রবিবার, ০৪ মার্চ, ২০১৮, ০৮:৪৮:৫৪

শ্রীদেবীর সেই রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর অবশেষে মুখ খুললেন বনি

 শ্রীদেবীর সেই রাতে ঠিক কী ঘটেছিল, মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর অবশেষে মুখ খুললেন বনি

বিনোদন ডেস্ক: শ্রীদেবীর মৃত্যু হয়েছে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি। তারপর কেটে গিয়েছে এক সপ্তাহ। গতকাল রামেশ্বরমে তাঁর চিতাভস্ম ভাসিয়ে দিয়েছে পরিবারের সদস্যরা। আজ সন্ধে বেলা হায়দরাবাদের পার্ক হায়াত হোটেলে রয়েছে শ্রীদেবীর স্মরনে শোক সভা। গত এক সপ্তাহ আকষ্মিক ঝড়ের মধ্যে দিয়ে কাটিয়েছে বলিউডের এই কপূর পরিবার। শ্রীদেবীর মৃত্যু নিয়ে প্রচুর গুঞ্জনও হয়েছে, রয়েছে বহু প্রশ্নও। এই সবকিছুর মাঝে অবশেষে শ্রী-র মৃত্যু নিয়ে প্রথম মুখ খুললেন, সেদিন হোটেলের ঘরে উপস্থিত যিনি অভিনেত্রীকে প্রথম ভাসমান অবস্থায় বাথটবে দেখেন, তিনি। সেই ব্যক্তি হলেন চাঁদনির স্বামী প্রযোজক বনি কপূর।

বনির কথায়, গত শনিবার অর্থাত্ ২৪ ফেব্রুয়ারি, শ্রীদেবীকে দুবাইয়ের জুমেইরা এমিরেটস টাওয়ার হোটেলের রুম নম্বর ২২০১-এ আচমকাই সারপ্রাইজ দেওয়ার জন্যে পৌঁছে যান বনি। প্রসঙ্গত, তাঁদের এক আত্মীয়ের বিয়ে শেষ হওয়ার পর বনি তাঁর ছোট মেয়ে খুশিকে নিয়ে মুম্বই ফিরে এলেও, দুবাইয়ে একলাই থেকে গিয়েছিলেন শ্রীদেবী। জানা যায়, মৃত্যুর আগের ৪৮ ঘণ্টা তিনি একবারও ঘরের বাইরে পা পর্যন্ত রাখেননি। এরপরই ঘটে যায় সেই মারাত্মক ঘটনা।

এরপর শ্রীদেবীর দেহ ছাড়া নিয়েও চলে বিস্তর টালবাহনা। শনিবার রাতে মারা গেলেও, দেহ দেশে ফেরে মঙ্গলবার, বুধবার অভিনেত্রীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। তারমধ্যেই বনিকে পড়তে হয় পুলিশি জেরার মুখে, এমনকি শোনা যায় শ্রীদেবীর স্বামী দুবাই পুলিশের অনুমতি ছাড়া, সেখান থেকে কোথাও যেতে পর্যন্ত পারবেন না। প্রথমে অভিনেত্রীর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কথা রটে গেলেও, পরে জানা যায় বাথটবে পড়ে গিয়ে জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে শ্রীর। এমনকি সেখানকার এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর ছিল, শ্রীর পেটে অ্যালকোহলও পাওয়া গিয়েছে। যদিও এনিয়ে বিভিন্ন মত শোনা গিয়েছে। তাহলে ঠিক কী ঘটেছিল সে রাতে?

সে রাতে ঘরের মধ্যে উপস্থিত থাকা ঘটনার প্রথম প্রত্যক্ষদর্শী বনি কপূর খোলাখুলি সব কথা বললেন। বনির কথায়, শ্রী তাঁকে শনিবার সকালে ম্যাসেজ করে বলেন, ‘পাপা (বনিকে এই নামেই ডাকতেন শ্রীদেবী)মিসিং ইউ’। এরপর স্ত্রীকে মিস করার কথাও জানান বনি, তবে তিনি যে বিকেলে সারপ্রাইজ দেবেন সেকথা একবারও বলেননি। তারপর বিকেলে হোটেলে পৌঁছে, স্ত্রীকে জড়িয়ে চুম্বনও করেন বনি। ১৫ মিনিট তাঁদের মধ্যে হাল্কা কথোপকথনও হয়। তারপরই স্ত্রীকে রোম্যান্টিক ডিনারে যাওয়ার আমন্ত্রণ করেন বনি।  

বনি ফ্রেস হয়ে তাঁদের স্যুটের বেডরুমে বসে টিভিতে ক্রিকেট ম্যাচ দেখচ্ছিলেন। শ্রী ১৫ মিনিটের মধ্যে স্নান সেরে আসবেন বলেন। তখনও ঘড়িতে আটটা বাজতে কিছুক্ষণ বাকি ছিল, কিন্তু শ্রীদেবী বাথরুম থেকে বেরোন না। যেহেতু সেদিন ছিল শনিবার, এবং রাত আটটার পর দুবাইয়ের যেকোনও হোটেলে জায়গা পাওয়া মুশকিল, তাই শ্রীকে ‘জান’ ‘জান’ বলে ডাকতে থাকেন বনি। কোনও সাড়া না পাওয়ায়, বাথরুমের দরজায় টোকা মারেন। বনির কথা, বাথরুমের দরজা ভেতর থেকে খোলাই ছিল, ঢুকেই তিনি দেখেন, বাথটবের মধ্যে পড়ে রয়েছেন শ্রী।

তবে আশ্চর্যজনক ভাবে বাথটব থেকে একফোঁটা জলও মাটিতে পড়ে ছিল না। দুবাইয়ের সময় অনুযায়ী ঘড়িতে তখন বাজে আটটা। স্ত্রীকে সারপ্রাইজ দেওয়ার দু ঘণ্টার মধ্যে এমন ভয়াবহ ঝড় তাঁর জীবনে আসতে চলেছে, সেটা বোধহয় ভাবতেও পারেননি বনি। নিজের তিরিশ বছরের পুরনো বন্ধু ট্রেড অ্যানালিস্ট কোমল নাহাতকে এই কথাগুলো অকপটে জানিয়েছেন বনি। তিনিই তাঁর ব্লগে সেকথা শেয়ার করেন।

তবে বনি এধরনের সারপ্রাইজ শ্রীদেবীকে আগেও একবার দিয়েছিলেন। সালটা ছিল ১৯৯৪, বেঙ্গালুরুতে। বাবার এবারের এই সারপ্রাইজ দেওয়ার আইডিয়াটা জাহ্নবীও জানতেন, এবং সমর্থনও করেছিলেন।

কারণ, মা বিদেশ থেকে একলা ফিরতে গেলে, কিছু না কিছু হারিয়ে ফেলেন। জাহ্নবীর ভয় ছিল, মা হয়তো পার্সপোর্টই হারিয়ে ফেলবেন। প্রসঙ্গত, শ্রী কখনও একলা বিদেশে যাননি। মাত্র দুবার একলা গিয়েছিলেন, তাও সেবার তাঁর সঙ্গে ছিলেন বনির বন্ধুর স্ত্রী। সবসময়ই শ্রীদেবীর পাশে থেকেছেন স্বামী বা সন্তানরা। একলা খুব ভয় পেতেন বলিউডের ‘চাঁদনি’, তবে আজ তিনি বহুদূরে একলা একাকীই গিয়েছেন। ভয় নয়, পরম শান্তিতে ঘুমোতে……..।  -এবিপি আনন্দ
এমটিনিউজ২৪.কম/টিটি/পিএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে