মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০১৭, ১০:৪৫:৪৩

বিদেশি গণমাধ্যম হাফিংটন পোস্টে সালমান শাহ্‌ হত্যার বিচার দাবি

বিদেশি গণমাধ্যম হাফিংটন পোস্টে সালমান শাহ্‌ হত্যার বিচার দাবি

বিনোদন ডেস্ক : ২১ বছর আগে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় বাংলা সিনেমার নক্ষত্র সালমান শাহ্‌। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মাত্র ২৫ বছর বয়সের সালমান শাহ্‌কে পাওয়া যায় তার ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায়।

সালমান শাহ্’র চার বছরের ক্যারিয়ার নিয়ে বিদেশি গণমাধ্যম হাফিংটন পোস্টে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যা লিখেছেন কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটির গণিতের শিক্ষক রাশিদুল বারি।

হাফিংটন পোস্টের সংবাদে বলা হয়, ‘যদি সালমান শাহ্‌য়ের সিনেমা দেখেন, তাকে শাহরুখ, আমির কিংবা সালমান খানের সঙ্গে তুলনা করতে পারবেন না। বলতে হবে আপনারা দেখেছেন হলিউডের লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিওকে। নাহ, তাও যথার্থ নয়। তিনি ডিক্যাপ্রিও নন, তার চাইতেও বড় মাপের অভিনেতা সালমান শাহ্‌। আমাদের দৃষ্টিতে সালমান শাহ্‌ একজন মেগাস্টার।’

সালমান শাহ্‌ অভিনীত প্রথম ছবিটি বাংলাদেশে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করে, যা এর আগে আর কেউ করতে পারেননি। তার প্রথম ছবি ১৯৯৩ সালের ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’, যা বলিউড সিনেমা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে বাংলায় নির্মাণ করা হয়। লাখো তরুণ ভক্ত তৈরি করতে এই একটি ছবিই যথেষ্ট ছিলো সালমান শাহ্‌য়ের জন্য।

মাত্র চার বছরের ক্যারিয়ারে তিনি অভিনয় করেন ২৭টি সিনেমায়। এবং প্রতিটি সিনেমা সফল। এই নায়ক নিজের আলাদা একটি স্টাইল নিয়ে পর্দায় এসেছিলেন, যা বাংলা সিনেমার ইতিহাসে এখনও বিরল।

তার একার এই চার বছরের সাফল্য তাকে হলিউডের ডিক্যাপ্রিওর পরের স্থানে বসানোর জন্য যথেষ্ট। সালমান শাহ্‌য়ের এই ছোট্ট ক্যারিয়ার তাকে এই সম্মান এনে দিয়েছে।

তার অভিনয় এতই প্রাণবন্ত ছিল যে কারণে তাকে গ্রহণ করতে দর্শকদের সময় ব্যয় করতে হয়নি। শেক্সপিয়রের রোমিও চরিত্রের মতো তাকে রাজ চরিত্রে অভিনয় করতে দেখেছি আমরা। যে কিনা তার প্রেমিকা রেশমির মৃত্যুর পর নিজেকে ছুরির আঘাতে হত্যা করে। ঠিক যেন জুলিয়েটের মৃত্যুর পর রোমিও করেছিল। কিন্তু কেউ ভাবেনি তার জীবনের পরিণতিও ঠিক এমন হবে।

‘এই ঘটনার পর ২০ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু সালমানের হত্যাকারীরা আজও মুক্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে। কারণ তাদের সেই শক্তিটুকু আছে। কিন্তু আমি কোন না কোনভাবে জানতাম, একদিন সত্য প্রকাশ পাবে। সেদিন ৯ আগস্ট আমি আমার ইউনিভার্সিটিতে ক্লাস নিচ্ছিলাম। ক্লাসের মাঝখানে আমি আমার স্ত্রীর মেসেজ পাই। ‘সালমান যা কিছু তার সিনেমায় দেখিয়েছেন, তা নিয়ে তোমার কিছু লেখা উচিত।’ এরপর আমি ক্লাস শেষে আরেকটি মেসেজ পাই। তাতে লেখা, ‘সালমান আত্মহত্যা করে নি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। এবং রুবি সেটি একটি ভিডিও বার্তায় স্বীকার করেছে।’ আমি ভিডিওটি দেখলাম। সঙ্গে সঙ্গে কলম ধরার সিদ্ধান্ত নিলাম। কারণ সেখানে রুবি বলেছিল, এতে তার নিজের ভাই জড়িত ছিল এবং তাকেও হত্যা করা হয়েছে।

‘আমি সবসময় জানতাম, সালমান শাহ্‌ আত্মহত্যা করেননি। দড়িটা নিজে পরেছেন নাকি তাকে কেউ পরিয়ে দিয়েছে, সেই বিতর্ক আদালতপাড়া পর্যন্ত গড়িয়েছে। দীর্ঘ ২১ বছর ধরে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী নিজের সন্তানের ‘হত্যা মামলা’ চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি মনে করেন তার ছেলেকে হত্যা করে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছে। শুধু ফাঁসির দড়ির ছবি নয়, মৃত্যুর পর দিন সালমান শাহর বাসা থেকে আরো যেসব আলামতের ছবি তোলা হয়েছিল সেসব ছবিও ভাইরাল হয়। আমি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানাই, সালমান শাহ্‌য়ের মৃত্যু রহস্য অচিরেই সমাধান করা হোক। সত্য সামনে আসুক, এবং সালমান শাহ্‌ যেন ন্যায় বিচার পান।’
এমটিনিউজ২৪ডটকম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে