বৃহস্পতিবার, ১৮ মে, ২০১৭, ০১:৩৫:৪৭

কী হচ্ছে এফডিসিতে?

 কী হচ্ছে এফডিসিতে?

বিনোদন ডেস্ক: চলচ্চিত্রের মানুষদের পুরনো ও ঐতিহ্যবাহী একটি সংগঠন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি। আমার জানা মতে, সংগঠনটির ১৪তম নির্বাচন হয়েছে এবার। আমার শরীর খুব একটা ভালো নেই, অনেক দিন এফডিসিতেও যাই না। এ ছাড়া আমার ছেলের পরিচালনা ও প্রযোজনায় একটি ধারাবাহিকের শুটিং করছি, যে কারণে নির্বাচনের আগে-পরে যত ঘটনা ঘটেছে তার সবই দূর থেকে শুনেছি। নির্বাচন ঘিরে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে বলতে তাই বেশ সতর্ক থাকতে হচ্ছে।

শুনেছি নির্বাচনের দিন এফডিসিতে প্রচুর পুলিশ আনতে হয়েছে, বহিরাগত লোকও এসেছিল অনেক। কবরী সারোয়ারও নাকি তাঁর মোবাইল হারিয়ে ফেলেছিলেন। আমার কথা হচ্ছে, বাইরের এত লোক কিভাবে ঢুকল? পুলিশ ডেকে কী লাভ হলো? একজন শিল্পী যদি ভোট দিতে এসে ফোন হারান, বাইরের লোক ঢুকে শিল্পীদের বিরক্ত করে—বিষয়গুলো হতাশার। অনেক শিল্পীকে নাকি এফডিসিতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল না।

তিনটা প্যানেল নির্বাচন করেছে—মিশা সওদাগর-জায়েদ খান, ওমর সানী-অমিত হাসান ও ড্যানি সিডাক-ইলিয়াস কোবরা। এরা সবাই আমার কাছে সন্তানতুল্য। আমার প্রশ্ন অন্য জায়গায়, নির্বাচনে ভোটার ৬২৪ জন, এর মধ্যে ভোট পড়েছে নাকি ৫৫৮! এত শিল্পী কি আদৌ আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে আছে? এখন কিংবা স্বর্ণযুগ—কোনো যুগেই ছিল না। শুধু শুধু সদস্য বাড়িয়ে লাভ কী? ভোটের পর শুনলাম ওমর সানী নাকি কারচুপির অভিযোগ এনেছেন। এটা কেন হবে? এমন কথাই বা কেন উঠবে? প্রযোজক সমিতির নির্বাচন হয় না প্রায় এক যুগ। প্রশাসক দিয়ে চলছে সমিতি। ফলাফল, ছবি মুক্তি থেকে শুরু করে ইন্ডাস্ট্রির সব কিছুতেই সমস্যা। এটা কেন হয়েছে? নেতাদের একজন আরেকজনকে ঠেকানোর জন্য মামলা ঠুকে দেন, ফলে নির্বাচন হয় না। এখন শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে আইন-আদালত হয়েছে, মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে নির্বাচনী ফলাফলের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা এসেছে। আগে এসব করতেন প্রযোজকরা, এখন করছেন শিল্পীরা। কোথা থেকে কী হচ্ছে আমি কিছুই বুঝছি না। শিল্পীদের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমা ঢুকে যাওয়ার লক্ষণ তো ভালো না।

শাকিব খানের ওপর নাকি নির্বাচনের রাতে হামলা হয়েছে। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না, থাকারও কথা না। যেহেতু এটা পরিচালক সমিতির নির্বাচন নয়, তা ছাড়া আমি শিল্পী সমিতির সদস্যও না। দীর্ঘ পাঁচ দশক ধরে চলচ্চিত্রে আছি। অনেক চড়াই-উতরাই দেখেছি। সেই অভিজ্ঞতা থেকে বলব, ইন্ডাস্ট্রি আগের জায়গায় নেই। থাকলে তো এ ধরনের ঘটনা ঘটত না। আগে রাজ্জাক, ফারুক, সোহেল রানা, শাবানা, কবরীসহ আরো অনেক নামি শিল্পী ছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ছিল, কিন্তু এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি।

এফডিসিতে আমি যাই কালেভদ্রে। গিয়ে কী হবে? কে আছে চলচ্চিত্র নিয়ে কথা বলার মতো? কার এত মাথাব্যথা চলচ্চিত্র গোল্লায় গেলে? যদি আমাদের ডাকত, আমরা যেতাম, কথা বলতাম।

নির্বাচিত শিল্পী নেতাদের অনেকের বক্তব্য পত্রিকায় পড়েছি। তাঁরা বলেছেন, যৌথ প্রযোজনা, ভারতীয় ছবি আমদানি বিষয়ে কাজ করবেন, সুষ্ঠু একটা ব্যবস্থা করবেন। ভালো কথা, ভালো প্রতিশ্রুতি। কতটুকু করতে পারবেন সেটাই দেখার বিষয়। আর আদালতের নিষেধাজ্ঞার মধ্যে শপথগ্রহণের বিষয়ে বলার এখতিয়ার আমার নেই, এটা আদালতের বিষয়।

যাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন তাঁদের উদ্দেশে বলি, তাঁরা যদি এ দেশের চলচ্চিত্রশিল্পীদের স্বার্থে কাজ করেন তাহলে আমার সমর্থন থাকবে, না হলে আমাকে পাশে পাবেন না।
এমটিনিউজ২৪/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে