মঙ্গলবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮, ১০:১৪:২০

জানা গেল, শ্রীদেবীর মৃত্যুর নেপথ্যে ভয়ঙ্কর সেই ঘটনা!

জানা গেল, শ্রীদেবীর মৃত্যুর নেপথ্যে ভয়ঙ্কর সেই ঘটনা!

বিনোদন ডেস্ক :  জানা গেল শ্রীদেবীর মৃত্যুর নেপথ্যে ভয়ঙ্কর সেই ঘটনা! তখন রাত ১০টা- সাড়ে ১০টা হবে। বাথরুমে অজ্ঞান হয়ে পড়ে গিয়েছিলেন তিনি। দুবাইয়ের রশিদ হাসপাতালে যখন নিয়ে যাওয়া হয়, আর কিছু করার নেই। লাখো ভক্তের ‘হার্টথ্রব’ বলিউড গ্ল্যামারকুইন শ্রীদেবী ততক্ষণে ঢলে পড়েছেন মৃত্যুর কোলে।

বছর কয়েক আগে ভারতের তথা আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চিত্র পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষও কাউকে সময় দেননি চিকিৎসা করানোর। বাঙালির মনে সব সময়ের জন্য জায়গা করে নেয়া উত্তমকুমার থেকে শুরু করে ডাকসাইটে অভিনেতা সঞ্জীবকুমার— এভাবে হঠাৎ চলে যাওয়া অতি বিখ্যাতদের সংখ্যা কম নয়। শ্রীদেবীর দেওর সঞ্জয় কাপুর সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’-এ মারা গেছেন অভিনেত্রী।

এই ‘সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ এবং তারপর ‘সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ’ বা ‘এসসিডি’— শব্দটি শুনতে ছোট্ট লাগলেও, অজস্র সেলিব্রিটি ও অসামান্য বহু সম্ভাবনাকে কয়েক সেকেন্ডে ঝরিয়ে দিতে এর জুড়ি মেলা ভার।

আমেরিকান সুন্দরী অভিনেত্রী ব্রিটনি মারফি (৩২) থেকে সাড়া জাগানো ভারতের দক্ষিণী অভিনেত্রী সুজাতা (৫৯), বিশিষ্ট অভিনেত্রী নিরূপা রায় থেকে রিমা লাগু— ‘সাডেন কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট’ এবং তা থেকে মৃত্যুর কোলে বিখ্যাতদের ঢলে পড়ার ঘটনার তালিকা বেশ লম্বা।

শ্রীদেবীর মৃত্যুর পর নামকরা হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের কমবেশি এক কথা— সে আপনি সেলিব্রিটি হন বা গৃহবধূ, ঘর-বাইরে সামলানো কর্মরতা মহিলা হন বা সেলিব্রিটি নায়িকা-গায়িকা— হার্টের অসুখের ক্ষেত্রে বিপদ সঙ্কেত আসলে তিনটি ‘পি’। ‘পি’ অর্থাৎ প্যালপিটেশন বা বুক ধড়ফড় করা, দ্বিতীয় ‘পি’র মানে প্যান্টিং বা শ্বাসকষ্ট এবং তৃতীয় ‘পি’র বা পেন অর্থাৎ বুক ব্যথা।

বুক ধড়ফড়, শ্বাসকষ্ট ও বুক ব্যথা— এই তিনটে উপসর্গের যেকোনো একটি হলেই বিন্দুমাত্র দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যান। বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট এবং আইএমএ’র সদ্য প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি ডাঃ কে কে আগরওয়াল বলেন, পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের ‘সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ’ হওয়ার আশঙ্কা চারভাগের এক ভাগ ঠিকই। কিন্তু মনে রাখবেন,ইমার্জেন্সি রুমে মেয়েদের হার্ট অ্যাটাক হলে সেটা অনেক বেশি বিপজ্জনক হয়।

ভারতের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের সর্ববৃহৎ সংগঠন কার্ডিওলজিক্যাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার (সিএসআই) প্রাক্তন সভাপতি ডাঃ পি কে দেব বলেন, গড়পড়তা ৪৫ থেকে ৪৮ বছরে মেনোপজ হওয়ার আগে মেয়েদের হার্টের অসুখে মারা যাওয়ার হার, পুরুষের চারভাগের এক ভাগ হলেও মেনোপজের পর কিন্তু এই হারে কোনো ফারাকই থাকে না।

মেনোপজের আগে ইস্ট্রোজেন হর্মোন মহিলাদের হার্ট অ্যাটাক আটকায়। কিন্তু তারপর? তাই চল্লিশের পর মহিলাদের হার্টের অসুখের ক্ষেত্রে বিশেষ সাবধান হওয়া উচিত। ডাঃ দেব আরো জানালেন, গত কয়েক বছরের মধ্যে মধ্যবয়স্কা মহিলাদের মধ্যে হার্টের অসুখ যেন আরো বাড়ছে।

এদিকে, জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীদেবীর মৃত্যুকে ঘিরে বিতর্কও দানা বাঁধছে। তিনি নাকি বয়স কমানোর জন্য একাধিক সার্জারি করেছেন, ক্যালিফোর্নিয়ায় যেতেন এইসব অপারেশন করাতে। সুন্দরী থাকার ইচ্ছে থেকে নাকি বোটক্স থেকে সিলিকন ব্রেস্ট— সব ধরনের কৃত্রিম সৌন্দর্যবৃদ্ধির রাস্তা বেছেছিলেন— এবং সেগুলোই তার হঠাৎ মৃত্যুর কারণ।

রোববার সকাল থেকে এই বিতর্কে শোরগোল পড়েছে ভারতজুড়ে। এ প্রসঙ্গে সিএসআই-এর সাবেক সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি ও বিশিষ্ট কার্ডিওলজিস্ট ডাঃ অরূপ দাশবিশ্বাস বলেন, সে তো শুনেছি হলিউড, বলিউড, টলিউডের অনেকেই করেন।

তাই যদি হয়, ‘সাডেন কার্ডিয়াক ডেথ’-এর মিছিল পড়ে যেত! আমার মনে হয় না ওইগুলো কারণ। একই সুরে প্রদীপবাবুও বলেন, হঠাৎ করে ওজন কমলে হার্টের বড়সড় বিপদ হতে পারে। কিন্তু, যারা সেলিব্রিটিদের এই পরামর্শ দেন, তারা এসব কিছু জানেন। পরামর্শও সেভাবে দেন বলেই শুনেছি।

তাহলে? শ্রীদেবীর মৃত্যু কি ফের আর এক সুপারসেলিব্রিটির রহস্যমৃত্যুর তালিকায় নাম লেখাবে? নাকি নিজের অসুখবিসুখ নিয়ে সবসময়ই হেলাফেলা করা মহিলাদের কিছুটা হলেও সচেতন করবে? উত্তর দেবে সময়।

এমটিনিউজ২৪/এম.জে/ এস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে