সোমবার, ১৮ জানুয়ারী, ২০১৬, ১১:৩৩:৩১

সালমানের যত প্রেম কাহিনি

সালমানের যত প্রেম কাহিনি

বিনোদন ডেস্ক : বলিউড হিরো সালমান খান ৫০ পেরিয়ে এখনো চিরতরুণ। পঞ্চাশ বছর অতিক্রম করা বলিউড নায়কদের মধ্যে এক মাত্র ব্যাচেলর নায়ক তিনিই। তবে বলিউডের মোস্ট এলিজিবল ব্যাচেলরের এই বয়সেও প্রেমকাহিনীতে ভাঁটা পড়েনি। ভালবাসার বাঁধনে ধরা দিতে তিনি সবসময়েই রাজি। তবে ঠিক ক’জন প্রেমিকা এসেছেন তার জীবনে? সুপারস্টার সালমানের ব্যক্তিগত জীবনের ‘অধুরি প্রেমকহানি’-র সন্ধান করে সেই বিষয়েই আজ আপনাদের জানাবো।

নীড় হারা পাখির মতো একটি সঠিক নীড়ের সন্ধে একের পর এক সম্পর্কে জড়িয়েছেন কিন্তু কোথাও সেই আশ্রয় খুজে পারেননি সালমান।১৯৮৮ সালে ‘বিবি হো তো অ্যায়সি’ ছবি দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন তিনি। পরের বছরই রিলিজ করে ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’। এরপরে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। ক্যরিয়ারের দ্রুত গতির সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে চলেছে সম্পর্কের টানাপোড়েন। কখনও ছেদ টেনেছেন বন্ধুত্বের আবহে আবার কখনও বা যবনিকা পতন ঘটেছে চরম তিক্ততার মধ্যে দিয়ে। শুধুমাত্র প্রেমের মাঝেই কি বাঁচতে চান এই অভিনেতা? এখনও কি শেষ হয়নি তার সঠিক নীড়ের অন্বেষণ? ২০১১-য় নিজেই জানিয়েছিলেন, স্নায়ুসমস্যায় ভুগছেন। জানা যায়, আত্মহত্যাপ্রবণ মানসিকতা থেকে বাঁচতে নিয়মিত চিকিৎসা করিয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ারে চূড়ান্ত সাফল্য দেখার পরও এই মানসিক অবসাদ কি কারণে? সলমনের ব্যক্তিগত জীবন সবসময়েই থেকে গিয়েছে ভক্তদের অালোচনার মাঝে।

সঙ্গীতা বিজলানি : বাবা সেলিম খানের বদৌলতে ছোট থেকেই গ্ল্যামার দুনিয়ার সঙ্গে ওঠা-বসা সালমানের। দ্বিতীয় বর্ষেই কলেজের পড়াশোনায় ইতি টেনে ইন্ডাস্ট্রিতে পা রেখেছিলেন তিনি। চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে সম্পর্কের শুরুটাও ওই একই বছরে। প্রেমিকা ১৯৮০ সালের মিস ইন্ডিয়া সঙ্গীতা বিজলানি। পাঁচ বছরের বড় সালমানের থেকে। শোনা যায়, ছোট থেকেই বিউটি কনটেস্টের জয়ীদের প্রতি সালমানের দুর্বলতা ছিল। তাই সঙ্গীতার সঙ্গে প্রেমপর্ব শুরু থেকেই জমে গিয়েছিল। খুব বেশিদিন টেকেনি এ সম্পর্ক। কয়েক বছরের মধ্যেই তৎকালীন ক্রিকেট তারকা আজহারউদ্দিনের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ান সঙ্গীতা এবং ১৯৯৬ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। কিন্তু সম্পর্কটা না-থাকলেও সালমানের সঙ্গে বন্ধুত্বটা রয়েই গিয়েছে। যোগসূত্র শুধু দু’জনের মধ্যে নয়, দুই পরিবারের মধ্যেও আছে।

সোমি আলি : অভিনেত্রী সোমি আলির সঙ্গে সালমানের দেখা হয় যখন সোমির বয়স ৯ বছর। আট বছর পরে১৯৯৩ সাল থেকে সম্পর্কে জড়ান তারা। গভীরভাবে একে অপরকে ভালবাসলেও পরবর্তীকালে তাদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে। শোনা যায়, সালমানের অতিরিক্ত খারাপ ব্যবহারের কারণেই সোমি এই সম্পর্ক ভাঙার সিদ্ধান্ত নেন। তবে সালমানের সঙ্গে দূরত্ব মন থেকে মেনে নিতে পারেননি সোমি। এর পরের বছরই বিদেশ চলে যান এই অভিনেত্রী। বলিউডের ঝাঁ-চকচকে জীবনকে বিদায় জানিয়ে সোমি পরবাসী হন শুধুমাত্র সালমানের জন্যই গুঞ্জন এখনও সক্রিয়।

ঐশ্বরিয়া রাই : ‘ম্যায়নে প্যায়ার কিয়া’-র পরে আর ঘুরে তাকাতে হয়নি সালমান খানকে। সেই সময়ে, ব্যাকগ্রাউন্ড একটু ভাল থাকলে সুযোগ পাওয়াটা সহজ ছিল। এখনকার মতো বড় বাবার ছেলে বলে সমালোচনার ঝড় সামলাতে হত না। উপরি পাওনা ছিল সালমানের দুরন্ত ফিজিক এবং হিরোইজম। মাধুরী, করিশ্মার সঙ্গে জুটি বেঁধে একের পর এক তখন হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন সালমান। তাই ক্যারিয়ারের শীর্ষে ওঠার পথে পুরনো সম্পর্ক ভুলতে খুব বেশি সময় নেননি তিনি। ‘হাম দিল দে চুকে সনম’-এ একসঙ্গে কাজ করতে গিয়ে কাছাকাছি আসেন ঐশ্বরিয়া রাই এবং সালমান খান। বাকিটা রূপকথার গল্পের মতো। ঐশ্বরিয়া ও সালমানের দুর্দান্ত রসায়ন ছাপ ফেলে ছবির পরতে পরতে। সুপারহিট হয় ছবিটি। কিন্তু পরিণতি পায়নি এই সম্পর্কটিও। দুজনের রিলেশনশিপ খবরের শিরোনামে চলে আসে যখন ঐশ্বরিয়া ব্রেক-আপের সিদ্ধান্ত নেন। সম্পর্ক কতটা গভীর ছিল, কি কারণে ঐশ্বরিয়া সরে এলেন, এসব তেমনটা স্পষ্ট নয়। কিন্তু এই সম্পর্কটি টিকিয়ে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়েছিলেন সালমান। এই অভিনেতার অসহায়তার ছবি দেখেছে গোটা বলিউড। একাধিকবার চেষ্টা করেও হার মেনেছিলেন সালমান। শেষে বাবা সেলিম খান নিজে গিয়ে কথা বলেন নায়িকার সঙ্গে। কিন্তু ঐশ্বরিয়ারও ছিল ধনুক ভাঙা পণ। কোনওভাবেই এই মানুষটিকে নিজের জীবনে আর চাননি অভিনেত্রী। ২০০৭-এ বচ্চনপুত্র অভিষেকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ঐশ্বরিয়া।

ক্যাটরিনা কাইফ : ঐশ্বর্যার পরে বলিউডি সুন্দরী নিয়ে হয়তো ইনসিকিওরড ছিলেন সালমান। হয়তো ভাবছিলেন টিপিক্যাল ভারতীয় মানসিকতা তার সঙ্গে পা মেলাতে পারবে না। তাই বেছে নেন বিদেশি সুন্দরী ক্যাটরিনা কাইফকে। ভারতীয় বংশোদ্ভূত হলেও বিদেশেই বড় হয়েছেন ক্যাটরিনা। মুম্বাই ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যখন এলেন, তখন একটি হিন্দি বর্ণও বলতে পারতেন না তিনি। ক্যাটরিনার ডুবন্ত জাহাজের হাল ধরেন সালমান। শূন্য থেকে এক নম্বর নায়িকার আসনে এই অভিনেত্রী শুধুমাত্র সালমানের জন্য আসতে পেরেছেন। সাফল্যে চূড়ায় পৌঁছে জীবন সঙ্গী হিসেবে রনবীর কাপুরকে বেছে নেন ক্যাটরিনা। এমনকি আলাদা ফ্ল্যাট কিনে সংসার জীবনও শুরু করেণ দুজনে। কিন্তু বলিউডের অ্যাগ্রেসিভ হিরো, এক সময়ে প্রেমিকাকে পাওয়ার জন্য যিনি অভিনেতাদের সেটে গিয়ে বসে ছিলেন, সেই সালমান এবার একেবারেই এখন শান্ত ভদ্র হয়ে গিয়েছেন। ক্যাটের সঙ্গে বিচ্ছেদের পরেও তার দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। নিজের বড় বাজেটের ছবিতে কাস্টও করেছেন এই অভিনেত্রীকে।

ক্লদিয়া সিয়েসলা : ক্যাটরিনার পরে সালমানকে সেভাবে আর সিরিয়াস ইনভলভমেন্টে দেখতে পায়নি মিডিয়া। তবে তার মধ্যেই আর এক বিদেশি অভিনেত্রীর সঙ্গে বেশ ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। পোল-জার্মান মডেল ক্লদিয়াকে নিয়ে তুলনামূলকভাবেএকটু বেশিই সাহসী ছিলেন সালমান। পরিবার থেকে শুরু করে মিডিয়া—কারোর তোয়াক্কা করেননি তিনি। একই সঙ্গে  দেশে-বিদেশে সময় কাটাচ্ছিলেন তারা। পরিবারের সঙ্গে ক্লদিয়ার সখ্য বাড়তে থাকে। বিয়ের কথাও হাওয়ায় ভাসতে শুরু করে। কিন্তু বিচ্ছেদটা রহস্যেই থেকে গেল। শেষ পর্যন্ত জার্মানে ফিরে যান ক্লদিয়া।

লুলিয়া ভানতুর : এরপরে সেই অর্থে আর কোনও সম্পর্কে জড়াননি সালমান। কিন্তু একাধিক অভিনেত্রীর সঙ্গে নাম জড়িয়েছে তার। অন্তরঙ্গতা তৈরি হয়েছে বা হয়ে চলেছে অনেকের সঙ্গে। তবে বিয়ের খবর বা সম্পর্কের টানাপোড়েন থেকে নিজেকে সযত্নে সরিয়ে নিয়েছেন সালমান। যেমন নিন্দুকেরা বলে থাকেন, সালমান নাকি নতুন নায়িকাদের মধ্যে প্রাক্তন প্রেমিকাদের খুঁজে বেড়ান। তার প্রমাণ, স্নেহা উল্লাল বা জেরিন খান। আবার, যখন যাকে ভাল লাগে তাকেই নাকি নিজের ছবির নায়িকা করে দেন। ডেইজি শাহ বা মাহেক চাহলের ক্ষেত্রে অনেকাংশেই সঠিক এই ধারণা। আবার ‘কিক’-এর নায়িকা জ্যাকলিনের উপর ইমপ্রেসড হয়ে হঠাৎ করে ফ্ল্যাট গিফট করে বসলেন। তবে সবটাই সাময়িক। গভীরে যেতে হয়তো ভয় পান। কিন্তু আফটার অল, তিনি তো সালমান খান। বোনের বিয়েতে, রুমানিয়ান অভিনেত্রী লুলিয়া ভানতুরকে আপাতত নিজের গার্লফ্রেন্ড বলে পরিচয় দিয়েছেন সালমান। উইকএন্ডে নিজের ফার্মহাউসেও মাঝ মধ্যেই নিয়ে যান লুলিয়াকে। সে ছবিও প্রকাশ্য পেয়েছে মিডিয়ায়। তাই, এখনো বলাচলে পিকচার আভি বাকি হ্যায়...
১৮ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/জহির/মো:জই

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে