মঙ্গলবার, ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১০:৪৩:৫৬

অমিতাভের সাথে অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী নিয়ে মুখ খুললেন রেখা

অমিতাভের সাথে অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী নিয়ে মুখ খুললেন রেখা

বিনোদন ডেস্ক : অমিতাভ-রেখার অসমাপ্ত প্রেম আজো ভারতীয় উপমহাদেশের এক বিশেষ প্রজন্মের কাছে আলোচনার বিষয়। কী এমন হয়েছিল যে, এই দুই ‘মেড ফর ইচ আদার’ এক ঝটকায় বিচ্ছেদে গেলেন?

রোরিং সেভেন্টিজ। ‘আইকন’  শব্দটা তখনো বাঙালির হাঁড়ি-হেঁসেলের সম্পত্তি হয়ে ওঠেনি। যুবকেরা কান ঢাকেন চুলে, বেস ভয়েসে ফিস ফিস করে ব্যক্ত করেন তাদের সাধ-আহ্লাদ-প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি। আর তরুণীরা? তারা ভানুরেখা গণেশন নাম্নী এক চিরতরুণীর সর্বঙ্গ থেকে ঠিকরে পড়া আলো গায়ে মেখে যা হয়ে উঠতে চাইছিলেন, তাকে ‘কুহক’ ছাড়া আর কীই বা বলা যায়! বালিশের তলায় সঙ্গোপনে রাখা সিনেমা পত্রিকার প্রচ্ছদে তখন অমিতাভ আর রেখার প্যাশন থেকে কনে দেখা আলো উপচে উঠছে। ‘এক্সট্রা ম্যারিটাল’ শব্দটা তখনো তেমন জনপ্রিয় নয় বাঙালির সংসারে। নৈতিকতা তখন সবে টাল খেতে শুরু করেছে মধ্যবিত্তের ভূগোলে। এমন এক জমজমাট পরিস্থিতিতেই সব ‘সিলসিলা’ এক লহমায় বন্ধ হয়ে যায়। রেখা তার কুহক সামলে কেমন যেন ‘বিগত’ হয়ে ওঠেন। আর রাগী যুবক সেই অসম্পূর্ণ প্রেমের পরে ক্রমপরিণতির দিকে পা বাড়ান।

অমিতাভ-রেখার অসমাপ্ত প্রেম আজো ভারতীয় উপমহাদেশের এক বিশেষ প্রজন্মের কাছে আলোচনার বিষয়। কী এমন হলো যে, এই দুই ‘মেড ফর ইচ আদার’ এক ঝটকায় ছেড়ে গেলেন? ঠিক কোন সমে এসে তাল কেটে গেল? এই সব প্রশ্ন আজো তাদের ভাবায়, যাদের কানের পাশের চুলে পাক ধরেছে, গেঁটেবাত থাবা বসাতে শুরু করেছে হাঁটুতে। এমন দিনেই বলা যায়, সাব্যস্ত করলেন রেখা স্বয়ং। অমিতাভ এই ব্যাপারে চিরকালই নীরব থেকেছেন।

কিন্তু সিলভার স্ক্রিনের এই চিরযুবতী নীরবতা ভাঙলেন জাগেরনাট বুকস থেকে প্রকাশিত ইয়াসের উসমানের লেখা ‘রেখা: দি আনটোল্ড স্টোরি’ গ্রন্থে। এই বইতে উসমান উদ্ধার করেছেন ১৯৭৮ সালে এক জনপ্রিয় সিনেমা পত্রিকায় দেয়া রেখার সাক্ষাৎকারকে। যেখানে রেখা জানিয়েছিলেন, ‘মুকদ্দর কা সিকন্দর’ ছবির এক স্ক্রিনিংয়ে প্রথম সারিতে বসা জয়া বচ্চনের দু’চোখ বেয়ে গড়িয়ে আসা অশ্রুকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন তিনি। এর এক সপ্তাহ পরেই অমিতাভের কাছ থেকে বার্তা আসে, আর নয়। আর কোনো ছবিতে তিনি ও রেখা একত্র হবেন না। কেন এমন সিদ্ধান্ত, প্রশ্ন অবশ্যই করেছিলেন রেখা। কিন্তু অমিতাভের উত্তর ছিল— না, এবিষয়ে কোনো শব্দ তিনি উচ্চারণ করতে চান না।

ওই একই সাক্ষাৎকারে রেখা জানিয়েছিলেন, অমিতাভ এক সময়ে তাকে দু’টি আংটি উপহার দেন। সেই আংটি দু’টি তিনি কখনোই খুলে রাখেননি। কিন্তু ‘মুকদ্দর কা সিকন্দর’-এর ঘটনার পরে তিনি আর সেগুলি পরেননি। উপহারদাতাকেই ফিরিয়ে দেন। ‘খুবসুরত’ থেকেই সেই আংটি দু’টি উধাও হয় রেখার চম্পকাঙ্গুলি থেকে। এককথায়, বিচ্ছেদ আক্ষরিকভাবেই সম্পন্ন হয়।

আজ আর কোনো আড়াল নেই রেখার অধরে। ৬১ বছর বয়সে দাঁড়িয়ে কুহককে সামলিয়ে অকপট হয়ে দাঁড়িয়েছেন ‘উমরাও জান’। তার বক্তব্য কোনো বিস্ফোরণ সৃষ্টি করল কি করল না, তাতে আজ আর কিছু যায় বা আসে না। অমিতাভ নামক মহাকাব্যে তিনি ‘অন্য নারী’ হয়েই থাকলেন কিনা জনতে চান আজকে অনেকেই। রেখার ভাষায়— এমন ত্রিভুজে লোকে স্ত্রীকেই সমর্থন করেন। কারণ, স্ত্রীর অধিকারেই স্বামী থাকেন। কিন্তু ‘অন্য নারী’ সে-ই, যাকে পুরুষ স্ত্রীর উপস্থিতিকে অতিক্রম করে কামনা করে। আজ জয়ার অধিকারে কী রয়েছে না রয়েছে, তাতে তার কিছু এসে যায় না।

সত্যিই এসে যায় না কিছুই। অমিতাভ-ঘরণির কাছে অবশ্যই রয়েছেন সেই রক্তমাংসের মানুষ। কিন্তু রেখার জাদুবাক্সে যা রয়েছে, তার নাম রূপকথা। তার বাস্তবমূল্য বলে কিছু হয় না। সে মূল্যাতীত।-এবেলা
০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/শান্ত/মো:শাই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে