সোমবার, ২৮ আগস্ট, ২০১৭, ১১:০০:০৯

নিজেরা বিচারক হলে রাম রহিমকে যে সাজা দিতেন নায়িকারা!

নিজেরা বিচারক হলে রাম রহিমকে যে সাজা দিতেন নায়িকারা!

বিনোদন ডেস্ক : পাঁচ কোটি ভক্তের গুরু, গুরমিত রাম রহিম সিংহকে দশ-দশ বছরের কারাদণ্ড দিল সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। তার সংগঠন, 'ডেরা সচ্চা সওদা'-র মহিলা আবাসিক ও সংগঠন কর্মী দুই মহিলাকে সম্ভ্রমহানীর অভিযোগ ওঠে তার উপর। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তার আজ সাজা ঘোষণা করা হয়েছে।

নিজেকে 'মেসেঞ্জার অফ গড' বলে দাবি করতেন এই রাম রহিম, অথচ তদন্তে ধরা পড়ে যে দিনের পর দিন তাঁর গোপন ডেরায় চলত ব্যভিচার। রাম-রহিমের এই কাজ-কারবার নিয়ে সারা ভারত জুড়েই জমা হয়েছে অসন্তোষ। তাই এই রায় ঘোষণার পরে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি বহু মানুষ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই রায়ের পক্ষে বহু পোস্ট করছেন তাঁরা। কিন্তু প্রশ্ন ছিল পশ্চিমবঙ্গের নায়িকাদের কাছে, তারা যদি থাকতেন বিচারকের আসনে, তবে তাঁরা কী সাজা শোনাতেন?

'ভজগোবিন্দ'-নায়িকা স্বস্তিকা দত্তকে এই প্রশ্ন করতেই তিনি জানালেন, ''আমি যদি বিচারক হতাম তবে অবশ্যই লাইফ সেনটেন্স দিতাম। আমাদের তো একটি সামাজিক কাঠামোর মধ্যে থাকতে হয়, যেখানে আইন রয়েছে, বিচারব্যবস্থা রয়েছে। তাই এই ধরনের মানুষের বিচার হয়। যদি সে সব না থাকত, এত রকম নিয়ম না থাকত, তাহলে তো এই ধরনের মানুষদের পুড়িয়ে মারাই উচিত বলে আমার মনে হয়। তাই আমার মতে, যদি নিয়মকানুন মেনে বিচার করতেই হয়, তবে যাবজ্জীবনের সাজাই দেওয়া উচিত।

একই মতামত পোষণ করেন 'শ্রীকৃষ্ণ' ধারাবাহিকের সত্যভামা অর্থাত্‍ নায়িকা রূপসা মুখোপাধ্যায়। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, তখনও তিনি সাজার খবরটি জানতেন না। খবর পেয়ে তার প্রথম বক্তব্য ছিল, ''দশ বছরের জেল কেন, ফাঁসি কেন হল না?''

এর পরের প্রশ্ন ছিল তিনি বিচারক হলে কী করতেন? রূপসা জানালেন, ''এই ধরনের মানুষদের কোনও ভাবেই ছাড় দেওয়া উচিত নয়। আমি যদি বিচারক হতাম, তাহলে হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নয়তো ফাঁসির আদেশ দিতাম।''

টলিউড-নায়িকা পায়েল সরকার এই প্রসঙ্গে জানালেন, ''আমার তো শুনেই মনে হল, যথেষ্ট কমই সাজা হল রামরহিম বাবার! এই ধরণের দুর্বৃত্তদের সাজাপ্রাপ্তির খবর আমাদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দেয়। অন্তত এই দুর্বৃত্তদের শাস্তি তো হল! সে শাস্তির দিন নির্ধারণ করতে করতে কেটে যায় একটা লাইফটাইম। কোনও শাস্তিই যোগ্য শাস্তি নয় কারণ নির্যাতিতা যে মানসিক, শারীরিক ও সামাজিক যন্ত্রণা সহ্য করে, তার কোনও তুলনাই হয় না।

তিনি বলেন, মৃত্যুদণ্ড দিলেও বোধহয় সেটা নির্যাতিতার প্রতি সঠিক বিচার নয়। রামরহিমের যা যা কীর্তিকলাপ শুনছি, তাতে এটাই মনে হচ্ছে, এর সবচেয়ে কড়া শাস্তি হোক। এদের কোনও সামাজিক পরিচয় থাকতে পারে না। যদিও সমাজের যে-কোনও স্তরের মানুষেরই বিকৃতি থাকতে পারে, সেজন্য প্রভাবশালী হওয়ার দরকারও পড়ে না। কিন্তু আমি জোর গলায় বলব যে, ক্ষমতার অহঙ্কারে 'পাওয়ার ট্রিপ' হিসেবে ব্যবহার করেছেন রামরহিম। জঘন্যতম বললেও কম বলা হয়!''

কড়া শাস্তি দেওয়ার কথা শোনা গেল ছোট ও বড়পর্দার অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের বক্তব্যেও। এই ধরনের অপরাধীদের আরও কড়া শাস্তি দেওয়ার পক্ষপাতী তিনি। সায়নী জানালেন, ''এদের যাবজ্জীবন বা অনুরূপ কড়া শাস্তি দিচ্ছে, এটা সারা দেশের জন্য সুসংবাদ। আমাদের সমাজ স্বাধীনতার ৭০ বছরেও স্বাধীন হতে পারেনি। নানা ধরনের পরাধীনতা নিয়ে আজও নারীদের বেঁচে থাকতে হয়। রামরহিমের সঙ্গে বাবা শব্দটা যোগ করতে ঘৃণা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘এরকম আরও কত যে বাবা নিজেদের কমার্শিয়ালাইজ করে উত্তুঙ্গ ভোগসুখের জীবন কাটাচ্ছেন, ভাবলে শিউরে উঠি। এর পর যদি সবকটাকে ধরে এমনই কড়া শাস্তি দেওয়া যায় তবেই হয়তো নারীরা অনেকটাই নিরাপদ বোধ করবেন। আসলে আমিও মনে করি, দশ বছরটা যথেষ্ট সাজা নয়।’

নায়িকা বলেন, ‘আমি যদি জজ হতাম, এই লোকটার লিঙ্গচ্ছেদনের রায় দিতাম। দুর্ভাগ্যবশত, এ দেশে এখনও এই শাস্তিপ্রক্রিয়া কার্যকর হয়নি। লজ্জার কথা, রামরহিম নিজে তার শিষ্যদের লিঙ্গচ্ছেদন করিয়েছেন, কিন্তু নিজে ২০০ জন সুন্দরী মহিলার সঙ্গ উপভোগ করছেন! এমন মানুষের তো বেঁচে থাকার অধিকারই নেই। গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা উচিত!''

এমটিনিউজ/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে