মাত্র একদিন টিকেছিল মিঠুনের সেই বিয়েটি!
বিনোদন ডেস্ক : শ্রীদেবী-মিঠুন প্রেম কাহিনি বলিউডের অন্যতম সাড়া জাগানো একটি ঘটনা। তাদের প্রেম শুরু হয় রাকেশ রোশান পরিচালিত ১৯৮৪ সালে মুক্তি পাওয়া ‘জাগ উঠা ইনসান’ নামের এই ছবির সেট থেকেই। আর এ প্রেম ছিল আশির দশকে ফিল্মি ম্যাগাজিনগুলোতে গুঞ্জনে সরগরম।
কিন্তু মিঠুন তখন ছিলেন বিবাহিত। ১৯৭৯ সালে তিনি বিয়ে করেন অভিনেত্রী যোগিতাবালিকে, যিনি ছিলেন মিঠুনের চেয়ে বয়সে বড় ও সে সময়ে মোটামুটি প্রতিষ্ঠিত। যোগিতাবালির প্রথম স্বামী ছিলেন প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী কিশোর কুমার। কিশোর ও যোগিতার বিয়ে তিন বছর টিকেছিল।
মিঠুনের মুম্বাই জীবনের প্রথম দিকে যোগিতাবালি তাকে চলচ্চিত্রভুবনে পরিচিতি পেতে সহায়তা করেন। ফলে মিঠুনের অশেষ কৃতজ্ঞতা ছিল যোগিতাবালির প্রতি।
১৯৮৪ সালে শ্রীদেবীর সঙ্গে যখন মিঠুনের প্রেম জমজমাট, ঠিক তখনই বাঁধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়ায় মিঠুন ও যোগিতাবালি দাম্পত্য জীবন।
এদিকে শ্রীদেবী-মিঠুন জুটির ‘ওয়াতান কি রাখোয়ালে’ মুক্তি পায় ১৯৮৭ সালে। সেসময় দুজনের প্রেম চললেও দৃশ্যপটে বনি কাপুরের আবির্ভাব ততদিনে ঘটে গেছে। ১৯৮৪ সালেই ‘মিস্টার ইন্ডিয়া’ ছবিতে প্রযোজক বনি কাপুরের সঙ্গে যোগাযোগ ঘটে শ্রীদেবীর। অসামান্যা সুন্দরী ও দুর্দান্ত অভিনেত্রী শ্রীদেবীর প্রতি আকৃষ্ট হন বিবাহিত বনি কাপুর। কিন্তু মিঠুনের প্রেমে মগ্ন থাকায় বনি কাপুরের আহ্বানে তখন সাড়া দেননি শ্রীদেবী। যদিও বনি কাপুরের প্রতিষ্ঠানের ব্যানারে অনিল কাপুরের বিপরীতে তার ছবি মুক্তি পেতে থাকে এবং অনিল-শ্রীদেবী জুটি দারুণ জনপ্রিয়তা পায়।
বনি কাপুর নানাভাবে শ্রীদেবীর মন যোগাতে ব্যস্ত হন। কিন্তু শ্রীদেবী মিঠুনের সঙ্গেই সম্পর্ক ধরে রাখেন। সেসময় বনির প্রতি ঈর্ষা দেখা দেয় মিঠুনের মনে। তাকে শান্ত করতে বনিকে ‘ভাইযের মতো’ বলে প্রচারেছিলেন করেন শ্রী। তিনি বনির হাতে রাখিও পরিয়ে দেন। এই রাখি পরানোর ঘটনাটি বনির প্রথম স্ত্রী মোনা কাপুরও এক সাক্ষাৎকারে উল্লেখ করেছেন। তারপরও শেষরক্ষা হয়নি।
শ্রীদেবী চেয়েছিলেন মিঠুন তার স্ত্রীকে ত্যাগ করে তাকে বিয়ে করুক। কিন্তু এক পর্যায়ে তিনি বুঝতে পারেন শ্রীদেবীকে মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসলেও যোগিতাবালিকে আঘাত করা সম্ভব নয় মিঠুনের পক্ষে। কারণ যোগিতা তার সন্তানের মা এবং দুঃসময়ের সহযাত্রী।
এই অভিমান থেকেই জন্ম নেয় বিরোধ। আশির দশকের শেষে মিঠুন-শ্রীদেবীর প্রেমে ভাঙনের সুর বাজে। এই জুটি চারটি ছবিতে কাজ করেছিলেন। ‘জাগ উঠা ইনসান’, ‘ওয়াতান কি রাখোওয়ালে’, ‘ওয়াক্ত কি আওয়াজ’ এবং ‘গুরু’।
মিঠুনের সঙ্গে প্রেমের বিষয়ে মিডিয়ার সামনে বরাবরই নীরবতা অবলম্বন করেছেন শ্রীদেবী। তবে মিঠুন নব্বইয়ের দশকে একবার পশ্চিমবঙ্গের একটি ফিল্মি ম্যাগাজিনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তাদের প্রেম সম্পর্কে আভাস দিয়েছিলেন। নাম প্রকাশ না করে মিঠুন বলেন তিনি এক সুন্দরী নারীকে অনেক ভালোবাসতেন। তারা দুজনে বিয়েও করেন। কিন্তু তাদের বিয়ের স্থায়ীত্ব ছিল মাত্র একদিন। বিয়ের একদিন পরে তিনি ডিভোর্সের চিঠি পান। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন প্রচণ্ড মানসিক চাপ ও ভুল করছে এই আশংকা থেকে মেয়েটি তাকে ত্যাগ করেছিল। মিঠুন সেই প্রেমিকার প্রতি কোনো অভিযোগ করেননি কখনও। কারণ তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তাদের বিচ্ছেদ ছিল অনিবার্য। মিঠুনের এই সাক্ষাৎকার থেকে অনেকেই ধারণা করেন যে তার সেই প্রেমিকা শ্রীদেবী ছাড়া আর কেউ নন।
০৮ জানুয়ারি, ২০১৫/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন
�