মঙ্গলবার, ০৭ জুন, ২০২২, ০২:৩৫:২৮

বন্ধু শাহরুখের সঙ্গে ঘটা এক মজার ঘটনা জুহির!

বন্ধু শাহরুখের সঙ্গে ঘটা এক মজার ঘটনা জুহির!

বিনোদন ডেস্ক : শাহরুখ খান ও কাজলের বন্ধুত্বের গল্প তো অনেক শুনি। কিন্তু শাহরুখ খান ও জুহি চাওলার বন্ধুত্বের গল্পও জানা উচিত আমাদের। তাঁদের বন্ধুত্বের রসায়ন আমাদের অনেককেই প্রভাবিত করতে পারে। শাহরুখের মতো বন্ধু পাওয়া সত্যিই ভাগ্যের ব্যাপার। জুহি চাওলা অনেকবারই তাঁদের বন্ধুত্বের গল্প শেয়ার করেছেন।

শাহরুখ খানের বন্ধুত্বের কথা উঠলে প্রায়ই সলমন খানের নাম নেওয়া হয়। তবে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা থেকে এটা অন্তত বোঝা গেল যে, জুহি চাওলার সঙ্গেও এই অভিনেতার বন্ধুত্ব গাঢ়। তা বেশ স্পষ্ট। আরিয়ান খানের জন্য গ্যারান্টার হতেও দেখা যায় জুহিকে।

শাহরুখের সঙ্গে জুহির বন্ধুত্ব, সলমন ও SRK-এর মতো জনপ্রিয় নাও হতে পারে, তবে তাঁদের বন্ধুত্ব কম কিছু নয়। তাঁদের মধ্যে বিশ্বাস এবং দৃঢ় বোঝাপড়াই বুঝিয়ে দেয় বন্ধুত্বের আসল অর্থ কী। 

জুহি চাওলা একটি শো চলাকালীন তাঁর বন্ধু শাহরুখের সঙ্গে একটি মজার মুহূর্ত শেয়ার করেছিলেন। সম্পর্কিত একটি মজার উপাখ্যান শেয়ার করেছেন। বন্ধুর একটা বদ অভ্যাস ঠাট্টা করে সবার সামনেই বলে দেন। জুহি বলেছিলেন যে, তাঁর পার্টিতে তিনি অবশ্যই শাহরুখকে আমন্ত্রণ জানান।

একবার এমনই একটি পার্টিতে শাহরুখকে আমন্ত্রণ জানান। তিনি জানিয়েছিলেন যে, আসতে দেরি হতে পারে। জুহি শাহরুখকে ১১টার মধ্যে আসতে বলেন। তবে, পুরো পার্টি শেষ হয়ে গেলেও কিং খান সেখানে পৌঁছোননি। সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। রাত আড়াইটেয় শাহরুখ বন্ধুর বাড়ি পৌঁছোন।

শাহরুখ খান যে নির্ধারিত সময়ের পরেই পৌঁছোন। তাঁর এই গল্প ইন্ডাস্ট্রির সবাই জানেন। তবে জুহি যেভাবে বিনা দ্বিধায় তাঁর এই খারাপ অভ্যাসের গল্প করেছিলেন, তার থেকে বন্ধুত্বের ঝলকও পাওয়া যায়। একজন বন্ধু অপরজনের পাশে থাকে, এই কথা ঠিকই। কিন্তু মজা করার সময় তাঁর লেগ পুলিং করার সুযোগ মিস করেন না। এই টক-মিষ্টি বন্ধনই বন্ধুত্বের প্রাণ।

জুহি একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন যে, তিনি একসময় ব্যাক টু ব্যাক হিট ছবি করছিলেন। তাঁর একটু একটু করে অহংকার হতে শুরু করেছিল। তিনি ভেবেছিলেন যে, তিনিই সবকিছু। ‘ডর’ ছবির সেটে এই মনোভাবের কারণে সবার সামনেই মায়ের সঙ্গে তাঁর কথা কাটাকাটি হয়।

পরে শাহরুখ অভিনেত্রীকে বাধা দিয়ে বলেছিলেন যে, প্রত্যেকেরই তাঁদের বাবা ও মায়ের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা উচিত। জুহি জানান, অভিনেতার এই কথাগুলো আজ পর্যন্ত তাঁর মনে আছে।

শুধুই সুখে-দুঃখে পাশে দাঁড়ানো নয়, বন্ধুকে অন্যায় করতে দেখে তাঁকে বাধা দেওয়াও বন্ধুর দায়িত্ব। বেশ কয়েকটি গবেষণায় এরকম তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। 

গবেষণায় দেখা গিয়েছে, তরুণ প্রজন্ম অভিভাবকদের চেয়ে তাঁদের সমবয়সীদের বা বন্ধুদের কথায় বেশি প্রভাবিত হয়। এমন পরিস্থিতিতে কারও জীবনে একজন ভালো বন্ধু প্রয়োজন। যিনি এভাবেই ভুল শুধরে দিতে পারেন।

জুহি একবার খুব মিষ্টি কথায় শাহরুখের সঙ্গে তাঁর বন্ধুত্বের বর্ণনা দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আমরা ওঠা-পড়া দুটোই দেখেছি। আমরা প্রায় একসঙ্গে আমাদের কেরিয়ার শুরু করেছি। 

তিনি আমার কাছ থেকে প্রায় ২-৩ বছর পর ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে আসেন। যাইহোক, এর পরে আমরা সহ-অভিনেতা হিসেবে কাজ করেছি। তারপরে প্রযোজনার কাজে নেমেছি, যেখানে আমরা ব্যর্থ হচ্ছিলাম।

ব্যর্থতার অনুভূতি মেনে নেওয়া সহজ নয়। যখন সবকিছু ঠিকঠাক চলছে, তখন সবাই ভালো থাকেন। পাশে থাকেন। কিন্তু আমরা শাহরুখ ও জুহি একসঙ্গে ব্যর্থতার মুখোমুখি হয়েছিলেন এবং তা থেকে বেরিয়ে এসেছিলেন। 

জুহি বলেন, “আমাদের জীবন একটি রোলার-কোস্টার রাইডের মতো। আমরা আমাদের জীবনে প্রায় সব ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি। এমন পরিস্থিতিতে কিছু মানুষ আপনার সঙ্গে থাকে এবং আপনার ভরসার মানুষ হয়ে যায়। শাহরুখও আমার কাছে এমন একজন মানুষ।”

যখন দুই বন্ধু একসঙ্গে জীবনের প্রতিটি অসুবিধার মুখোমুখি হয়, তখন তাঁদের মধ্যে বন্ধনও মজবুত হয়ে যায়। কোনও ব্যক্তি বা পরিস্থিতি কখনও সেই বন্ধন ভাঙতে পারেন না। দুঃসময়ে যিনি আপনার পাশে থেকেছেন, তিনি কখনও আপনাকে ছেড়ে যাবেন না।

শাহরুখ এবং জুহির মধ্যে সুন্দর বন্ধুত্ব দেখে মানুষ তা নিয়ে মন্তব্য করতে শুরু করেন। এমনকী তাঁদের মধ্য়ে সম্পর্ক তৈরি হয়েছে, এরকম গসিপও হতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে জুহির সঙ্গে ছবিতে সাইন করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন অভিনেতা।

ছেলে-মেয়ের বন্ধুত্ব নিয়ে সবসময়ই প্রশ্ন ওঠে। সেই সময়ে বন্ধুত্বের কথা ভাবতে হবে। কঠিন পদক্ষেপ করতে হবে। শাহরুখও তাঁদের বন্ধুত্ব বাঁচানোর সিদ্ধান্ত নেন। বড়পর্দায় একসঙ্গে কাজ করা বন্ধ করেন। তবে জুহির সঙ্গে বন্ধুত্বে এর প্রভাব পড়তে দেননি তিনি। সূত্র : এই সময়

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে