বুধবার, ২৫ জুলাই, ২০১৮, ০৩:৫৩:০৯

‘বিষয়টি নিয়ে আমি বেশ চিন্তিত’

‘বিষয়টি নিয়ে আমি বেশ চিন্তিত’

বিনোদন ডেস্ক: তিনবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিজয়ী অভিনেত্রী সাদিকা পারভিন পপি। চলচ্চিত্রে প্রথম ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান ১৯৯৭ সালে। সেই ছবির কথা সিনেমাপ্রেমী দর্শকদের নিশ্চয়ই মনে আছে। মনতাজুর রহমান আকবরের পরিচালনায় ‘কুলি’ ছবিতে অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করেন এ পর্দাকন্যা। তবে চলচ্চিত্রে আসার দুই বছর আগে তিনি লাক্স আনন্দধারা প্রতিযোগিতায় প্রথম হন। এরপর চলচ্চিত্রে তার পথচলা শুরু হয়।

এ পর্যন্ত অসংখ্য হিট ছবি উপহার দিয়েছেন পপি। কাজ করেছেন নাটক, চলচ্চিত্র এবং বিজ্ঞাপনে। পপি অভিনীত এবং জাহাঙ্গীর আলম সুমনের পরিচালনায় ‘সোনাবন্ধু’ ছবিটি সবশেষ গত বছর মুক্তি পায়। এ ছবিতে তার সহশিল্পী হিসেবে অভিনয় করেন ডি এ তায়েব। বর্তমান সময়ে এসে চলচ্চিত্রের অবস্থা এবং নিজের ব্যস্ততা নিয়ে জানতে চাইলে পপি বলেন, একটা সময় এফডিসি ছিল রমরমা। এফডিসির প্রতিটি ফ্লোরে কাজ হতো। কিন্তু এখন তো চিত্রটা ভিন্ন। প্রতিটি ফ্লোরে শুটিং আর আগের মতো হচ্ছে না। ছবি শুরু হয় কিন্তু শেষ হয় না। অনেক ছবির মহরতের পর কোনো খবর থাকে না। আবার যে ছবিগুলো মুক্তি পাচ্ছে সেগুলো সেভাবে ব্যবসা করছে না। এমনভাবে চলতে থাকলে চলচ্চিত্রশিল্প তো টিকবে না। বিষয়টি নিয়ে আমি বেশ চিন্তিত। বর্তমানে সাদেক সিদ্দিকীর ‘সাহসী যোদ্ধা’ নামে একটি ছবির কাজ করছি।

কিছুদিন আগে এ ছবির প্রথম অংশের কাজ শেষ হয়েছে। সামনে নতুন অংশের কাজ শুরু হবে। ছবিতে আমার বিপরীতে আমিন খান অভিনয় করছেন। এছাড়া নির্মাতা শহীদুল হক খানের দুটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন তিনি। সেগুলো সামনে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ‘আমার ঘর আমার বেহেশত’, ‘বিদ্রোহ চারিদিকে’, ‘কে আমার বাবা’, ‘জানের জান’, ‘কারাগার’, ‘বিদ্রোহী পদ্মা’, ‘রানীকুঠির বাকি ইতিহাস’, ‘মেঘের কোলে রোদ’, ‘গঙ্গাযাত্রা’সহ অসংখ্য হিট-সুপারহিট ছবিতে অভিনয় করেছেন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। চলচ্চিত্রের বাইরে ঈদের বিশেষ নাটকেও অভিনয় করে থাকেন পপি। তবে গত রোজার ঈদে তাকে দর্শকরা পায়নি। বর্তমানেও ছোটপর্দায় তেমন কাজ করছেন না তিনি।

এর কারণ কি জানতে চাইলে পপি বলেন, আমার বাবা গত রমজান মাস থেকেই অনেক অসুস্থ। তাই কোনো কাজই সেই সময় করতে পারিনি। তবে কাজ করার ইচ্ছে আছে। আসছে কোরবানির ঈদে তেমন ভালো গল্পের কাহিনী পেলে ছোটপর্দার নাটক বা টেলিছবিতে কাজ করবো। আমি ভালো কাজের প্রস্তাব পেলে তা অবশ্যই করবো। গত কয়েক বছর ধরেই চলচ্চিত্রের বাজার খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। ছবিতে লগ্নি করেও টাকা ফেরত পাচ্ছেন না প্রযোজকরা। এ বিষয়ে পপি বলেন, আমাদের চলচ্চিত্রের বাজারটা অনেক ছোট হয়ে যাচ্ছে। একটা সময় বছরে যেখানে ৫০-৬০টি সিনেমা হিট হতো সেখানে ধীরে ধীরে ছবি মুক্তির সংখ্যাটাও কমে যাচ্ছে। এখন সিনেমার প্রোডাকশন হচ্ছে হাতে গোনা। গোটা বছরে ৬০টি ছবি হিট তো দূরে থাক মোটে ৬০টি ছবি মুক্তি পাচ্ছে না। আর এখান থেকে হাতে গোনা কয়েকটা ছবি ব্যবসায়িক সফলতা পাচ্ছে।

এজন্যই পেশাদার প্রযোজকরা এই অঙ্গন থেকে সরে যাচ্ছে। তবে আমার মতে, ভালো চলচ্চিত্র যে একেবারেই হচ্ছে তা নয়। কিছু হচ্ছে। আর এটা যতো বাড়তে থাকবে সিনেমা হল বাঁচবে। সেই সঙ্গে ছবির বাজারও বড় হবে। প্রযোজকরা ভালো মানের সিনেমা তৈরি করলে অবশ্যই তাতে মুনাফা পাবেন এটা আমি নিশ্চিত। পপি আরো বলেন, ভালো চলচ্চিত্র শিল্পীর পাশাপাশি ভালো নির্মাতা এখনো আমাদের দেশে রয়েছে। তাই আমি হতাশ না আশাবাদী। সামনে ভালো কিছু চলচ্চিত্রের মাধ্যমে এই অঙ্গন আবারো সমৃদ্ধ হবে। সেই সুদিনের অপেক্ষায় রয়েছি। সেই দিনটি আসতে আর বেশী দেরি নেই বলে মনে করি আমি।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে