রবিবার, ১০ ডিসেম্বর, ২০১৭, ০৯:১৭:২২

আমাকে বেয়াদব বললে বলুন তাতে আপত্তি নেই: কন্ঠ শিল্পী আসিফ

আমাকে বেয়াদব বললে বলুন তাতে আপত্তি নেই: কন্ঠ শিল্পী আসিফ

বিনোদন ডেস্ক: সংগীতাঙ্গনের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র হলেন জনপ্রিয় কন্ঠ শিল্পী আসিফ আকবর। একসময়ে জাদুকরি সুরের মূর্ছনায় তরুণ প্রজন্মের হৃদয়ে ঝড় তুলেছিল এই সংগীত শিল্পী। তবে বর্তমানেও তিনি কম জনপ্রিয় নয়। সম্প্রতি তাঁর একটি গান ইউটুবে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। বলতে বলতে আজ ক্যারিয়ার জীবনে ২০ টি বসন্ত পার করে দিয়েছেন আসিফ।

এদিকে একটু আগে ক্যারিয়ার জীবনের ২০ তম জন্মদিনে তাঁর ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে পোস্ট দিতে গিয়ে লিখেছেন, ‘‘হতে চেয়েছিলাম ক্রিকেটার, হয়ে গেলাম গায়ক, দেখতে দেখতে ক্যারিয়ারের বিশটা বছর পার করে দিলাম। এই বিশ বছরে দেখেছি কিভাবে মাউন্ট এভারেষ্ট লালমাই পাহাড় হয়ে যায় আবার লালমাই পাহাড় কিভাবে মাউন্ট এভারেষ্ট হয়ে যায়।

এটাই সময়ের খেলা- কার পজিশন কখন কোথায় কিভাবে থাকবে সেটা যেমন আল্লাহ নির্ধারন করে দেন, তেমনি নিজের বিচার বিশ্লেষনও বিশেষ ভূমিকা রাখে। নানা কারনে প্রায় আট বছর সঙ্গীতের বাইরে ছিলাম, নিজের অধিকার নিয়ে আবার ফিরেছি। বাংলাদেশের কিছু সৌভাগ্যবান শিল্পীদের মধ্যে আমিও একজন, এখনো প্রতাপ নিয়ে মঞ্চ প্লে-ব্যাক অডিও এবং ওভারসীস ট্যুরে মান- সম্মান বজায় রেখে চলতে পারছি ।

আজকাল পত্রিকা টিভিতে সিনিয়র শিল্পীদের আক্ষেপ শুনে একটু অবাক হই। নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা গান বাজনা করছে , অস্বীকার করবোনা তাদের দুর্বলতা, ধরেই নিলাম তারা খুব খারাপ করছে। একবার ভাবুন- বর্তমানে আপনারা বাংলা গানের শ্রোতাদের কতোটুকু ধরে রাখতে পারছেন। সমালোচনা আর আক্ষেপ ছাড়া আপনাদের ঝুলিতে আছে শুধু অতীত বন্দনা ।

তিন প্রজন্মের বলয়ে আমি ইন্ডাষ্ট্রী দেখেছি। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ সামনে জেনেও বাচ্চারা এখনো কাজ করে ইন্ডাষ্ট্রী ধরে রেখেছে, মান যাই হোক, গানে তাদের নিয়মিত অংশগ্রহণেই ইন্ডাস্ট্রিতে মানি ফ্লো আছে এখনো, এজন্যই আপনাদের কেউ কেউ কথা বলার সূযোগ পাচ্ছেন এবং ফাঁকে ফাঁকে গাইছেন। তাদের গান না শুনেই সস্তা কথা ,সস্তা সুর আর অটো টিউনের গড় পড়তা উদাহরন দিয়ে ভাঙ্গা রেকর্ড বাজিয়েই চলছেন।

জুনিয়রদের আপনারা কতটুকু সহযোগিতা করেছেন একবার ভাবুন, আমিও কিছু সিনিয়রের গুটিবাজী খতম করে এতোদূর এসেছি। পরিস্থিতি সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল আছি, আমি জানি তারা কতোটা প্রতিকুলতার মধ্যে কাজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সাহসের সাথে। আগের দিন নাই – সেই বাস্তবতা মানুন। ব্যাগ ভর্তি টাকা নিয়ে প্রডিউসার আসবে- সেদিন রাজহাঁসে খেয়েছে। সেই রাজহাঁস জন্ম দিয়েছে কারা?

অনিয়মের সাথে আপোষ করে সুবিধা ভোগ করেছেন কারা ? দূঃখজনক হলেও সত্যি- অনিয়ম শেষ পর্যন্ত অনিয়মই। প্রডিউসার টাকশাল নিয়ে বসে নেই, তাদেরও খেয়ে পড়ে চলতে হয়। পত্রিকায় দেয়া বক্তব্যের সাথে আপনাদের বাস্তব চলার পথে মিল নেই, গোপনে যোগাযোগ রাখছেন জানি, কর্পোরেট সুবিধা আপনাদেরই দখলে। মানহীন গান আপনারাও করছেন, টাকাও নিচ্ছেন প্রমান আছে।

আপনারা অনেক সম্মানিত তরুণদের কাছে, অনুগ্রহ করে অহেতুক নতুন জেনারেশনের মুখোমুখি হয়ে তাদের বিব্রতকর অবস্থায় ফেলবেন না। পরিবর্তন এমন একটা বাস্তবতা যেটার ফলাফল খারাপও হতে পারে, ভালোও হতে পারে । মন থেকে ইন্ডাষ্ট্রীকে ভাল রাখুন, ছোটদের সহযোগীতা করুন,তাদের অস্বস্তি দূর করুন। আমার বিবেচনায় যেটা সঠিক কথা, সেটা বলেই যাবো। আমাকে বেয়াদব মনে করলে করুন আপত্তি নেই, এটা নতুন কিছু নয়, অনুগ্রহ করে ডাবল এ্যাকটিং বন্ধ করুন, এতে সম্মানিত হবেন আপনিই । ভালবাসা অবিরা ’’।
এমটিনিউজ২৪.কম/এইচএস/কেএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে