বুধবার, ২০ জুলাই, ২০২২, ০১:৩০:৪১

বাহুবলী সিনেমায় এই ভুলগুলো কি আপনার নজরে পড়েছে?

বাহুবলী সিনেমায় এই ভুলগুলো কি আপনার নজরে পড়েছে?

বিনোদন ডেস্ক: প্রভাস, রানা দগ্গুবতী, অনুষ্কা শেট্টি, তামান্নাসহ সকলেই দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় মুখ হলেও বাহুবলী ছবিটি তাদের প্রত্যেকের জীবনে একটি মাইলফলক গড়ে তোলে। বক্স অফিস থেকে এই সিনেমাটি এখনও পর্যন্ত ৬০০ থেকে ৬৫০ কোটি টাকা উপার্জন করেছে।

এই সিনেমার বেশির ভাগ দৃশ্য হায়দরাবাদের রামোজি ফিল্ম সিটিতে আলাদা ফিল্ম সেট তৈরি করে শ্যুট করা হয়েছিল। বহু দিন ধরে বাহুবলীর শ্যুটিং চলেছিল। একটি দৃশ্য নিখুঁত করতে ‘লাইট! ক্যামেরা! অ্যাকশন’-এর মুখোমুখি হতে হয়েছে অনেক বার। তাতেই দেখা দিয়েছে ‘গোড়ায় গন্ডগোল’!

সিনেমার শুরুতেই ঝরনার প্রাকৃতিক দৃশ্য দর্শকের নজর কাড়ে। এমনকি, বাহুবলীও বার বার এই ঝরনার ওপারেই যেতে চান। তিনি যখন লাফ দিয়ে উপরে পৌঁছান, তখন তার মুখ কাপড়ে ঢাকা ছিল না। কিন্তু উপরে ওঠার পর যখন অবন্তিকা ও বাহুবলী মুখোমুখি আসেন, তখন হঠাৎ করেই অভিনেতার মুখ একটি কাপড়ে ঢাকা থাকতে দেখা যায়।

একটি গানের দৃশ্যে দেখা যায়, অবন্তিকার পোশাকের উপরাংশ অনেকটা ‘টিউব টপ’-এর মতো। পিছনে কোনও ‘নট’ বাঁধা ছিল না। ক্যামেরার দিক পরিবর্তন হতেই দেখা যায়, মুহূর্তের মধ্যে ওই টপের পিছনে বেগুনি ফিতে দিয়ে নটের মতো বাঁধা রয়েছে।

এমনকি, বাহুবলী যখন ঝরনার দিকে দৌড়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তার পায়ে কোনও জুতো বা চটি ছিল না। ঝরনার উপরে পৌঁছনোর পর তার পায়ের দিকে তাকালে নজরে পড়ে, বাহুবলীর পরনে একটি চটি। খালি পায়ে যিনি দৌড়চ্ছিলেন, তার পায়ে পরক্ষণেই কী করে চটি চলে আসে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

বাহুবলী সিনেমাতে এমনও কিছু ঘটনা দেখানো হয়েছে, যা মোটেই বাস্তবসম্মত নয়। বাহুবলীর আসল পরিচয় জানার পর দেবসেনার হাতের উপর বাহুবলী হাত রাখে। অভিনেত্রীর হাতের দিকে লক্ষ করলে দেখা যায়, তার হাতে কোনও ক্ষত নেই।

ঠিক তার পরেই যে ‘ক্লোজ শট’ নেওয়া হয়েছে, সেখানে বাহুবলীর হাত দেবসেনার হাতের উপর। তখন অভিনেত্রীর হাতে বড় ক্ষতের দাগ লক্ষ করা যায়। আগের ও পরের দৃশ্যে এই অমিল বাস্তবে কখনও মেনে নেওয়া যায় না।

এই ছবির অধিকাংশ সময় দেবসেনা তথা অনুষ্কাকে রাজপ্রাসাদের প্রাঙ্গণ জুড়ে গাছের বড় ডালের অংশ কুড়োতে দেখা যায়। তিনি নাকি এই টুকরোগুলি দিয়ে মহিষ্মাতীর রাজা বল্লালদেবের শবশয্যা প্রস্তুত করছেন। তবে অবাক করা কাণ্ড এই যে, রাজপ্রাঙ্গণ জুড়ে কোনও গাছ ছিল না। তা হলে, গাছের ডালগুলি প্রাঙ্গণ জুড়ে ছড়িয়ে থাকার কারণটাই বা কী?

সিনেমায় যে বিরাট বড় স্বর্ণমূর্তি দেখানো হয়েছিল, তার কথা মনে পড়ে? প্রজাদের অনেকেই দড়ি দিয়ে টেনে মূর্তিটিকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তাঁরা এই চেষ্টায় ব্যর্থ হন। শেষে বাহুবলী এসে সকলের সঙ্গে হাত মেলান।

স্থাপনের আগে মূর্তিটির পায়ের তলা একটি লাল রঙের কাপড় দিয়ে ঢাকা ছিল। কিন্তু পরে আবার যখন মূর্তির নীচের অংশ ক্যামেরার লেন্সে ধরা পড়ে, তখন সেই কাপড়টি অদ্ভুতভাবেই অদৃশ্য হয়ে যায়।

এই সিনেমার একটি দৃশ্যে দেখা যায়, বাহুবলী জলের তলায় অবন্তিকার হাতে আঁকছেন। কিন্তু বাস্তবে জলের তলায় কি রঙের ব্যবহার করে আঁকা যায়? বাহুবলী ও অবন্তিকা দুই জনকেই একটি নাচের দৃশ্যে অভিনয় করতে দেখা যায়। 

গল্প অনুযায়ী, তাদের দুই জনের হাতে একই ধরনের আঁকা রয়েছে, তবে আঁকা দুটি অসম্পূর্ণ। এক মাত্র দুই হাত জোড়া অবস্থাতেই আঁকাটি সম্পূর্ণ রূপে ফুটে উঠবে। এই দৃশ্যেও দেখা যায়, বাহুবলীর হাতে এক সময় আঁকাটি রয়েছে, ঠিক তার পরের মুহূর্তেই আঁকাটি অভিনেতার হাত থেকে পুরোপুরি উধাও হয়ে যায়।

এমন বহু দৃশ্য রয়েছে, যেখানে ক্যামেরার দিক পরিবর্তন হওয়ার ফলে অভিনেতাদের অঙ্গভঙ্গি থেকে শুরু করে সেটের চার দিকে রাখা জিনিসে স্থানগত পরিবর্তন নজরে পড়ে। কখনও বাহুবলীর হাতে অ'স্ত্র না থাকলেও পরের দৃশ্যে দেখা যায়, অভিনেতার হাতে একটি হাতিয়ার ধরা। 

কোনও দৃশ্যে অভিনেতার পিছনে একটি রথ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় কিন্তু পরের দৃশ্যে রথটি আর নজরে পড়ে না। এমন প্রচুর ভুল থাকা সত্ত্বেও দর্শকেরা সেগুলি এড়িয়েই গিয়েছেন। আজও ‘বাহুবলী’ সকলের প্রিয় সিনেমাগুলির মধ্যে একটি। সূত্র: আনন্দবাজার

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে