রবিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৭, ১২:৩৭:৫৫

‘ইত্যাদি’ এমন করেই শেখায়

‘ইত্যাদি’ এমন করেই শেখায়

বিনোদন ডেস্ক: ‘ইত্যাদি’ সব সময় এমন করেই শেখায়। যে শেখানোতে ছেলে-বুড়ো, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-গরিব সব শ্রেণির দর্শকই খুব সহজে আত্মস্থ করতে পারে দেশপ্রেম, মানবিকতা আর দেশ মাতৃকাকে বিশ্বের বুকে উঁচু স্থানে ধরে রাখার নানান বিষয়। যেমনটা মিললো গেল শুক্রবার রাতে প্রচার হওয়া এবারের পর্বেও। দেশীয় টিভি অনুষ্ঠানের মধ্যে সর্বাধিক জনপ্রিয় নাম ‘ইত্যাদি’। অনেকদিন ধরেই এমন সুখ্যাতি আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে অনুষ্ঠানটির সঙ্গে। এর কারণ বৈচিত্র্যপূর্ণ, ব্যতিক্রমী এবং শিক্ষণীয় নানা বিষয়ের সঙ্গে বিনোদনের মিশেল।

আর সেইসঙ্গে নান্দনিক নির্মাণশৈলী। এবারও ঘটেনি তার ব্যত্যয়। সুজলা, সুফলা, শস্য, শ্যামলা আমাদের এই মাতৃভূমির রয়েছে অপরূপ নানা সৌন্দর্য। যা ছড়িয়ে আছে দেশের নানা প্রান্তে। আর এসব সৌন্দর্য চমৎকারভাবে প্রতি তিনমাস অন্তর তুলে ধরা হয় ‘ইত্যাদি’র এক একটি পর্বে। সে ধারাবাহিকতায় এবারের পর্ব ধারণ করা হয়েছে প্রকৃতির অনন্য সৃষ্টি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে। ঐতিহ্য, সম্পদ এবং সৌন্দর্যের বিপুল আধার পর্যটন জেলা কক্সবাজার কেবল বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের বুকেও এক অসামান্য স্থান দখল করে আছে। বাংলাদেশের যখন যে স্থানে ‘ইত্যাদি’ ধারণ করা হয় সেই স্থানটির বৈশিষ্ট্যকে কেন্দ্র করেই সেটি নির্মাণ করা হয়।

ফলে দর্শকরা যেমন ঐ স্থানটি সম্পর্কে জানতে পারেন, তেমনি নিত্য-নতুন লোকেশনের কারণে প্রতিবারই সেট নির্মাণেও আসে বৈচিত্র্য। এবারের ‘ইত্যাদি’র র্বিভিন্ন পর্ব করা হয়েছে সাগরকে ঘিরে। যেসবের প্রতিটিই ছিল দারুণ উপভোগ্য। ‘যথাযথভাবে সাধনা করলে তার উপযুক্ত সাফল্য মিলবেই’-এ সত্যটি উচ্চারিত হলো এবারের ‘ইত্যাদি’র মঞ্চে উপস্থিত হওয়া মাগুরার আবদুল হালিমের কণ্ঠে। মাথায় বল রেখে ঘণ্টার ঘণ্টা নানা খেলা দেখিয়ে তিনবার গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস্‌ অর্জন করেছেন এ তরুণ। তার মুখে সাফল্যবিষয়ক সত্য উচ্চারণ বেশ অনুকরণীয় হয়েই মূর্ত হয়েছে দর্শকদের জন্য।
এবারের ‘ইত্যাদি’র শুরুতে কক্সকাজার নিয়ে করা প্রতিবেদনটি ছিল বেশ তথ্যবহুল। এছাড়া পরিবেশিত কুতুবদিয়া দ্বীপ, মহেশখালীর অপার সৌন্দর্য নিয়ে করা প্রতিবেদনটিও ছিল মনকাড়া। এ প্রতিবেদন থেকে স্থান দুটি সম্পর্কে জানা গেছে জানা-অজানা নানা তথ্য। পাশাপাশি শুঁটকি বিষয়ক তথ্যবহুল চিত্রায়ণটিও দারুণ লেগেছে। অনুষ্ঠানের শেষ প্রতিবেদন ঠাকুরগাঁও জেলার এক নিভৃত পল্লীতে গড়ে তোলা ব্যতিক্রমধর্মী জাদুঘর ‘লোকায়ন জীবন বৈচিত্র্য জাদুঘর’ ছিল এককথায় দুর্দান্ত।

এ প্রতিবেদন থেকে জানা গেল দেশের লোকজ বিভিন্ন তথ্য, বিভিন্ন নদ-নদী, নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী আর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নানান তথ্য ও দালিলিক প্রমাণসহ চারটি গ্যালারির সমন্বয়ে তৈরি করা হয়েছে এ জাদুঘর, যা দেশপ্রেমের এক অনন্য দৃষ্টান্ত। ‘ইত্যাদি’তে সংগীতবিষয়ক তিনটি আয়োজন ছিল এবার। যেসবের মধে চট্টগ্রামের শিল্পী মিঠুন চক্র ও ইমতিয়াজ আলী জিমির পরিবেশনায় সাগরের ঢেউয়ের সঙ্গে সংগীতযন্ত্রের লীলামুখর খেলা ‘সাগর সংলাপ’ ছিল একটি ব্যতিক্রমী প্রয়াস। যা ভালো লেগেছে। এছাড়া রবি চৌধুরী ও সৈকত শিল্পী জাহিদের পরিবেশনায় গান ‘মধু খই খই বিষ খাওয়াইলা’ এবং অভিনয়শিল্পী তারিন ও মীর সাব্বিরের অংশগ্রহণে জনপ্রিয় গান ‘তুমি সাত সাগরের ওপার হতে’র চিত্রায়ণ বেশ উপভোগ্য হয়েছে।

চিঠিপত্র বিভাগে শারীরিক প্রতিবন্ধী তরুণ বায়োজিদ হাসানের আত্মনির্ভরশীলতার ওপর প্রতিবেদনটি দারুণভাবে যে কাউকে উদ্বুদ্ধ করেছে কর্মোদ্যোগী হতে। এসবের পাশাপাশি ‘ইত্যাদি’র নিয়মিত অন্য সব আইটেমও ছিল নান্দনিকতায় পূর্ণ। এমন একটি আকর্ষর্ণীয় ‘ইত্যাদি’ উপহার দেয়ায় অনুষ্ঠানের নির্মাতা হানিফ সংকেতকে ধন্যবাদ। সেসঙ্গে অভিনন্দন কেয়া কস্‌মেটিকস্‌ লিমিটেডকে দর্শকপ্রিয় এ অনুষ্ঠানটি দীর্ঘদিন ধরে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাওয়ার জন্য।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে