রবিবার, ০২ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:৫৩:৫৩

সচিন-সিন্ধুর কোলাজে শুরু ফুটবলের মহাযুদ্ধ

সচিন-সিন্ধুর কোলাজে শুরু ফুটবলের মহাযুদ্ধ

বিনোদন ডেস্ক: এর আগে বায়োডাটায় বড় টুর্নামেন্টের অভিজ্ঞতা বলতে ছিল সাউথ এশিয়ান গেমস। সদ্য শেষ হওয়া বরদলৈ ট্রফিকে নবরূপ দেওয়ার চেষ্টা হলেও ধারে-ভারে তা আইএসএলের জৌলুসের কাছে শিশু।

ঘরোয়া দল নর্থইস্ট ইউনাইটেডের মালিক বিস্তর চাপাচাপি করলেও, গোটা অনুষ্ঠানের ওজন বইবার মতো সামর্থ্য গুয়াহাটির থাকবে কিনা, তা নিয়ে চিন্তায় ছিল জন আব্রাহাম শিবির এবং আইএসএল কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু শনিবার সন্ধে সাড়ে ছ’টায় যে উন্মাদনা, পেশাদারিত্ব ও আবেগ নিয়ে তৃতীয় আইএসএল গুয়াহাটিতে শুরু হল, তা দেখে স্বয়ং আইএসএল চেয়ারম্যান নীতা অম্বানী, কেরল ব্লাস্টার্সের মালিক সচিন তেন্ডুলকর, চেন্নাইয়ানের মালিক মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ও অভিষেক বচ্চনরা আপ্লুত।

আইএসএলের উদ্বোধনে গত দু’বারের কলকাতা-চেন্নাইকে রীতিমতো টক্কর দিল অসম তথা গুয়াহাটি। যে শব্দব্রহ্ম সরুসজাইয়ের ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামে ঘরের দলের জন্য শোনা গেল, তা ডেসিবেলের নিরিখে যুবভারতী বা ইডেনকেও টক্কর দেবে। ফুটবলের হাত ধরে আগে কখনও বলিউড আর ক্রিকেটের এমন কোলাজ  দেখেনি শহর।

উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সবার আগে মাঠে ঢোকেন সচিন তেন্ডুলকর ও মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। শুক্রবারই মুক্তি পেয়েছে ধোনির বায়োপিক। পর্দার নায়ককে দেখে যেমন জয়ধ্বনি উঠেছে চারিদিকে সে রকমই এ দিন রিয়াল লাইফের ধোনিকে দেখেও প্রায় একই গর্জন উঠল। ধোনির পিছনেই তখন দলের হলুদ জার্সি পরা সচিন তেন্ডুলকর। তাঁর দিকে চোখ পড়ল অনেক পরে।

কাঁটায় কাঁটায় সাড়ে পাঁচটায় জ্যাকলিন ফার্নান্ডেজের নাচে অনুষ্ঠানের সূচনা। এরপর মোটরবাইকের কনভয় নিয়ে মাউন্টেন বাইক চেপে জনের প্রবেশ। মঞ্চে ডাকলেন গত বারের আয়োজক তথা চ্যাম্পিয়ন দল চেন্নাইয়ানের মালিক অভিষেক বচ্চনকে। তারপর প্রবেশ ধোনির। তিন মালিক তখন বন্ধুত্ব দূরে রেখে একে অপরকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।

চেন্নাইয়ান মালিক ধোনি যেমন বললেন, ‘‘এ বার চেন্নাই চ্যাম্পিয়ন হবে।’’ যে কথায় সায় দিয়ে চেন্নাইয়ানের আর এক মালিক অভিষেকও বললেন, ‘‘আমাদের থেকে ট্রফি নিয়ে যেতে পারবে না কেউ।’’ নর্থইস্ট মালিক জন আবার পাল্টা দেন, ‘‘এ বার নর্থইস্টও তৈরি জিততে।’’

তিন মালিকের কাপ ধরে রাখা আর কেড়ে নেওয়া নিয়ে খুনসুটির মধ্যেই ‘আলোর হাতি’ চেপে মাঠে ঢোকেন সচিন। যিনি প্রবেশ করতেই শুরু ‘সচিন সচিন’ চিৎকার। কেরল ব্লাস্টার্স মালিক সচিনের কথায় অবশ্য জোর ছিল ফেয়ার প্লে-র উপরে।

অনুষ্ঠানের পরের অংশে মঞ্চ কাঁপানোর ভার নেন আলিয়া ভট্ট, বরুণ ধবন, জ্যাকলিনরা। বলিউডি নাচের পরে গারো ওয়াংগালা, মণিপুরি ঢুলিয়াদের তালে নাচল কানায় কানায় ভরা স্টেডিয়াম। জাতীয় সঙ্গীতে শিলং চেম্বার কয়্যার।

আইএসএল কিক অফের বল নিয়ে যে  মেয়েটি মঞ্চে এলেন, গত বছর সাউথ এশিয়ান গেমসের সময়ও তিনি এসেছিলেন এখানে। সেই সময় অবশ্য একেবারে নীরবে। কারও তেমন পাত্তা না পেয়ে। কিন্তু রিও অলিম্পিক্সে সেই মেয়ের হাত ধরেই রুপো এসেছে ভারতে। এত তারকার মধ্যেও তাই এ দিন রিও অলিম্পিক্সে রুপোজয়ী সেই পিভি সিন্ধুই সম্ভবত সবচেয়ে বেশি উষ্ণতা পেলেন।

সিন্ধু বলেন, “গত কয়েক সপ্তাহে জীবন বদলেছে। পদকের গৌরব দায়িত্ব বাড়িয়েছে আরও। আর এই মাঠে দর্শকদের উচ্ছ্বাস ও সমর্থন দেখে দারুণ লাগছে।”

কেরলের বিরুদ্ধে ম্যাচেও অবশ্য শেষ হাসি হাসল নর্থইস্ট। দু’দলেই ছিল গুয়াহাটির দুই স্থানীয় প্রতিভা। নর্থইস্টে হোলিচরণ নার্জারি ও কেরল ব্লাস্টার্সে বিনীথ রাই। কেরল ব্লাস্টার্সকে ১-০ হারাল জনের দল। গোল করলেন কাতসুমি। দিেনর শেষটা তাই হল অনেকটা সেই প্রবাদের মতোই, সব ভাল যার শেষ ভাল তার। -আনন্দবাজার।
০২  অক্টোবর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে