ব্র্যান্ড মাস্টার শাহরুখ
বিনোদন ডেস্ক : ‘দিল’ বিপণনে তিনিই সেরা। জানেন ব্র্যান্ডেড ফর্মুলা। ক্রিসমাসের মেজাজ এক সপ্তাহ আগেই। মাল্টিপ্লেক্সে শনি-রবির অগ্রিম বুকিং সারা। কারণটা একমাত্র শাহরুখ খান। ভিতরে যা-ই থাক, প্যাকেজিংয়ে চোখ ধাঁধিয়ে দিতে পারে ‘দিলওয়ালে’।
বছরের শেষ মাসের জন্যই সবচেয়ে বড় বিনোদনটা রেখে দেওয়া হয়। এটাই দস্তুর হয়ে দাঁড়িয়েছে বলিউডে। শাহরুখ-কাজল-বরুণ-কৃতী-রোহিত একপাত্রে। এর চেয়ে বেশি দর্শক আর কী প্রত্যাশা করতে পারেন? সব বয়সের জন্য সব রকমের খোরাক মজুত। যাদের কাছে বিনোদন মানে শাহরুখই শেষ কথা, তাদের ভরসার জায়গা কোনগুলো?
শাহরুখ+রোহিত= ডিপার্টমেন্টাল স্টোর
শাহরুখ+কাজল= সেরা রোমান্টিক জুটি
শাহরুখ= ব্র্যান্ড মাস্টার
রোমান্টিক জুটি : আগ্রহ ছিল, পাঁচ বছর পর শাহরুখ-কাজলের রসায়ন কেমন জমবে পরদায়? রোহিত শেট্টি চেষ্টার কসুর করেননি রাজ-মীরার রোম্যান্স জমিয়ে দিতে। ‘গেরুয়া’ ভক্তদের মনের গৈরিকীকরণ করে দিয়েছে। ‘জনম জনম’ ব্যাপারটা চলবে আর কী! দু’জনে যতবার একসঙ্গে স্ক্রিনে এসেছেন, দর্শক অধীর হয়েছেন। শাহরুখ-কাজলের রোম্যান্সের পাশাপাশি টক্করও কিন্তু আছে। ওটা বাড়তি পাওনা।
দিলওয়ালে শাহরুখ: খানেদের ছবি মানে শুধু তারাই থাকবেন পরদা জুড়ে। বাকিরা সব অতিথি অ্যাপিয়ারেন্সে। ব্যতিক্রম শাহরুখ। কাজল তো বটেই, বরুণ ধবন-কৃতী শ্যাননদের সমান জায়গা দিয়েছেন তিনি। তাতে ছবি হয়তো কিছু জায়গায় ঝুলেছে, কিন্তু স্ক্রিন কেড়ে নেওয়ার দোষের ভাগীদার হবেন না শাহরুখ।
কালী কা কামাল : রাজের উল্টো অবতার কালী! দর্শক শাহরুখের এমন নামে অভ্যস্ত না হতে পারেন, মেজাজের সঙ্গে পরিচিত তো বটেই। কালী পরদায় আসা মানেই বিধ্বংসী ব্যাপারস্যাপার। রোহিতের ছবির অ্যাকশন নিয়ে কোনও কথা হবে না! এখানেও গাড়ি উড়েছে। সেটা দেখে দর্শক তালি দিতে বাধ্য। রাজ বা কালী, যে অবতারই শাহরুখ থাকুন না কেন হিরোইজমের চূড়ান্ত পর্যায় সেটাই।
রোহিতের ব্যালান্সিং : যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, রোহিত সেটা রেখেছেন। মসালা ছবিতে তাঁর মতো বিনোদনের খোরাক দিতে পারেন, বলিউডে এমন কম পরিচালকই আছেন। অ্যাকশন-কমেডি-ড্রামা-আবেগের ককটেল ‘দিলওয়ালে’। যেটা পছন্দ, সেটায় মজে যান। গোটাচারেক অ্যাকশন দৃশ্য আছে। সবক’টাই দারুণ। বুলগেরিয়াতে যে চেজিং সিকোয়েন্সটা দেখিয়েছেন রোহিত, সেটা ছবির অন্যতম সেরা পাওনা। ওখানেই ছবির অন্যতম টুইস্টও মজুত।
বুকিং কী বলছে : মাল্টিপ্লেক্সে আগাম বুকিংয়ে অনেকটাই এগিয়ে ‘দিলওয়ালে’। কলকাতায় প্রথম দিনেই প্রায় ৮০ শতাংশ বুকিং ছিল। আইনক্স’এর পূর্বাঞ্চলের অধিকর্তা শুভাশিস গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘গোটা পূর্বাঞ্চলেই ‘দিলওয়ালে’র বুকিং খুব ভাল। আমরা নিশ্চিত, ছবি ভাল ব্যবসা করবে। ‘দিলওয়ালে’র তুলনায় ‘বাজিরাও মস্তানি’ নিয়ে আগ্রহ অনেকটাই কম।’’ কলকাতার ফোরাম বা কোয়েস্ট’এ যেমন প্রথম দিনেই ৯০ শতাংশের উপর টিকিট বিক্রি হয়েছে। লিলুয়া, বর্ধমানের মতো জায়গাতেও ‘দিলওয়ালে’র দখলদারি।
বাদশার ব্র্যান্ডিং : প্রতিদ্বন্দ্বীকে স্রেফ হাঁকিয়ে দেওয়া যাকে বলে, ঠিক সেটাই করলেন শাহরুখ। ১৮ ডিসেম্বর ‘বাজিরাও মস্তানি’ আর ‘দিলওয়ালে’র সম্মুখসমর কেমন হবে, তা নিয়ে আগ্রহ ছিল গোটা ভারতের। কিন্তু কোথায় কী? বাজিরাওয়ের মাস্তানি দেখতে পাওয়ার আগেই যেন নিভে গেল! আলোকবৃত্তের সামনে একজনই। মিডিয়ার দাপাদাপি, দর্শকের আগ্রহ শুধু শাহরুখকে কেন্দ্র করে। মগজাস্ত্রে তাকে পাল্লা দেওয়ার জন্য কোনও ফেলু মিত্তিরও নেই!-এবেলা
১৯ ডিসেম্বর,২০১৫/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস