বিনোদন ডেস্ক : ২৯ এপ্রিল বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিসহ টেকনিশিয়ানদের ১৩টি সংগঠন চিত্রনায়ক শাকিব খানকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সংগঠনটির নেতারা অভিযোগ করেন শাকিব চলচ্চিত্র অঙ্গনকে হেঁয় করে সম্প্রতিকালে বিভিন্ন মিডিয়াতে বক্তব্য দিচ্ছেন। এজন্য শাকিবকে উকিল নোটিশও পাঠানো হয়।
এরই জেরেই গতকাল রবিবার এফডিসিতে এসে শাকিব চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতিসহ অন্যান্য সংগঠনের নেতাদের কাছে ক্ষমা চান। তার বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন। কিন্তু এখনও সংগঠনগুলোর নেতারা তাদের অভিমত জানাননি।
এর আগে রোববার বিকালে একটি অনলাইন সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলেন বাংলাদেশ সেন্সর বোর্ডের সদস্য ও পরিচালক সমিতির সভাপতি মুশফিকুর রহমান গুলজার। সাবেক এই সাংবাদিক শাকিব বিষয়ে অনেক কথা অকপটে বলেন।
তিনি বলেন, আমরা বিদেশি শিল্পীদের দেশের চলচ্চিত্রে নিষিদ্ধ করার জন্য আন্দোলন করেছি। শাকিব খানও তখন আমাদের সঙ্গে আন্দোলন করেছে। আজ সে নিজেই কলকাতার ছবিতে অভিনয় করে। দেশকে তুচ্ছ জ্ঞান করছে। এখন সে বলছে দেশের পরিচালক ক্যামেরাম্যান কেউই কাজ পারেন না। সব কলকাতার লোকই ভালো কাজ জানেন। এই ধরনের কথায় দেশের ভাবমূর্তিও সে নষ্ট করছে। নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য আন্দোলন থেকে সরে গিয়ে এখন নিজেই তাদের লোক হয়ে গিয়েছে।
সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, বিভিন্ন সময়ে চলচ্চিত্রের একটি খারাপ সময় যায়। বিগত ১০ বছরে তার কোন ছবি হিট হয়নি। সব ব্যর্থ ছবি সে উপহার দিয়েছে। এর মধ্যে দেশে দুটি ছবিই সুপার হিট হয়েছে মনপুরা ও আয়নাবাজি। তাই যদি বলতে হয় চঞ্চল চৌধুরীই সুপারস্টার শাকিব খান নন।
তিনি আরও বলেন, শাকিব খানকে সিনেমায় নেয়া হলে ছবির খরচ বেড়ে যায় কোটি টাকা। সে পাংকু জামাই চলচ্চিত্রর কাজ আটকে রেখে রংবাজ ছবির শুটিং করছে। প্রথমে মিষ্টি কথা বলে ছবির কাজ হাতে নেয়। আর দুদিন শুটিং করেই গড়িমসি শুরু করে দেয়। এখন সে কোন ধরনের চুক্তিতেও সই করে না। সরকারের কর ফাঁকি দেয়। এভাবে পুরাই দুই নাম্বারি কাজ করে সে।কাজের মাঝে চাপ দিয়ে আরো বেশি টাকা আদায় করে। নইলে শিডিউল ঘাপলা করে দেয়। ছবির কাজ ৮০ শতাংশ শেষ কেরে ২০ ভাগ ঝুলিয়ে রাখে।
তিনি বলেন, দেশে বছরে ৭০টি ছবি তৈরি হলে তার মধ্যে ৪/৫টি তে সে থাকে। এই ৪/৫টির পরিচালকই নাস্তানাবুদ হয় তার কারণে। তারমতো এমন শিল্পীর কারণেই বরং আরো সমস্যায় পড়তে হয় পরিচালকদের। সে না থাকলেই ছবি ভালো হয়। তার ছবি এ পর্যন্ত একজন প্রযোজক টাকা লগ্নি করলে সে আর দ্বিতীয় ছবিতে লগ্নি করতে পারে না। কারণ প্রথম ছবিতেই সে ফ্লপ খেয়ে টাকা উঠাতে পারে না। যদি সে সুপারস্টার হয় তাহলে তার ছবি ফ্লপ কেন? কেন চঞ্চল চৌধুরীর ছবিই সুপার হিট হয়?
এফআই মানিক, সোহানুর রহমান সোহানের মতো পরিচালককে সে বাড়ির নিচে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাড় করিয়ে রেখেছে। বাসার উপরে পর্যন্ত ওঠায়নি। এমনভাবে সে অপমান করেছে এই নামীদামী পরিচালকদের।
শাকিবকে নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, তার সঙ্গে আমরা আর কাজ করবো না। একটা কথা বলি। আমি সুপারস্টার এই কথা এতবার এর আগে কেউ কখনো বলেনি। রাজ্জাক সাহেব ফারুক সাহেবও তো সুপারস্টার ছিলেন। কই তারাতো কখনো এরকম করে কিছু বলেননি। নিজের কথা শাকিব নিজে কেন বলবে। তার কারণে লজ্জায় কথা বলতে পারি না। আমাদের চলচ্চিত্রের মানুষ কত অশিক্ষিত। এটা সত্যি অনেক লজ্জাজনক।
২ মে, ২০১৭/এমটিনিউজ২৪ডটকম/এসবি