শুক্রবার, ১৩ জুলাই, ২০১৮, ০৪:৩২:২২

‘আব্বা মারা যাওয়ার পর কখনও ঈদ উদযাপন করিনি’

‘আব্বা মারা যাওয়ার পর কখনও ঈদ উদযাপন করিনি’

‘আব্বা নেই আজ ১৫ বছর হয়ে গেছে। তিনি মারা যাওয়ার পর প্রতিটা দিনই তাকে মিস করি। একটি দিনের জন্য আব্বাকে ভুলে থাকতে পারিনি। কত যত্নে পরম মমতায় তিনি আমাদের আগলে রেখেছিলেন। চোখের সামনে আজও সেসব স্পষ্ট ভেসে বেড়াচ্ছে। মৃত্যুদিন বলে না, প্রতিদিনই বাবার জন্য আমার মন কাঁদে। প্রতি মোমেন্টে তাকে ফিল করি। আব্বা যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক। সবাই আমার আব্বার জন্য দোয়া করবেন।’

চলচ্চিত্রের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেতা দিলদারের ১৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার (১৩ জুলাই)। এদিনে দিলদাদের ছোট মেয়ে জিনিয়া আফরোজ তার বাবাকে নিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে  বলছিলেন।

শুক্রবার দুপুরে তিনি বলছিলেন, আব্বা মারা যাওয়ার ১৫ বছর হয়ে গেছে। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় এই তো সেদিন তিন আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। আব্বা মারা যাওয়ার পর জীবনে অনেক আনন্দ মাটি হয়ে গেছে। যেমন, কখনও ঈদ উদযাপন করিনি। ঈদের দিনটা তিনি পরিবার নিয়ে খুব উপভোগ করতেন।

ঈদের দিনটা আব্বার কারণে আমাদের সবার কাছে স্পেশাল হয়ে উঠত। আমার ছেলের বয়স তখন ২ মাস। তাকে কোলে নিয়ে একবার ঈদের নামায আদায় করতে গিয়েছিলেন। এখন আব্বা নেই। ঈদ আসে, ঈদ যায়। প্রতিবার ঈদের দিনে আব্বার ওইসব কাজগুলো আর দেখতে পাইনা বলে ঈদ উদযাপন করতে পারি না। এই ১৫ বছরে যতগুলো ঈদ গেছে প্রতিবার কেঁদেছি। শুধু তাই, বাবার ছবি-গান সবগুলো দেখতে আমার ভীষণ খারাপ লাগে। আমি নিজেকে কন্ট্রোল করতে পারি না।

২০০৩ সালের ১৩ জুলাই মাত্র ৫৮ বছর বয়সে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দিলদার। এরপর তাকে দাফন করা হয় সানারপাড় এলাকায় (ডেমরা, ঢাকা)। সেখানেই তাদের পারিবারিক গোরস্থান। দিলদারের মেয়ে জিনিয়া আফরোজ জানান, মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তাদের পৈতৃকবাড়িতে (মতলব, চাঁদপুর) কোরআন খতম, দোয়া ও মাহফিলের আয়োজন করেন প্রতিবার। এবারও করেছেন।

জিনিয়া আফরোজ বলেন, আগে ডেমরার মসজিদে দোয়ার আয়োজন করতাম। কিন্তু কয়েকবার হলো চাঁদপুর করছি। আমি বাবার জন্য যতটুকু পারি করি। আমার ফুফুও সহায়তা করেন। আজ আসরের নামাজের পর সেখানে দোয়ার আয়োজন রয়েছে। আরও বলেন, আগে বাবার কবর জিয়ারত করতে যেতাম বিশেষগুলোতে। কিন্তু এখন যেখানে যায়াতাতের রাস্তা কিছুটা নষ্ট হয়েছে। জায়গাটার চারপাশে দেয়াল উঠেছে। নতুন রাস্তা না বানানো পর্যন্ত সেখানে আর যাওয়া যাচ্ছেনা।

আলাপের শেষের দিকে দিলদার কন্যা জিনিয়া বলেন, আব্বার চলে যাওয়ায় তার অভাব শুধু আমরা নই, পুরো দেশের চলচ্চিত্র প্রিয় মানুষরা অনুভব করেন। আব্বা ইন্ডাস্ট্রির জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। তার মূল্যায়ণে তাকে দেশের মানুষ মনে রেখেছে এটাই তার সন্তান হিসেবে আমার কাছে শ্রেষ্ঠ পাওয়া মনে হয়।। শুধু আমার বাবা নয়, সব শিল্পীদের ক্ষেত্রে এটা হওয়া উচিত। আমি খেয়াল করেছি, আব্বাকে আগের মতো মানুষ এখনও মনে রেখেছে। একটুও ভোলেনি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে