আমিনুল ই শান্ত : মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর নতুন সিনেমা ‘ডুব’। কিছুদিন আগেই সিনেমার শুটিং শেষ হয়েছে। মুক্তি পেতে এখনো বাকি। অথচ এরই মধ্যে সিনেমাটি নিয়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা। ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী সিনেমাটি হুমায়ূন আহমেদের জীবনী নিয়ে নির্মিত হচ্ছে। যদিও বিষয়টি অস্বীকার করেছেন নির্মাতা।
এ প্রসঙ্গে জানতে যোগাযোগ করা হয় প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘এ নির্মাতা (মোস্তফা সরয়ার ফারুকী) বলেছেন, তিনি কোনো বায়োপিক বানাচ্ছেন না। তিনি আবার এটাও সরাসরি বলেননি, এই সিনেমার সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি যদি বলতেন, এই সিনেমার সঙ্গে হুমায়ূন আহমেদের জীবনের কোনো সম্পর্ক নেই, তাহলে বিষয়টি পরিষ্কার হতো। তিনি বিষয়টি পরিষ্কার করেননি। আমি আশা করব, তিনি সিনেমাটি হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে বানিয়েছেন না কি বানাননি স্পষ্টভাবে হ্যাঁ অথবা না-এর মাধ্যমে পরিষ্কার করে বলবেন। কারণ মাঝামাঝি কোনো উত্তর হয় না।’
সিনেমাটি হুমায়ূন আহমেদের জীবন থেকে প্রেরণা নিয়ে কিংবা তার ছায়া অবলম্বনে নির্মিত- এমন কথাও শোনা যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে শাওন বলেন, ‘কোনো বিষয়ে নিশ্চিত না হয়ে কমেন্ট করা ঠিক না। কারণ আদৌ তিনি হুমায়ূন আহমেদের জীবনের কোনো অংশ নিয়েছেন কিনা তাতো নিশ্চিত না। গুঞ্জন শুনে রিঅ্যাকশনের কোনো মানে হয় না। মুক্তির পর যদি দেখা যায় হুমায়ূন আহমেদের জীবনের দুটি বা একটা ঘটনা রয়েছে। তাতে যদি তথ্যগত ভুল থাকে তখন তো আবার কিছু করার থাকবে না। শুধু বলব, বিষয়টি পরিষ্কার করুন। ভাসাভাসা উত্তর আমাকে খুব দ্বিধায় ফেলেছে।’
দেশের কোনো পত্রিকায় বিষয়টি প্রকাশিত হয়নি। হয়েছে ভারতীয় একটি পত্রিকায়। এটিও প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে যে, তারা এমন তথ্য কীভাবে পেল? এ প্রসঙ্গে শাওন বলেন, ‘পত্রিকাটি এসব তথ্য কোথায় পেয়েছে তা আমি বলতে পারব না। ওটা তারাই ভালো বলতে পারবে। তবে সেই রিপোর্ট পড়ে এটুকু বুঝতে পারছি- হুমায়ূন আহমেদের জীবনের সঙ্গে মিল রয়েছে। ইরফান খান হুমায়ূন আহমেদের হাঁটাচলা শিখেছেন। তাহলে এর অর্থ কী দাঁড়াল। আমি আমার দেশের গুণী একজন নির্মাতার কাছে আশা করব, তিনি তার বক্তব্য পরিষ্কার করবেন। এড়িয়ে যাবেন না। এটা নিয়ে লুকোচুরির কিছু নেই। তিনি সিনেমার গল্প না-ই বলতে পারেন। শুধু এটুকু নিশ্চিত করলেই হবে যে, হুমায়ূন আহমেদের জীবনের সঙ্গে এ সিনেমার কোনো মিল নেই।’
শাওন আরো বলেন, ‘হুমায়ূন আহমেদ এই দেশের সম্পদ। এমন নয় যে, কথাটা শুধু আমি বলছি। আমার মনে হয়, আপনারাও আমার সঙ্গে একমত হবেন। বাংলাদেশের অন্তত ৮০ ভাগ মানুষও তাই বলবেন। এমন একজন মানুষের জীবনের যে কোনো ঘটনার আংশিক সত্যটা যদি তুলে ধরা হয় তাহলে সহজেই মানুষ বিভ্রান্ত হবেন। আংশিক সত্য মিথ্যের চেয়েও খারাপ। এমন মানুষকে নিয়ে যদি কোনো কিছু করা হয় তবে দেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে তা জানার অধিকার আমারও রয়েছে। আমি শুধু এটুকু জানতে চাই, হুমায়ূন আহমেদ এ সিনেমায় আছেন নাকি নেই? আর যদি থেকে থাকেন তবে কীভাবে আছেন? কারণ কাজের সত্যতা ও গল্পের সত্যতা থাকতে হবে।’ -রাইজিং
০৬ নভেম্বর ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি