বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০১৭, ১১:১১:৪০

নারী লোভী ‘ভণ্ডগুরু’ রাম রহিম সম্পর্ক যা বললেন বাংলার নায়িকারা

নারী লোভী ‘ভণ্ডগুরু’ রাম রহিম সম্পর্ক যা বললেন বাংলার নায়িকারা

বিনোদন ডেস্ক: পাঁচ কোটি ভক্তের গুরু, গুরমিত রাম রহিম সিংহকে নারীদের শারীরিক নির্যাতনের কারণে দশ-দশ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ভারতের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। তাঁর সংগঠন, ‘ডেরা সচ্চা সওদা’-র মহিলা আবাসিক ও সংগঠন কর্মী দুই মহিলাকে শারীরকি নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে তার উপর। তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে তাঁর সাজা ঘোষণা করা হয়েছে। নিজেকে ‘মেসেঞ্জার অফ গড’ বলে দাবি করতেন এই রাম রহিম, অথচ তদন্তে ধরা পড়ে যে দিনের পর দিন তাঁর গোপন ডেরায় চলত ব্যভিচার।

ভন্ডগুরু রাম-রহিমের এই কাজ-কারবার নিয়ে সারা ভারত জুড়েই জমা হয়েছে অসন্তোষ। তাই এই রায় ঘোষণার পরে স্বাভাবিক ভাবেই খুশি বহু মানুষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই রায়ের পক্ষে বহু পোস্ট করছেন তাঁরা। প্রশ্ন ছিল বাংলার নায়িকাদের কাছে, তাঁরা যদি থাকতেন বিচারকের আসনে, তবে তাঁরা কী সাজা শোনাতেন? নিচে পড়ুন কারাদণ্ড জারির পর নারী লোভী ‘ভণ্ডগুরু’ রাম রহিম, সম্পর্ক যা বললেন বাংলার নায়িকারা।

‘ভজগোবিন্দ’-নায়িকা স্বস্তিকা দত্তকে এই প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন,‘আমি যদি বিচারক হতাম তবে অবশ্যই লাইফ সেনটেন্স দিতাম। আমাদের তো একটি সামাজিক কাঠামোর মধ্যে থাকতে হয়, যেখানে আইন রয়েছে, বিচারব্যবস্থা রয়েছে। তাই এই ধরনের মানুষের বিচার হয়। যদি সে সব না থাকত, এত রকম নিয়ম না থাকত, তাহলে তো এই ধরনের মানুষদের পুড়িয়ে মারাই উচিত বলে আমার মনে হয়। তাই আমার মতে, যদি নিয়মকানুন মেনে বিচার করতেই হয়, তবে যাবজ্জীবনের সাজাই দেওয়া উচিত।

একই মতামত পোষণ করেন ‘শ্রীকৃষ্ণ’ ধারাবাহিকের সত্যভামা অর্থাৎ নায়িকা রূপসা মুখোপাধ্যায়। ‘‘দশ বছরের জেল কেন, ফাঁসি কেন হল না?’’ এর পরের প্রশ্ন ছিল তিনি বিচারক হলে কী করতেন? রূপসা জানালেন, ‘‘এই ধরনের মানুষদের কোনও ভাবেই ছাড় দেওয়া উচিত নয়। আমি যদি বিচারক হতাম, তাহলে হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নয়তো ফাঁসির আদেশ দিতাম।’’

টলিউড-নায়িকা পায়েল সরকার এই প্রসঙ্গে জানালেন, ‘‘আমার তো শুনেই মনে হল, যথেষ্ট কমই সাজা হল রামরহিম বাবার! যে-কোনও নির্যাতনের সাজাপ্রাপ্তির খবর আমাদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দেয়। অন্তত এই দুর্বৃত্তদের শাস্তি তো হল! সে শাস্তির দিন নির্ধারণ করতে করতে কেটে যায় একটা লাইফটাইম। কোনও শাস্তিই যোগ্য শাস্তি নয় কারণ নারী নির্যাতিত যে মানসিক, শারীরিক ও সামাজিক যন্ত্রণা সহ্য করে, তার কোনও তুলনাই হয় না। মৃত্যুদণ্ড দিলেও বোধহয় সেটা ধর্ষিতার প্রতি সঠিক বিচার নয়। রামরহিমের যা যা কীর্তিকলাপ শুনছি, তাতে এটাই মনে হচ্ছে, এঁর সবচেয়ে কড়া শাস্তি হোক। ধর্ষকের কোনও সামাজিক পরিচয় থাকতে পারে না। যদিও সমাজের যে-কোনও স্তরের মানুষেরই ধর্ষণের বিকৃতি থাকতে পারে, সেজন্য প্রভাবশালী হওয়ার দরকারও পড়ে না। কিন্তু আমি জোর গলায় বলব যে, ক্ষমতার অহঙ্কারে নির্যাতনকে ‘পাওয়ার ট্রিপ’ হিসেবে ব্যবহার করেছেন রামরহিম। জঘন্যতম বললেও কম বলা হয়!’’

নারী শারীরিক নির্যাতনকে কড়া শাস্তি দেওয়ার কথা শোনা গেল ছোট ও বড়পর্দার অভিনেত্রী সায়নী ঘোষের বক্তব্যেও। যে কোনও নির্যাতনের আরও কড়া শাস্তি দেওয়ার পক্ষপাতী তিনি। সায়নী জানালেন, ‘‘ নারী নির্যাতনকারীদের যাবজ্জীবন বা অনুরূপ কড়া শাস্তি দিচ্ছে, এটা সারা দেশের জন্য সুসংবাদ। আমাদের সমাজ স্বাধীনতার ৭০ বছরেও স্বাধীন হতে পারেনি। নানা ধরনের পরাধীনতা নিয়ে আজও নারীদের বেঁচে থাকতে হয়। রামরহিমের সঙ্গে বাবা শব্দটা যোগ করতে ঘৃণা হচ্ছে। এরকম আরও কত যে বাবা নিজেদের কমার্শিয়ালাইজ করে উত্তুঙ্গ ভোগসুখের জীবন কাটাচ্ছেন, ভাবলে শিউরে উঠি। এর পর যদি সবকটাকে ধরে এমনই কড়া শাস্তি দেওয়া যায় তবেই হয়তো নারীরা অনেকটাই নিরাপদ বোধ করবেন। আসলে আমিও মনে করি, দশ বছরটা যথেষ্ট সাজা নয়। আমি যদি জজ হতাম, এই লোকটার লিঙ্গচ্ছেদনের রায় দিতাম। দুর্ভাগ্যবশত, এ দেশে এখনও এই শাস্তিপ্রক্রিয়া কার্যকর হয়নি। লজ্জার কথা, রামরহিম নিজে তাঁর শিষ্যদের লিঙ্গচ্ছেদন করিয়েছেন, কিন্তু নিজে ২০০ জন সুন্দরী মহিলার সঙ্গ উপভোগ করছেন! এমন মানুষের তো বেঁচে থাকার অধিকারই নেই। গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলা উচিত!’’
এমটিনিউজহ২৪ডটকম/আ শি/এএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে