সেই ভিলেনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
বিনোদন ডেস্ক : নব্বইয়ের দশকে একমাত্র টেলিভিশন বিটিভিতে রাত আটটার বাংলা সংবাদের পরপরই শুরু হতো জনপ্রিয় ধারাবাহিক নাটক ‘রূপনগর’। এই নাটকের উল্লেখযোগ্য চরিত্রে পাত্র-পাত্রীর পরিবর্তে দর্শকদের আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দুতে ছিলেন ভিলেন হেলাল। তার সেই সংলাপ, ‘ছি.. ছি.. ছি.., তুমি এত খারাপ!’ এখনো অনেককে বলতে শোনা যায়। ‘রূপনগর’ নাটকের সেই হেলালই অভিনয়ের যুবরাজ খ্যাত খালেদ খান। তিনি ২০১৩ সালের ২০ ডিসেম্বর মাত্র ৫৫ বছর বয়সে পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। তার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ।
১৯৫৮ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলে জন্মগ্রহণ করেন করেন অভিনেতা খালেদ খান। শিক্ষাজীবনে ১৯৮১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিকম এবং ১৯৮৩ সালে ফিন্যান্স বিষয়ে এমকম সম্পন্ন করেন খালেদ খান। তারপর টানা দীর্ঘ ২৮ বছর অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। তবে নব্বই দশকের শুরুতে টিভি নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে দেশ ব্যাপী পরিচিতি লাভ করেন।
১৯৭৮ সালে নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের যোগদানের মাধ্যমে অভিনয়ের জগতে পর্দাপন করেন খালেদ খান। মঞ্চে তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘দেওয়ান গাজীর কিসসা’, ‘অচলায়তন’, ‘নুরালদীনের সারা জীবন’, ‘ঈর্ষা’, ‘দর্পণ’, ‘গ্যালিলিও’ ও ‘রক্তকরবী’। ‘ঈর্ষা’ নাটকে অভিনয়ের জন্য তিনি কলকাতা থেকেও ডাক পান। নাটকে সফলভাবে পথচলার পর পরিচালনাও শুরু করেন খালেদ খান।
অন্যদিকে তার পরিচালনায় উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে রবীন্দ্রনাথের ‘মুক্তধারা’, ‘পুতুল খেলা’, ‘কালসন্ধ্যায়’, ‘মাস্টার বিল্ডার’, ‘ক্ষুদিত পাষাণ’সহ বেশ কিছু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় আলী যাকের, সারা যাকের, আতাউর রহমান, ফেরদৌসী মজুমদারদের অভিনয় দেখে অনুপ্রাণিত হতেন খালেদ খান।
১৯৮১ সাল থেকে বিটিভির মাধ্যমে টিভি নাটকে অভিষেক হয় তার। তার অভিনীত প্রথম টিভি নাটক হলো ‘সিঁড়িঘর’। এরপর অসংখ্য টিভি নাটকে অভিনয় করে দর্শক হৃদয় জয় করেছেন। একাধিক নাটকে তার বেশ কিছু সংলাপও জনপ্রিয়তা পায়। বিশেষ করে নব্বই দশকের নাটক ‘রূপনগর’ এ তার ‘ছিঃ ছিঃ, তুমি এত খারাপ’ শীর্ষক সংলাপটি চলে আসে মানুষের মুখে মুখে।
তার অভিনীত জনপ্রিয় নাটকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘এইসব দিনরাত্রী’, ‘কোন কাননের ফুল’, ‘রূপনগর’, ‘মফস্বল সংবাদ’, ‘অথেলো এবং অথেলো’, ‘দমন’, ‘লোহার চুড়ি’, ‘সকাল সন্ধ্যা’সহ বেশ কিছু। অন্যদিকে অভিনয়ের পাশাপাশি আবৃত্তি চর্চার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন খালেদ খান। ১৯৯৬ সালে তার কণ্ঠে কিছু আবৃত্তি রেকর্ড করা হয়েছিল। কিন্তু তার জীবদ্দশায় তা আর প্রকাশ করা সম্ভব হয়নি। তাই খালেদ খানের প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে ধারণকৃত সেই আবৃত্তিগুলোই অ্যালবাম আকাশে প্রকাশ করেন তার গুনগ্রাহীরা। কিন্তু তার দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে তেমন কোন আয়োজন নেই।
২০ ডিসেম্বর ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/সৈকত/এমএস
�