বিনোদন ডেস্ক : মুম্বাইয়ের অ্যারে মিল্ক কলোনির গলি। সরু পিচরাস্তার দু’পাশ দিয়ে ঘন জঙ্গল। ১৯৪৯ সালে মুম্বইয়ের ওয়েস্টার্ন এক্সপ্রেস হাইওয়ের পাশে এই কলোনির প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। ১৯৫১ সালে এই কলোনির উদ্বোধন করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু। ৪ হাজার একর জমির উপর তৈরি এই অ্যারে মিল্ক কলোনিতে রয়েছে বিশাল বাগান থেকে নার্সারি, লেক, অবজারভেশন প্যাভিলিয়ন, পিকনিক স্পট, দুগ্ধ উৎপাদন কেন্দ্র।
এছাড়াও ১,২৮৭ হেক্টর জমিতে রয়েছে ৩২টি গরু পালন কেন্দ্র। সংখ্যা প্রায় ১৬ হাজার। এলাকার প্রাকৃতিক রূপ এতটাই সুন্দর যে একে ‘ছোটা কাশ্মীর’ নামেও ডাকা হয়। এমনকী, সেই পাঁচের দশক থেকেই বহু ছবির শ্যুটিংও হয়েছে এরে মিল্ক কলোনিতে।
এহেন এরে মিল্ক কলোনি নাকি আদতে ভুতের আড্ডা। বহু মানুষই নাকি ভুত প্রত্যক্ষ করেছেন। দিনের বেলায় এলাকাটি ঘোরার অন্যতম কেন্দ্র। কিন্তু, রোদ পড়তেই এলাকা ফাঁকা করে পালিয়ে যায় মানুষ। এরে মিল্ক কলোনির ভিতর দিয়ে যাওয়া রাস্তার নামও হয়ে গিয়েছে ‘হন্টেড রোড’। যাঁরা শ্যুটিং করতে এখানে আসেন তাঁরাও নাকি দিনের আলো ফুরনোর আগেই পাততাড়ি গুটিয়ে চলে যান।
এখানে কী রকম ভুতের আড্ডা? এরে কলোনির লাগোয়া এক কারখানার গাড়ি চালকের দাবি, রাত ২টোর সময় তিনি এখানকার রাস্তা দিয়ে ফিরছিলেন। আচমকাই অনুভব করেন গাড়ির পিছন সিটে কেউ বসে আসেন। কিন্তু, ঘাড় ঘুরিয়ে কাউকেই দেখতে পাননি তিনি। মুখ সামনে ফেরাতেই বুঝতে পারেন গোটা গাড়িতে অসংখ্য মানুষ বসে আছে এবং নিজেদের মধ্যে ফিসফাস করছে। গাড়ি সামনের সিটেও একজন বসে আছে বলে নাকি অনুভব করেছিলেন ওই চালক। আতঙ্কে ওই গাড়ি চালক ১০০ কিমি গতিবেগে গাড়ি চালিয়ে সেই রাতে বাড়ি ফিরেছিলেন। এরপর ওই রাস্তা দিয়ে এলেও কখনও অন্ধকারে এরে মিল্ক কলোনির ভিতর দিয়ে গাড়ি চালাননি তিনি।
আরও বেশ কয়েক জনের বক্তব্য, রাতে ওই রাস্তায় এক মহিলাকে প্রায়শই দাঁড়িয়ে কাঁদতে দেখা গেছে। কিন্তু, যাঁরা গাড়ি থামিয়ে ওই মহিলাকে সাহায্য করার কথা ভেবেছেন, তাঁদের ভয়ানক সব অভিজ্ঞতা হয়েছে।
কারণ, ওই মহিলার মুখ চুলে ঢাকা থাকে। চুল সরিয়ে ওই মহিলা যখন তাকিয়েছেন তখন নাকি তাঁর মুখে অসংখ্য ক্ষত আর রক্তের দাগ দেখা গিয়েছে। এরপর সেই মহিলা আচমকাই মিলিয়ে গিয়েছেন রাস্তায়। আর চারিদিকে অট্টহাসির আওয়াজ শোনা গেছে। অনেক চালক নাকি আবার এরে মিল্ক কলোনির রাস্তা দিয়ে অন্ধকারে গাড়ি চালাতে চালাতে অদৃশ্য হাতের থাপ্পড়ও খেয়েছেন।
অনেকে আবার শুধু এই রাস্তায় অদৃশ্য আত্মার হাসির আওয়াজ পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন। যদিও, বহু মানুষই এসবকে আষাঢ়ে গল্পও বলেও পাল্টা দাবি করেছেন। তাঁদের দাবি, ফাঁকা রাস্তা আর অন্ধকার দেখে আতঙ্কে এমন ভুলভাল কথা বলেছেন গাড়ি চালকরা। -এবেলা।
০২ নভেম্বর, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএম