকী, প্রবেশদ্বারের সামনেও দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি।
ঘটনার সূত্রপাত হয় পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিসার আলি খান প্রবেশদ্বারের সামনে দাঁড়িয়ে সার্ক দেশগুলির অতিথিদের বরণ করার সময়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং ও পাকিস্তানী প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসবেন। ভারতীয় ও পাকিস্তানী সাংবাদিকরা তাদের জন্য অপেক্ষা করছেন। আচমকাই কয়েকজন পাকিস্তানী অফিসার ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছ’জন ভারতীয় সাংবাদিককে ‘ভেন্যু’ ছেড়ে চলে যেতে বলে। কারণ জানতে চাইলে পাকিস্তানের তরফে জানানো হয়, অনুষ্ঠানে তো দূরের কথা, প্রবেশদ্বারের বাইরেও ভারতীয় সাংবাদিকদের দাঁড়ানোর অনুমতি নেই।
দূরদর্শনের আর জয়শ্রী পুরি ও এএনআইয়ের অজয় কুমার শর্মাকে তাদের ক্যামেরা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই সময় একজন ভারতীয় কূটনীতিবিদ এসে পাকিস্তানী অফিসারদের থামাতে গেলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এদেশের সাংবাদিকরা জানতে চান, পাকিস্তানের সাংবাদিকরা যে অনুষ্ঠানে স্বাধীনভাবে ছবি তুলছেন, সেখানে ভারতীয়দের বাধা দেওয়া হচ্ছে কেন? সার্ক-এর প্রোটোকল অনুযায়ী আহ্বায়ক দেশকে সমস্ত সদস্য দেশের সংবাদমাধ্যমকে মূল অনুষ্ঠান ‘কভার’ করতে দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
কিন্তু পাকিস্তানী অফিসাররা জানিয়ে দেন, সার্ক সম্মেলনের প্রবেশদ্বার ছেড়ে চলে যেতে হবে ভারতীয় সাংবাদিকদের। এমনকী, কয়েকজন অফিসার এমনভাবে দাঁড়িয়ে পড়েন, যাতে ভারতীয় সাংবাদিকরা দেখতেও না পারেন, অনুষ্ঠানে কারা যোগ দিতে আসছেন! সেই ভিড়ের মধ্যে ছিল পাকিস্তানী সেনা ও পুলিশও, অবশ্যই সাদা পোশাকে। যার ফলে রাজনাথ সিং যখন সম্মেলনে যোগ দিতে আসেন, সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দী করতে ব্যর্থ হন ভারতীয় সাংবাদিকরা। নিসার আলি খানের সঙ্গে তার করমর্দনের ছবিও তুলতে পারেননি ভারতীয় সাংবাদিকরা।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যমের তরফে এও প্রচার করা হচ্ছে, রাজনাথ সিং নাকি অন্তত ছ’বার মূল পর্বের অনুষ্ঠান ছেড়ে ভারতে ফোন করেছেন। যদিও ভারতীয় সাংবাদিকরা এ কথা স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, রাজনাথ সিং সেদিন ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন ব্যবহার করেননি। মাত্র দু’বার তিনি ভারতে ফোন করেছেন, তাও এক ভারতীয় অফিসারের ফোন থেকে। পাকিস্তানে সাংবাদিকদের হেনস্তার ঘটনা ভাল চোখে দেখছে না নয়াদিল্লি। এমনকী রাজনাথের বক্তব্য কাটছাঁটের ঘটনাও যোগ হয়েছে এর সঙ্গে। সব মিলিয়ে এই ঘটনা যে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে বড় প্রভাব ফেলবে এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
৮ আগস্ট ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস