বৃহস্পতিবার, ০৩ মে, ২০১৮, ১১:১৫:১১

এবার আসিফ ইস্যুতে মুখ খুললেন দোলন

এবার আসিফ ইস্যুতে মুখ খুললেন দোলন

বিনোদন ডেস্ক: মডেল অভিনেতা কাজী আসিফের জামিনের পর আলোচনায় আসে তার স্তীকে পাঠানো তালাকনামা। এরপর এবার আলোচনায় এসেছে নতুন আরেকটি দিক আর তা হল কাজী আসিফের নাকি অভিনেত্রী দোলন দে’র সাথে সম্পর্ক ছিল। এমনটাই দাবী কাজী আসিফের স্ত্রী শামীমা আক্তার অর্নির।

এ বিষয়ে অভিনেত্রী দোলন দে’র সাথে কথা হয় পূর্বপশ্চিমের। এসময় ঘটনার বিস্তারিত খুলে বলেন মডেল ও অভিনেত্রী দোলন দে। অভিনেত্রী দোলন দে’র সাথে আলাপচারিতার চুম্বক অংশ আমাদের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হল।

আপনি আর আসিফ নাকি একসাথে ছিলেন মালয়েশিয়াতে জানতে চাইলে দোলন বলেন, আসিফ ভাইয়া তো মালয়েশিয়া তে ছিলেন শ্যুটিং এ, আমিও ছিলাম মালয়েশিয়া তে একই শ্যুটিং এর কাজে। শ্যুটিং শেষ করে যখন আমরা বাংলাদেশে আসি তখন বাংলাদেশের ইমিগ্রেশনে ভাইয়াকে গ্রেফতার করে। ইমিগ্রেশনে যখন ভাইয়াকে এরেষ্ট করে তখন আমি দেখতে পাচ্ছিলাম না আসলে ওইদিকে উনার সাথে কি হচ্ছে। উনাকে ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। আমি সেখানে একঘন্টা দাঁড়িয়ে ছিলাম। এদিকে আমাদের সাথে অন্য যারা ছিলেন তারা সবাই চলে গেসে। আমার দাঁড়িয়ে থাকার কারন ছিল যে পুলিশ যখন আসিফ ভাইয়াকে নিয়ে যায় সে সময়ে আসিফ ভাই তার বোর্ডিং পাস এর কার্ডটা আমাকে দেয়। আমি সেটা নিয়ে তার জন্য অপেক্ষায় ছিলাম।

এখন সে না আসা পর্যন্ত তো তার কার্ড টা আমি তাকে দিতে পারছিলাম না। আমি তখনো এতকিছুই জানতাম না। অনেক সময় পাসপোর্টের প্রোফাইল আসতে দেরী হয় তাই ভাবলাম এমন কোন ঝামেলা কিনা তাই তার আসার অপেক্ষায় ছিলাম। যখন অনেক বেশী দেরী হচ্ছিল তখন আমি সেখানকার একজন পুলিশ অফিসারকে জিজ্ঞাসা করি যে আসলে বিষয়টা কি? তখন সেই পুলিশ কর্মকর্তা আমাকে জানালেন ‘আপনার সাথে যিনি ছিলেন উনার একটু ঝামেলা আছে, আপনি যদি চান তাহলে চলে যেতে পারেন। উনার দেরী হবে। এটা শোনবার পরও আমি সেখানে আরো ১০-১৫ মিনিট ছিলাম।

এমন সময় আমাকে আমাদের অভিনয় শিল্পী সংঘের এক সিনিয়র শিল্পী আমাকে কল করে সব বিষয় খুলে বিস্তারিত বলেন। তখন আমি জানতে পারি অর্নি ভাবীর করা মামলায় আসিফ ভাই এরেষ্ট হইসেন। তারপরপরই দেখি যে দুইজন পুলিশ আসিফ ভাইকে নিয়ে যাচ্ছেন। এসময় আসিফ ভাই পুলিশের অনুমতি নিয়ে আমার সাথে কথা বলতে আসে ও আমাকে বলে দোলন আপনি আমার ব্যাগগুলা আপনার সাথে নিয়ে যান, পরে কি হয় আমি আপনাকে জানাবো। এরপরই পুলিশ ভাইয়াকে নিয়ে গেলো আর আমি গাড়িতে আমার লাগেজসহ ভাইয়ার ব্যাগগুলা বাসায় নিয়ে আসলাম।

তাহলে আপনাকে আসিফের স্ত্রী কি করে থানায় দেখলেন জানতে চাইলে দোলন বলেন, সকাল বেলা আমাকে হিল্লোল ভাই ফোন করে বলল দোলন তোর কাছে যে আসিফের ব্যাগ আছে তা নিয়ে একটু হাজারীবাগ থানার সামনে আয় আমি আছি। আমিও হিল্লোল ভাইকে লাগেজ দিতে হাজারীবাগ থানায় গেলাম। সেখানেই আমাকে আসিফ ভাইয়ের কিছু কাগজ ও লাগেজসহ অর্নি ভাবী দেখেন। আমার কাছে আসিফ ভাইয়ের জিনিসপত্র দেখার পরেই উনার মনে প্রশ্ন জাগে এগুলা আমি কোথায় পাইসি।

তাহলে আপনি কি বলতে চাইছেন আপনি শুধু সহকর্মী হিসেবে আসিফকে সাহায্য করেছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে দোলন বলেন, হ্যাঁ, আমি আমার দ্বায়িত্ববোধ থেকেই কাজটা করেছি। আমার সহকর্মীর একটা সমস্যা হইসে আর আমি তার ব্যাগটা এয়ারপোর্টে ফেলে চলে যাবো নাকি সাথে নিয়ে যাবো এ দ্বায়িত্ববোধটা অন্তত একটা শিল্পী হিসেবে আমার তো থাকতে হবে। আমি বলব আমি আমার দ্বায়িত্ববোধের জায়গা থেকেই আসিফ ভাইয়ের লাগেজটা নিয়ে গেছি।

তাহলে অর্নি যা বলছেন এসব কথা কি ভুল? জানতে চাইলে দোলন বলেন, এই লাগেজ নিয়ে যাওয়াটাকেই কেন্দ্র করে অর্নি ভাবি আমাকে নিয়ে এসব মনগড়া কথা বলছেন। অর্নি ভাবি আমাকে কিন্তু ফেসবুকেও নক দিয়েছিলেন। আমি তার রিপ্লাই দেয়ার পর উনি আমার মোবাইল নাম্বার চাইলে আমি তাও দেই। উনি আমাকে কল করে বলেন, আপনি সকালে থানায় যখন এসেছিলেন তখন আপনার কাছে আসিফের ব্যাগ দেখলাম, সেটা কোথায় পেলেন। তখন আমি তাকে সব সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে বলি। এমনকি উনি ফোনে আসিফ ভাইকে নিয়ে নানান কথা বলেছেন আমাকে। কার সাথে তার সম্পর্ক ছিল না ছিল এসব। এসকল বিষয়ে আমি তখন কথা বাড়াই নাই। সুন্দরভাবেই কথা শেষ করে আমি ফোন রাখি।

আসিফের সাথে দোলনের পরিচয় কিভাবে এমন প্রশ্নের জবাবে দোলন বলেন, আসিফ ভাইয়ের সাথে আমার প্রথম কাজ হয়েছে এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে। পরিচালক রায়হান খানের নির্দেশনায় একটি কাজে নিলয় আলমগীরের সাথে করার কথা ছিলো ,তার সাথে সময় না মেলায় আসিফ ভাই এ কাজটা করছে। সেটাই তার সাথে আমার প্রথম কাজ ছিলো আর ভাবি বলছেন যে মার্চের আগে থেকেই নাকি তার সাথে আমার রিলেশন।

এসময় দোলন আরো বলেন, তার সাথে আমার সব মিলিয়ে তিনটা কাজ হয়েছে। তার সাথে আমার পরিচয়ই হয়েছে দেড় মাস। আমার কাছে যে ব্যাপারটা সবচেয়ে খারাপ লাগছে যে ভাবী আমার সাথে ফোনে কথা বললো আমি তাকে সবকিছু এক্সপ্লেইন করলাম,এটাও বললাম যে অপরাধ করেছে তার যেনো শাস্তি হয়।এই মহিলা দুইদিন পরেই আবার এসব শুরু করে ‍দিলো আমি আসলে ক্যালকুলেশন মেলাতে পারলাম না। আমি ভীষণ হতাশ।

প্রসঙ্গত, গত ৬ মার্চ স্বামী আসিফের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও যৌতুকের মামলা করেন অর্নি। ২৩ এপ্রিল গ্রেপ্তার হন আসিফ। স্ত্রীর সঙ্গে খারাপ আচরণ আর করবেন না- এই শর্তে ২৫ এপ্রিল আদালত আসিফকে জামিন দেন। জামিন পাওয়ার আগেই ২৩ এপ্রিল স্ত্রীকে তালাকের নোটিশ পাঠান আসিফ। তার পাঠানো নোটিশটি ২৫ এপ্রিল হাতে পান অর্নি। আগামী ৬ মে আদালতে হাজির হওয়ার কথা আছে আসিফ ও অর্নির।
এমটি নিউজ/এপি/ডিসি

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে