রবিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:৫৫:৫৭

যে স্বপ্নটি পূরণ হলো না আইয়ুব বাচ্চুর

যে স্বপ্নটি পূরণ হলো না আইয়ুব বাচ্চুর

বিনোদন ডেস্ক:  মায়ের কবরের পাশে চিরনদ্রায় শায়িত হলেন ব্যান্ড কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চু। চট্টগ্রাম নগরীর চৈতন্য গলি কবরস্থানে যেখানে শিল্পীর মাকে কবর দেওয়ার হয়েছিল তার পাশেই শনিবার সন্ধ্যায় দাফন করা হলো শিল্পীকে।

ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও আইয়ুব বাচ্চুর জানাজায় হাজার হাজার মানুষের ভীর লক্ষ্য করা গেছে। শনিবার বিকেলে জানাজায় অংশ নিতে সাধারণ মানুষের ঢল নামে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে।

আসরের নামাজের পর তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বেলা তিনটা থেকে মসজিদ প্রাঙ্গণে রাখা আইয়ুব বাচ্চুর লাশ ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান তার ভক্ত আর শুভানুধ্যায়ীরা। ফুলে ফুলে ঢেকে যায় কফিনটি। ভক্ত, সাধারণ মানুষ, রাজনীতিবিদ, শিল্পী, সাহিত্যিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেখানে ভিড় করেন।

একপর্যায়ে মসজিদের মাঠ ছাপিয়ে পাশের সড়কে চলে যায় ভিড়। যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায় ওয়াসা-আলমাস মোড় সড়কে। জানাজায় অংশ নিতে এসে অনেকে আইয়ুব বাচ্চুর বিভিন্ন কনসার্ট ও গানের স্মৃতিচারণা করেন। অনেকের চোখের কোনা ভিজে ওঠে। সরওয়ার হোসেন নামের এক যুবক বলেন, ‘আইয়ুব বাচ্চুর গান তারুণ্যের প্রতীক। প্রেমের প্রতীক। এ দেশের তরুণ-তরুণীরা তার গান শুনে প্রেম করেছে। বিরহের সময়ও আইয়ুব বাচ্চুর গানকে সঙ্গী করেছে। তিনি মরে গেলেও তার গান বেঁচে থাকবে।’

আইয়ুব বাচ্চুর মৃত্যুর সংবাদ রেডিও, টেলিভিশন, পত্রপত্রিকায় প্রকাশ ও সোস্যাল মিডিয়া ফেসবুকে তা ভাইরাল হওয়ার সাথে সাথে তার গ্রামের বাড়ি পটিয়ার খরনায় ছড়িয়ে পড়লে গ্রামে আত্মীয়স্বজন গ্রামবাসীর মধ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে।

গতকাল চট্টগ্রামে সর্বশেষ নামাজে জানাজায় আত্মীয়স্বজন ও গ্রামবাসী অংশগ্রহণ করেন। আইয়ুব বাচ্চুর বাবা মো: ইসহাক একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ছিলেন। তার দাদা আলহাজ নুরুজ্জামান সওদাগরও চট্টগ্রামের স্বনামধন্য একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। সেই সুবাদে নগরীতেই তাদের বসবাস ছিল।

গ্রামের বাড়ি পটিয়ার খরনায় সর্বশেষ এসে গ্রামের অসহায় দরিদ্রদের জন্য একটি সর্বজনীন হাসপাতাল গড়ে তোলার স্বপ্ন ছিল আইয়ুব বাচ্চুর। তার সেই স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেল।

তিনি খরনা এলাকার মানুষের কল্যাণের জন্য ১১টি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন এবং জায়গা দান করেন। আইয়ুব বাচ্চুও তার দাদার দেখানো পথে খরনার মানুষের স্বাস্থ্যসেবার জন্য একটি হাসপাতাল গড়ার স্বপ্ন দেখতেন বলে গ্রামের বাড়িতে থাকা দাদি মনোয়ারা বেগম ও চাচা আবদুল আজিজ জানান।

চাচা আবদুল আজিজ জানান, গত ফেব্রুয়ারি মাসে সর্বশেষ এনায়েত বাজারের বাসায় তার সাথে আইয়ুব বাচ্চুর কথা হয়। সেই সময়ে তিনি গ্রামের মানুষের খবরাখবর নিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন সুযোগমতো তিনি খরনায় একটি হাসপাতাল নির্মাণ করে দেবেন। কিন্তু হঠাৎ তার মৃত্যুর কারণে সেই স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে গেল।

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে