‘অপদার্থ’, নাম না করে শাহরুখকে কটাক্ষ
বিনোদন ডেস্ক : পরিস্কার বলছি, ভয় পেয়ে গিয়েছি ভাই। দেশে কোনও অসহিষ্ণুতা নেই। আমাদের দেশের সবই খুব ভাল। এবিপি নিউজের অনুষ্ঠানে মন্তব্য শাহরুখ খানের। শাহরুখের বাচনভঙ্গির মধ্যে কি শ্লেষের সুর? প্রশ্ন নানা মহলে। ‘অপদার্থদের শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে’ নাম না করে শাহরুখকে কটাক্ষ করলেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়।
অসহিষ্ণুতা ইস্যুতে আগেরবারও শাহরুখ মুখ খোলা মাত্র যিনি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, এবারও শাহরুখ সুর পাল্টাতেই সেই তিনিই লাফিয়ে পড়েছেন! তিনি বিজেপির সাধারণ সম্পাদক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। সেবার তার চোখে শাহরুখ কার্যত ছিলেন দেশদ্রোহী। এবার ঘুরিয়ে নাম না করে অপদার্থ! টিম অমিত শাহের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য কৈলাস বিজয়বর্গীয় লিখেছেন, নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুশোচনা হচ্ছে! আসলে দেশভক্তদের ঐক্য অপদার্থদের শুভবুদ্ধির উদয় ঘটিয়েছে।
দেড় মাস আগে যখন দেশজুড়ে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে তখন, জন্মদিনে শাহরুখ বলেছিলেন, দেশে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে, চূড়ান্ত অসহিষ্ণুতা। এভাবে চলতে থাকলে আমরা আর ক’দিনের মধ্যেই অন্ধকার যুগে ফিরে যাব। দেশপ্রেমী হওয়া সত্বেও ধর্মীয় দিক থেকে অসহিষ্ণু হওয়া এবং ধর্মনিরপেক্ষ না হওয়া সবথেকে বড় অপরাধ।
এতেই বেজায় চটে যায় বিজেপি। শুরু হয় আক্রমণ। এরপর এবিপির প্রতিনিধি সুমন দে’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অসহিষ্ণুতা নিয়ে সুর কিছুটা নরম শোনা যায় শাহরুখের। শাহরুখ বলেন, আমি কেন বলব অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। এই দেশ আমায় সব দিয়েছে। আমি আমার ছেলে মেয়েদের বলে আঞ্চলিকতা-ধর্ম এসব নিয়ে ভেবোনা।
এবার অসহিষ্ণুতা নিয়ে অবস্থান পুরো বদলে ফেললেন শাহরুখ। ৪৫দিন আগে অসহিষ্ণুতা ইস্যুতে জন্মদিনে যা বলেছিলেন, নিজের ছবি দিলওয়ালের মুক্তির ঠিক আগে উল্টো সুর শাহরুখ খানের গলায়! বললেন ভয় পেয়েছেন তিনি! দেশে কোনও অসহিষ্ণুতাই নেই!
বুধবার এবিপি নিউজের ‘প্রেস কনফারেন্স’ অনুষ্ঠানে এসে শাহরুখ বারবার বোঝানোর চেষ্টা করলেন, অসহিষ্ণুতা নিয়ে কথা বলতেই এখন অস্বস্তি বোধ করছেন তিনি!
তিনি বলেন, আমার সঙ্গে কোনও অসহিষ্ণুতা হয়নি। আমি বলছিই না যে দেশে অসহিষ্ণুতা আছে। আমার কথা শুনে যদি কারও খারাপ লেগে থাকে, তাহলে আমি দুঃখিত।
শাহরুখ বলেন, দেশে কোনও সমস্যাই নেই। ঈশ্বর ভারতের মঙ্গল করুন। ভারতবাসী দীর্ঘজীবী হোক। আমি খুশি, খুব আনন্দিত। খুব দেশভক্ত। খুব দেশপ্রেমী। খুব জাতীয়তাবাদী।
যদিও, অনেকেই প্রশ্ন করছেন, শাহরুখের এই বাচনভঙ্গির মধ্যে কোনও শ্লেষ লুকিয়ে নেই তো? গোটা বিষয়টি তিনি যেভাবে উপস্থাপন করলেন, তাতে কোথাও শ্লেষের সুরে সুকৌশলে কারও উদ্দেশে কোনও বার্তা দিতে চাইলেন না তো? এটা বোঝাতে চাইলেন না তো যে গোটা বিষয়টা নিয়ে তিনি ভয় পেয়ে গিয়েছেন?
শাহরুখ বলেন, আমাকে এবার থেকে কখনও গুরুত্বপূর্ণ কোনও বিষয়ে প্রশ্ন করা না হয়, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সমাজ, সামাজিকতা কিছু নিয়েই নয়।
সেই সঙ্গে শাহরুখ এটাও বোঝাতে চাইলেন না তো, যে, তিনি তাঁদের দলে পড়েন না, যাঁরা নিজের সুরে সুর না মিললেই ক্ষেপে ওঠেন। তিনি আসলে সহিষ্ণুতারই পক্ষে।
১৮ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস