বিনোদন ডেস্ক : দুযুগ পেরিয়ে গেলেও এখনো সমধান হয়নি ঢাকাই চলচ্চিত্রের অমর জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহের মৃত্যুরহস্য। এই রহস্য ঘোলাটে করে গত ৬ আগস্ট সোশ্যাল নেটওয়ার্কে দেয়া এক ভিডিওতে সালমান হত্যা মামলার আসামি রুবি জানিয়েছেন ‘সালমান শাহ আত্মহত্যা করেননি, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে’। এই হত্যার সঙ্গে জড়িতদের নাম হিসেবে নিজ স্বামী, নিজ ভাই ও সামিরা (সালমানে স্ত্রী) এর নামও উল্লেখ্য করেন তিনি। যদিও এরপর দুদিন পর মন্তব্য উল্টে দেন রুবি। এবার অন্য সুরে সুর তোলেন তিনি।
সালমান আত্মহত্যা করেনি, সামিরার পরিবারই তাকে খুন করেছে। এমনকি অভিযোগের প্রধান আসামি হিসেবে সামিরা ও তার বর্তমান স্বামীকে ইঙ্গিত করা হচ্ছে। সালমানের পরিবারের পক্ষ থেকেও সামিরাকেই দোষী বলে মামলা করা হয়েছিলো। যার তদন্ত বেশ দিন গড়ায়নি। সামিরার চরিত্র নিয়ে মিডিয়া পাড়ায় চলচহে বেশ কানাঘুষা এর আগেও অনেক পুরুষের সাথে সামিরার নামও জুড়েছিল। তবে সম্প্রতি ‘অপরাধ চক্র’ ম্যাগাজিনের অনেক বছর আগের একটি ছবি ও প্রতিবেদন ফের সামনে এসে নতুন ইস্যুর জন্ম দিয়েছে। ছবিটি সামিরা আর ডনের অন্তরঙ্গ দৃশ্যের ছবি। যা দেখেই অবাক অনেকেই অনেক রকম মন্তব্য করছেন।
সামিরার সম্পর্কে যেসব গুঞ্জন উঠেছিল তার মাঝে নাম ছিল- ডন, আজিজ ভাই, সামিরার প্রাক্তন প্রেমিকসহ অনেকেই। অপরদিকে সেই ম্যাগাজিনটি তাদের প্রতিবেদনে প্রকাশ হয়েছিলো যে, ‘ঢাকার কজন ধনকুবের ছিল। এছাড়াও সালমান শাহ’র বন্ধু ডন এসে মাঝে মধ্যে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটাত সামিরার সাথে। মদ বিয়ারে আসক্ত ছিল সামিরা। আজিজ মোহাম্মদ ভাই সহ অসংখ্য বেড পার্টনার ছিল তার। সামিরা দিনের পর দিন বিকৃত যৌনতা চালিয়ে যৌন সুখ লাভ করত। চট্টগ্রাম থেকে তার কলেজ জীবনের প্রেমিক রনিকে ডেকে আনত মাঝে মধ্যে। রনি ঢাকায় এসে তার আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে রাত্রি যাপন করলেও দিনের বেশিরভাগ সময় সালমান শাহ’র ফ্ল্যাটে সামিরাকে নিয়ে মত্ত থাকত। রনি ছিল সামিরার একান্ত গোপন পুরুষ। এই গোপন পুরুষের সাথে নিজের ফ্ল্যাটে গোপন অভিসার চালাবার ঘটনাটি প্রকাশ হতেই রনি চট্টগ্রাম চলে যায়।’
এমন প্রতিবেদন এক ফের আলোচনায় এসেছে সম্প্রতি রুবির ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি নিয়ে। তবে এসব নিয়ে কেমন যাচ্ছে সামিরার নতুন সংসার? তার স্বামী কিভাবে বিষয়গুলি দেখছেন? তার মতামত কি?
যদিও অনেকে বলেছে সামিরা ও তার স্বামী থাইল্যাণ্ডে বসবাস করেন তবে এটি সত্য নয়। সামিরা ও তার স্বামী বর্তমানে বাংলাদেশেই বাস করছেন। দেশের প্রথম সারির একটি অনলাইন গণমাধ্যমের সঙ্গে তার সরাসরি কথোপকথন হয় সামিরার স্বামী মোস্তাক ওয়াইজের।
সালমানের বাল্যবন্ধু মোস্তাক ওয়াইজ। তিনি সালমানের মৃত্যুর পর সামিরাকে বিয়ে করেন বন্ধুত্ব ও দায়িত্ববোধ থেকে। যদিও মৃত্যুর আগে থেকেই গুঞ্জন উঠেছিল সামিরা ও মোস্তাকের মাঝে পরকীয়ার। এমনকি অনেকেই জানেন এই পরকীয়া প্রেমের কারণে সালমানে সঙ্গে সমস্যা হয় সামিরার এবং তার কারণেই সালমানকে হত্যা করেন সামিরা।
মোস্তাক ওয়াইজ বলেন, ‘আমি সালমানের বাল্যবন্ধু। আসলে আমি আমার বন্ধুর প্রতি ভালোবাসা থেকেই সামিরাকে পরে বিয়ে করেছি। ইমনের (সালমান শাহ) মৃত্যুর পর সামিরার জীবনটা অনেকে বিষিয়ে তুলেছিল। সেই পরিস্থিতি থেকে তাকে বাঁচাতে দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই ওকে বিয়ে করেছি।’
তাদের মাঝে পরকীয়া ছিল কিনা সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সামিরার সঙ্গে আমার পরকীয়ার প্রশ্নই আসে না। কারণ সামিরা আমার বন্ধু সালমান শাহর স্ত্রী। তাদের লাভ ম্যারেজ ছিলো। সেখানে আমার সঙ্গে কেন পরকীয়া হবে? তাছাড়া সামিরা আমাকে বিয়ে করতে চায়নি। আমাদের দুই পরিবারের সম্মতিতেই বিয়ে হয়েছে।’
বিয়ে নিয়ে মোস্তাক জানান, ‘পারিবারিকভাবে প্রস্তাবের মাধ্যমে আমাদের বিয়ে হয়। ১৯৯৯ সালে আমার বাবা এবং ২০১০ সালে আমার মা ইন্তেকাল করেন। ১৯৯৮ সালে আমার পরিবার বিয়ের প্রস্তাব দেয় এবং ১৯৯৯ সালে আমাদের বিয়ে হয়। আমার পরিবার সম্মানের সঙ্গে আদর করে সামিরাকে বউ করে নিয়ে আসেন। এখন যারা আমার পরিবারে আছেন সবাই সামিরাকে যথাযোগ্য মর্যাদায় মাথায় তুলে রাখেন। সামিরা সেই ধরনেরই বউ, সেই ধরনেরই মেয়ে। তার মধ্যে যদি কোনো ধরনের গলদ থাকত তা হলে আমার পরিবার তাকে মেনে নিত না। আমরা ১৮ বছর ধরে সংসার করছি।’
সম্প্রতি সালমান হত্যা নিয়ে কিছু বলেননি তিনি তবে সামিরার সম্পর্কে বলেন, ‘আমার জানা মতে সামিরার আচরণ বা চরিত্রগত কোনোরকম সমস্যা ছিল না। কেউ যদি বলতে পারে সামিরার চরিত্র খারাপ আমি মাথা পেতে নেব।’
বর্তমানে এই দম্পতির ঘরে এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। জানা যায়, থাইল্যান্ড নয়, বাংলাদেশেই বসবাস করছেন তারা। সালমান শাহের পরিবারের সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন সালমান শাহের স্ত্রী সামিরা ও সামিরার বর্তমান স্বামী মোস্তাক ওয়াইজ।
এমটিনিউজ২৪ডটকম/টিটি/পিএস