শনিবার, ১৭ অক্টোবর, ২০১৫, ০৩:০২:৩৩

শুক্রবার প্রেক্ষাগৃহে উন্মোচিত হল ‘রাজকাহিনী’

শুক্রবার প্রেক্ষাগৃহে উন্মোচিত হল ‘রাজকাহিনী’

বিনোদন ডেস্ক : দুই ছবি, দুই মেরু। একই সময়ে। কিন্তু দুয়েরই পরিচালক আগের সব কাজ ভুলে নেমেছেন যেন। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিতে ছবির তারকারাও কি চেনা খোলস ছেড়ে বেরোবেন? শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস এর ব্যানারে শুক্রবার মুক্তি পেল অবিভক্ত দুই বাংলার বিভক্তকরণ নিয়ে সিনেমা ‘রাজকাহিনী’। কলকাতা শহরের বহু প্রেক্ষাগৃহে৷ বলিউডের চিত্রপরিচালক এবং প্রযোজক মহেশ ভাট 'রাজকাহিনী' দেখার পরই ট্যুইটারে লিখেছিলেন, 'দ্য মোস্ট রেলেভেন্ট ফিল্ম অফ দ্য টাইমস উই লিভ ইন!' তবে এটাই তার একমাত্র ট্যুইট নয়৷ এই ছবি নিয়ে ক্রমাগত ট্যুইট করে চলেছেন তিনি৷ এবং বলিউডের আরও কিছু ব্যক্তিত্বকেও এই ছবি দেখানোর উদ্যোগ নিয়েছিলেন মহেশ৷ যেমন তাঁর কন্যা প্রযোজক-অভিনেত্রী পূজা ভাট৷ তিনি যেদিন 'রাজকাহিনী' দেখলেন, তার পরদিন সকাল দশটা নাগাদ ফোনের ওপার থেকে বলছিলেন, 'বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা, আপনি যখন ফোনটা করলেন, তখন আমি 'রাজকাহিনী'-র কথাই ভাবছিলাম৷ গতকাল রাতে ছবিটা দেখেছি৷ সারারাত ঘুমোতে পারিনি৷ কে জানে কেন, ছবিটা ক্রমশ মাথার মধ্যে চেপে বসছে! ভারত-পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্কের নিরিখে 'বাজরঙ্গি ভাইজান' যদি এই সময়ের গুরুত্বপূর্ণ ছবি হয়, তা হলে সেই নিরিখে 'রাজকাহিনী'-ও মাস্টওয়াচ সিনেমা৷ রিজিওনাল, মেড ফর নিশ অডিয়েন্স-না, এরকম কোনও শব্দ আমি 'রাজকাহিনী'-র সঙ্গে জুড়তে পারছি না৷ 'রাজকাহিনী' ভারতীয় ছবি৷' এই ছবির কোন বিষয়টা আপনাকে সবচেয়ে বেশি নাড়া দিয়েছে? পূজার উত্তর, 'এই ছবি যে বাজেটে তৈরি তা দেখে চমকে গিয়েছি৷ কখনওই মনে হয়নি বাজেটের জন্য ছবি তৈরিতে কোথাও কোনওভাবে কমপ্রমাইজ করা হয়েছে! অভিনেতাদের দুর্দান্ত আভিনয় ছবিটাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গিয়েছে৷ এই ছবি দেখে বলিউডের কিছু প্রযোজক শিখতে পারেন, কীভাবে লিমিটেড রিসোর্সের মধ্যে দিয়েই মনে রাখার মতো একটা ছবি তৈরি করা যায়৷' বলিউডের পরিচালক সুধীর মিশ্রও 'রাজকাহিনী' দেখার পর একইরকম আপ্লুত ছিলেন৷ তার মতামত, ''রাজকাহিনী'-র ইমপ্যাক্ট অন্য মাত্রায়৷ ছবির যে বক্তব্য, সেটা আমি এখনই বলে দিতে চাই না, দর্শক সিনেমাহলে গিয়ে জানলেই ভালো, কিন্তু এটুকু বলব, সেই বক্তব্য উপলব্ধি করার পরই ভেতরে-ভেতরে একটা ছটফটানি হতে পারে৷' বলিউডের অন্য এক পরিচালক ইমতিয়াজ আলিও দেখে ফেলেছেন 'রাজকাহিনী'৷ তিনি বলছেন, 'দেশভাগ, ভারত-পাকিস্তান হওয়ার ঘটনাটা আমাদের দেশের ইতিহাসের একটা উচ্চকিত অধ্যায়৷ 'রাজকাহিনী' উচ্চস্বরে সেই উচ্চকিত অধ্যায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছে৷ দেশভাগ নিয়ে তত্কালীন দ্বিচারিতার মোটেও বাহক হয়নি 'রাজকাহিনী', বরং, নির্ভীকচিত্তে তা প্রত্যাখ্যান করেছে৷ এমন একটা দৃঢ় ছবি, যা আমাকে ভাবিয়েছে৷ এই কাহিনিটা মানুষের শোনা দরকার, তাই আমি চাইব মানুষ ছবিটা দেখুন৷ সৃজিতকে ধন্যবাদ, 'রাজকাহিনী' তৈরির জন্য৷ অভিনেত্রীদের কাজ রিমার্কেবল, এটা আলাদা উল্লেখের দাবি রাখে৷' অভিনেত্রী বিদ্যা বালানও একইরকম অভিভূত এই ছবি দেখে৷ বিদ্যার বক্তব্য, 'আমি 'রাজকাহিনী' দেখে চমকে গিয়েছি৷ ইট ইজ ভেরি পাওয়ারফুল অ্যান্ড ইয়েট ইউনিক৷ কারণ নিজের অভিজ্ঞতা থেকে মনে হয়, যখন একটা ছবি সম্পর্কে মাথার মধ্যে ভাবনা আসতে থাকে, তখন সেই ছবিকে ঠিক হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারি না৷ আবার যখন একটা ছবি হৃদয় ছুঁয়ে যায়, তখন মাথার মধ্যে ভাবনা চিন্তা বন্ধ হয়ে যায়! কিন্তু 'রাজকাহিনী' দেখার সময় দু'রকমই হল৷ সৃজিত আর তার টিমকে ধন্যবাদ৷ ঋতুপর্ণা, যিশু, সুদীপ্তা এবং বাকি সব অভিনেতাদের অভিনন্দন৷ যাঁদের জন্যই এই ছবি এত বাস্তব, মনে হয় চোখের সামনেই ঘটছে এত কিছু৷' আসলে পশ্চিমবঙ্গের গণ্ডি ছাড়িয়ে ভারতীয় ছবি হয়ে ওঠার অঙ্গীকার নিয়েই যেন 'রাজকাহিনী' মাঠে নেমেছে! এ বছরের 'ম্যামি'-তে 'রাজকাহিনী'-র স্পেশ্যাল স্ক্রিনিং থাকছে৷ তারপরই ভারতজুড়ে মুক্তি পাবে এই ছবি৷ সুখবরও একটা নয়! আগাম দিনে আরও হবে, তেমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে এখনই৷ এই যেমন 'রাজকাহিনী' এবার কেরালা ইন্টারন্যাশানাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের কম্পিটিশন সেকশনেও অন্যতম নির্বাচন৷ সৃজিত মুখোপাধ্যায় কী বলছেন? পরিচালক হেসে বলছেন, 'আজকেই ছবিটা দেখুন৷ বাকি কথা তারপর!' ১৯৪৭ সালে দেশভাগের প্রেক্ষাপটে নির্মানাধীন এ চলচ্চিত্রে একঝাঁক অভিনেতা-অভিনেত্রী অভিনয় করেছেন। ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, জয়া আহসান, পার্ণো মিত্র, প্রিয়াঙ্কা সরকার, সোহিনী সরকার, সায়নী ঘোষ, ঋধিমা ঘোষ, দিতিপ্রিয়া রায়, এনা সাহা, কৌশিক সেন, আবীর চট্টোপাধ্যায়, যীশু সেনগুপ্ত, নাইজেল আকারা, কাঞ্চন মল্লিক, রুদ্রনীল ঘোষ, রজতাভ দত্ত, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী সহ আরো অনেকে অভিনয় করেছেন এই চলচ্চিত্রে। ১৭ অক্টোবর, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসএস/এসবি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে