মঙ্গলবার, ০৫ জুলাই, ২০২২, ০৪:৪৮:০০

এই পাঁচটি ভুল না করলে আজও সাফল্যের চূড়ায় থাকতেন গোবিন্দ

এই পাঁচটি ভুল না করলে আজও সাফল্যের চূড়ায় থাকতেন গোবিন্দ

বিনোদন ডেস্ক: একের পর এক হিট ছবি শুধু দর্শকদের উপহারই দিয়ে যাননি, নব্বইয়ের দশকে বলিউডে এক রকম আধিপত্য স্থাপন করেছিলেন অভিনেতা গোবিন্দ অরুণ আহুজা ওরফে গোবিন্দ।

তবে, ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের কারণে গোবিন্দ এমন কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, যে ছবিগুলি এখনও বক্স অফিসে সুপারহিট ছবির তালিকায় বিরাজ করে। পাঁচটি সিনেমান প্রস্তাব পিরিয়েছিলেন, যার সবকটিই সুপারহিট ছিল। এই পাঁচটি ভুল না করলে আজও সাফল্যের চূড়ায় থাকতেন গোবিন্দ।

গোবিন্দর কর্মজীবনের শুরু ১৯৮৬ সালে। তার তিন বছর পর পরিচালক যশ চোপড়ার ‘চাঁদনী’ ছবি মুক্তি পায়। তবে, পরিচালকের প্রথম পছন্দ ঋষি কাপূর ছিলেন না। রোহিত গুপ্তর চরিত্রে অভিনয় করার জন্য তিনি বেছেছিলেন গোবিন্দকে।

সিনেমার গল্প শুনে পছন্দও হয় অভিনেতার কিন্তু গল্প অনুযায়ী রোহিত এক জন প্রতিবন্ধী ছিলেন। ছবির শ্যুটিং করার সময় চরিত্রের খাতিরে তাকে বহু ক্ষণ হুইলচেয়ারে বসে থাকতে হত। এমন চরিত্র গঠন মেনে নিতে পারেননি গোবিন্দ। তাই তিনি পরিচালকের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। 

পরে গোবিন্দর পরিবর্তে ঋষি রোহিতের চরিত্রে অভিনয় করেন। সিনেমাটি বক্স অফিসে বিপুল সাফল্য পায়। ১৯৯৮ সালে প্রেম চোপড়া, মনীষা কৈরালা, শক্তি কাপূর, রাজ বব্বরের সঙ্গে ‘মহারাজা’ ছবিতে অভিনয় করেছিলেন গোবিন্দ। কিন্তু সিনেমাটি ফ্লপ করে। 

ঠিক সেই সময়েই ‘গদর: এক প্রেম কথা’ ছবির মূল গল্প লেখা শেষের পথে। পরিচালক অনীল শর্মা চেয়েছিলেন, গোবিন্দই ‘তারা সিং’-এর চরিত্রে অভিনয় করুন। এমনকি, তার কাছে অভিনয়ের প্রস্তাব নিয়েও গিয়েছিলেন অনীল। কিন্তু সিনেমাতে নায়কের সংলাপে প্রচুর অশালীন শব্দের ব্যবহার করা হয়েছিল।

এক সাক্ষাৎকারে অভিনেতা এই প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘‘আমার মা সঙ্গীতশিল্পী ছিলেন। তার শিক্ষাতেই আমি বড় হয়ে উঠেছি।’’ এ ধরনের কোনও খারাপ শব্দ ব্যবহার করলে সেই শিক্ষাকে অসম্মান করা হবে বলে গোবিন্দ অভিনয় করতে রাজি হননি। 

পরে অবশ্য সানি দেওল সেই চরিত্রে নিপুণ দক্ষতার সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন। এই ছবির দ্বিতীয় পর্বেও সানি দেওল এবং আমিশাকে অভিনয় করতে দেখা যাবে। এই ঘটনার মাত্র এক বছর পর সুভাষ ঘাই পরিচালিত ‘তাল’ ছবিটি মুক্তি পায়। 

বিক্রান্ত কাপূরের চরিত্রের জন্য প্রথমে গোবিন্দকেই বাছা হয়েছিল। গল্প শুনে পছন্দও হয় অভিনেতার। কিন্তু সিনেমার নামকরণ এ রকম কেন, এই নিয়ে গোবিন্দ প্রশ্ন তোলেন। তার এই আচরণে পরিচালক রুষ্ট হন। তাই তার পরিবর্তে অনিল কাপূর ওই চরিত্রে অভিনয় করেন। 

সিনেমাটি শুধু বক্স অফিসে হিটই হয়নি, বরং বহু আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে এই ছবি দেখানো হয়েছিল। ২০০২ সালে মুক্তি পাওয়া সঞ্জয় লীলা ভন্সালী পরিচালিত ‘দেবদাস’ ছবিটি দর্শকমহলে বিপুল সাড়া ফেলে। বক্স অফিস থেকেও মোটা অঙ্কের টাকা উপার্জন করেছিল এই ছবিটি। 

শাহরুখ, ঐশ্বরিয়া, মাধুরীর চরিত্র ছাড়াও এই সিনেমার প্রতিটি পার্শ্বচরিত্রই গুরুত্বপূর্ণ। শাহরুখের বন্ধু ‘চুন্নীলাল’-এর ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল জ্যাকি শ্রফকে। কিন্তু প্রথমে গোবিন্দকে এই চরিত্রে অভিনয় করার জন্য প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। 

গোবিন্দ তখন কেরিয়ারের তুঙ্গে। এত সফল হয়েও পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করতে হবে, তা কিছুতেই মানতে পারছিলেন না অভিনেতা। তিনি জানান, যদি শাহরুখ নিজে থেকে তাকে ফোন করে অনুরোধ করেন, তবেই তিনি এই প্রস্তাবে রাজি হবেন। কিন্তু বলিউডের ‘কিং খান’ তাকে ফোন করেননি আর।

মনোজ বাজপেয়ীকে পরে প্রস্তাব দেওয়া হলে তিনিও এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন। অবশেষে, জ্যাকি শ্রফ ‘চুন্নীলাল’-এর চরিত্রে অভিনয় করতে রাজি হন। শুধু বলিউড সিনেমাই নয়, হলিউড ছবিতেও অভিনয় করার প্রস্তাব পেয়েছিলেন গোবিন্দ। 

২০০১ সালে ‘অবতার’ ছবিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করার জন্যে বলিউড অভিনেতা গোবিন্দকেই বেছেছিলেন জেমস ক্যামেরন। গল্প শোনার পর গোবিন্দ বলেছিলেন, এই ছবির কাজ শেষ করতে সময় লাগলেও বক্স অফিসে বিপুল সাড়া ফেলবে।

তবে তিনি এও জানিয়েছিলেন যে, যে চরিত্রে অভিনয় করার জন্য তাকে অনুরোধ করা হয়েছে, তার জন্য গোবিন্দকে সারা শরীরে নীল রং মাখতে হবে। এতে তিনি বিন্দুমাত্র রাজি নন। এমনকি, তার জীবনশৈলীর সঙ্গে এই চরিত্রের কোনও মিলই নেই।

২০০৯ সালে যখন এই সিনেমাটি মুক্তি পায়, ঘটনাচক্রে, তখন গোবিন্দর কর্মজীবনে ভাটার টান। রাজনীতির দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন তিনি। কংগ্রেস দলের পক্ষ থেকে লোকসভার সংসদ হিসাবে নির্বাচিত হয়ে বলিউডের পর্দা ছেড়ে দিল্লীর দরবারে গোবিন্দ। সূত্র: আনন্দবাজার

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে