মঙ্গলবার, ০৪ জুলাই, ২০১৭, ১১:৪৯:৩৪

জিত এবং দেবকে হারিয়ে এবার শীর্ষস্থান দখল করলো শাকিব

জিত এবং দেবকে হারিয়ে এবার শীর্ষস্থান দখল করলো শাকিব

বিনোদন ডেস্ক:  এবার ঈদে বাংলাদেশে মুক্তি পেয়েছে নতুন তিনটি ছবি।  ‘নবাব’, ‘বস-টু’ ও ‘রাজনীতি’।  এর মধ্যে প্রথম দুটিই যৌথ প্রযোজনা।  একই সময়ে কলকাতায়ও মুক্তি পেয়েছে তিনটি ছবি।  ‘বস-টু’, ‘চ্যাম্প’ ও ‘টিউবলাইট’।

 এর মধ্যে বস-টু যৌথ প্রযোজনা আর টিউবলাইট বলিউডের ছবি।  এতগুলো ছবির মধ্যে একমাত্র নবাব ছবিটিই সুপারহিট! রাজনীতি ও টিউবলাইট হিট।  আর ফপের তালিকায় বস-টু ও চ্যাম্প, জিত এবং দেবকে হারিয়ে ‘নবাব’ ছবি দিয়ে এবার শীর্ষস্থান দখল করলো শাকিব । 

এর মানে দাঁড়াচ্ছে সালমান খান (টিউবলাইট), জিত (বস-টু) ও দেবকে (চ্যাম্প) হারিয়ে এবারের ঈদের শীর্ষ নায়ক বাংলাদেশের সুপারস্টার শাকিব খান।  আর এটিই এবারের ঈদের ছবির একমাত্র সত্যি ঘটনা।

সম্প্রতি কলকাতার ছবি নিয়ে কিছু প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেখানকার অনেক গণমাধ্যম।  যার সারমর্ম হচ্ছে, ঈদে মুক্তিপ্রাপ্ত কোনো ছবিই সাড়া ফেলতে পারেনি।  তারা লিখেছেন বছরের অন্যতম বড় উৎসব ঈদে বক্স অফিস খরাতেই কাটল।  সালমান খান, দেব বা জিতের কোনো ম্যাজিকই কাজে এলো না।  অথচ বিষয়ের বিভিন্নতা, মেগাস্টারদের উপস্থিতি, হেভিওয়েট পরিচালকদের আকাশছোঁয়া স্বপ্ন বাকি ছিল না কিছুই।  মজার বিষয় হচ্ছে সালমান, দেব এবং জিৎ তিন তারকাই এই প্রথম স্বনামে এসেছিলেন প্রযোজনায়।

অপরদিকে বাংলাদেশে মুক্তি পাওয়া এক নবাবই কাঁপিয়ে দিয়েছে বক্স অফিস।  অতীতের অনেক রেকর্ড ভেঙে দেশের শীর্ষ আয়ের ছবির তালিকায় ঢুকে গেছে নবাব।  একটি ছবি দেখার জন্য সিনেমা হলের সামনে দীর্ঘ দর্শক লাইন, টিকিট না পেয়ে সিনেমা হল ভাঙচুর, অগ্রিম টিকিট বিক্রি এর সবকিছুই ঘটিয়েছে শাকিব খানের এই ছবি।  আবার মাত্র ৪০টি সিনেমা হলে মুক্তি পেয়েও ছবি হিট করার নজির দেখিয়েছে তারই অন্য ছবি রাজনীতি।

  অথচ যৌথ প্রযোজনার ছবি ঠেকানোর আন্দোলনের ফলে মনে হয়েছিল মুক্তি পাচ্ছে না নবাব।  আর রজনীতি নিয়ে মুক্তির আগে কোনো কথাই বলেননি শাকিব খান।  দুটি ছবি দিয়েই খান সাহেব এখন চলচ্চিত্র অঙ্গনে নবাবের আসনে বসে আছেন।

তিনি বলেন, ‘দর্শকই সব।  তারা আমাকে ভালোবাসেন বলেই ছবি দেখতে হলে যাচ্ছেন। ’ কলকাতায় মুক্তি পাওয়া ছবিগুলো বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়েছে, এদিকে আমাদের দেশে আপনার ছবিগুলো সুপারহিট এর রহস্য কী?

এমন প্রশ্নের জবাবে শাকিব বলেন, ‘আমাদের মতো কলকাতায়ও ঈদে তিনটি ছবি মুক্তি পেয়েছে।  তবে তাদের ছবিগুলো ব্যবসাসফল হয়েছে কিনা সেটা আমি জানি না।  আর তাদের ছবিগুলো মানুষ কেন দেখছেন না সেটাও আমার জানা নেই।  আমার ছবিগুলো মানুষ দেখেছেন, কারণ আমি নিজেকে ভাঙার চেষ্টা করেছি।  নিজের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছি।  এখন থেকে বেছে বেছে কাজ করব।  তবে যেটাই করব তা হবে গুণী এবং গল্প হবে সময়োপযোগী। ’
 
এবার চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক ঈদের ছবিগুলোর দিকে:
 ১. নবাব : ছবিতে কী নেই? অ্যাকশন, রোমান্স, গল্পে নতুন নতুন মোড় সবকিছুই যে ছিল নিখুঁত।  একটি থ্রিলার গল্পে যেসব চমক থাকা প্রয়োজন তার সবই আছে নবাবে।  টানটান উত্তেজনায় ভরপুর এর চিত্রনাট্য।  সংলাপগুলোও মনোমুগ্ধকর।  আর নবাব শাকিবের তো কথাই নেই।  গত বছর ‘শিকারী’ দিয়ে তিনি নিজেকে প্রমাণ করেছিলেন।  আর নবাব তো তাকে নবাবি সম্মান দিচ্ছে। 

তিনি পর্দায় কলকাতার যে কোনো তারকা অভিনেতাকে হারিয়ে দিয়েছেন।  অভিনয়, লুক, কস্টিউম, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ, নাচ শাকিবের সবকিছুই ছাপিয়ে গেছে অতীতকে।  পরিণত এক শাকিব খানের অভিনয় দতায় মন ভরেছে সবার।  নবাব ছবিটি প্রযোজনা করেছে বাংলাদেশের জাজ মাল্টিমিডিয়া ও কলকাতার এসকে মুভিজ।  পরিচালনা করেছেন জয়দীপ মুখার্জি ও আবদুল আজিজ।

২. টিউবলাইট : ছবিতে টিউনিংয়ের অসুবিধাটা বারবার চোখে পড়েছে।  শুধু বিশ্বাসের জোরে পাহাড় সরানোর রূপকথা একবারের জন্যও বিশ্বাসযোগ্য হয়ে ওঠেনি।  সালমান খানের অপরিণত অভিনয় এই ছবির মুখ থুবড়ে পড়ার অন্যতম কারণ। 

পরিচালক কবির খান সব সময়ই চেষ্টা করেন তার ছবিকে একটা রাজনৈতিক প্রেেিত পেশ করার।  কিন্তু প্রেতিটা এতই দূরে থাকে যে, ছবিতে তা অনিবার্য হওয়ার বদলে তার প্রভাব প্রায় থাকেই না।  একরাশ হতাশা নিয়ে ফেরত আসতে হয় দর্শকদের।

৩. রাজনীতি : বুলবুল বিশ্বাস পরিচালিত এই ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে আছেন অপু বিশ্বাস।  তিনিই ঈদের ছবিগুলোর মধ্যে একমাত্র প্রধান বাংলাদেশের নায়িকা।  সিনেমা হল কম না পেলে এই ছবিটি এবার সেরা ছবি হতো এমন ধারণা অনেকের।  তার পরও যে কটি হলে মুক্তি পেয়েছে, সেগুলো দর্শক ভর্তি ছিল।  তারা ছবিটির প্রশংসা করেছেন।

৪. চ্যাম্প : প্রযোজক দেবের আত্মপ্রকাশ চ্যাম্পের সঙ্গে।  ছবির বিষয় নিয়ে আশাবাদী ছিলেন সবাই।  মনে হয়েছিল চ্যাম্পের হাত ধরেই তিন বছর পর ফিরে আসবেন নায়ক দেব।  তার ওপর পরিচালক রাজ চক্রবর্তী, হিট মেশিন।  কিন্তু প্রথাগত এই ধারণা চললই না।  চ্যাম্পের গল্প দর্শকের কথা ভেবে তৈরি হলেও ছবির চিত্রনাট্যটি অত্যন্ত দুর্বল।  একটি সাধারণ ছেলের বক্সার হয়ে ওঠার রাস্তাটা এত মসৃণ ও এত তাড়াতাড়ি যে ছবিটি দেখতে দেখতে তা খানিকটা অবাস্তব বলে মনে হয়।

৫. বস-টু : নিজের নামে এই প্রথম প্রযোজনা করলেও জিতের প্রযোজনার অভিজ্ঞতা আছে আগেও।  তার ওপর আবার এই ছবি দুই বাংলায় মুক্তি পেয়েছে।  অথচ বাবা যাদবের ছবিটি দাগ কাটল না বক্স অফিসে।  নতুন গল্প, ঝকঝকে শুটিং, জিৎ-শুভশ্রীর কেমিস্ট্রি, নুসরাত ফারিয়া বিতর্ক কোনোটারই প্রভাব পড়ল না।
এমটিনিউজ২৪/এম.জে

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে