শনিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০১৬, ০৫:২০:৫২

বাংলাদেশে ফতোয়া জারি নিয়ে যা বললেন জয়া

বাংলাদেশে ফতোয়া জারি নিয়ে যা বললেন জয়া

বিনোদন ডেস্ক : বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় একজন অভিনেত্রী জয়া আহসান। ছোটপর্দা দিয়েই তার ক্যারিয়ার শুরু। বর্তমানে ব্যস্ত আছেন বড়পর্দায় অভিনয় নিয়ে। বাণিজ্যিক কিংবা ভিন্ন ঘরাণার ছবিতে ভারসাম্য রক্ষা করেই অভিনয় করছেন তিনি। প্রশংসাও কুড়াচ্ছেন ব্যাপকভাবে।

এদিকে গতবছর কলকাতাতে মুক্তি পায় জয়া অভিনীত আলোচিত ছবি ‘রাজকাহিনী’। এ ছবিতে জয়া আহসানের একটি দৃশ্য নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছিলো। গুঞ্জন উঠেছিলো ওই দৃশ্যে অভিনয়ের জন্য তার বিরুদ্ধে নাকি ফতোয়াও জারি করা হয়েছিলো! তবে এই ফতোয়া জারির বিষয়টি মোটও সত্য নয় বলে আনন্দ বাজারে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জয় আহসান দাবী করেছেন।

আনন্দ বাজারে প্রকাশিত জয়া আহসানের সেই সাক্ষাৎকারটি এমটি নিউজ টুয়েন্টিফোরের পাঠকের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো।

বাংলাদেশের মিডিয়া অঙ্গণের জনপ্রিয় নাম জয়া আহসান। ছোট পর্দায় নাটক আর মডেলিং দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু করলেও বর্তমানে তিনি বড় পর্দায় কাজ করছেন সমান তালে। বাণিজ্যিক ধারার ছবির সঙ্গে ভিন্ন ধারার ছবিতে তিনি সমান জনপ্রিয়। গত বছরে কলকাতায় মুক্তি পাওয়া ‘রাজকাহিনী’ ছবিতে অভিনয় করায় বেশ প্রসংশায় পেয়েছেন ওপার বাংলায়।

তবে প্রসংশার সঙ্গে ছবির চরিত্রের কারণে জয়া হয়েছিলেন বির্তকিত। বর্তমানে তিনি বেশ কিছু ছবিতে কাজ করছেন। ভারতীয় প্রভাবশালী গণমাধ্যম আনন্দবাজার বাংলাদেশি দাপুটে অভিনেত্রী জয়া আহসানের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করেছে।


আনন্দবাজার: আপনার বাড়ির যে অ্যাড্রেসটা হোয়াটসঅ্যাপ করেছিলেন, সেটা দেখে বুঝতে পারছিলাম না আপনার ফ্ল্যাটটা কোথায়?
জয়া আহসান: ওহ, আই অ্যাম সো সরি।

আনন্দবাজার: ঠিকানা বুঝতে না পেরে সৃজিত মুখোপাধ্যায়কে ফোন করি। সৃজিত এক নিশ্বাসে জানাতেও শুরু করেছিলেন কোথায় আপনার বাড়ি। তার পর হঠাৎ বললেন, ‘‘এই, এটা আপনি বদমায়েশি করছেন না তো আমাকে জয়ার বাড়ির অ্যাড্রেস জিজ্ঞেস করে?
জয়া আহসান: (হাসি) সৃজিত খুব সুইট।

আনন্দবাজার: আপনি বাংলাদেশের একজন বড় স্টার। এখানে নিজে চা বানাচ্ছেন। একা থাকছেন। নায়িকারা তো এমন জীবনে অভ্যস্ত নন শুনেছি?
জয়া আহসান: আমি কিছু বড় স্টার নই। ও সব নিয়ে ভাবিও না। স্টার, অভিনেত্রী এগুলো খুব বড় শব্দ। ওগুলো নিজেকে বলা মানে ধৃষ্টতা। আমি সামান্য শিল্পী। আর মনে করবেন না এটা বিনয় করে বলছি। মন থেকে এটাই বিশ্বাস করি।

আনন্দবাজার: বাংলাদেশে তো এই সময় ইলিশ ভাল পাওয়া যায়। আপনি রান্না করেন?
জয়া আহসান: করি তো। তবে মাছের পদের থেকে নবাবি খাবার আমি বেটার বানাই। বিরিয়ানি, ভুনা, রেজালা, কোর্মা।

আনন্দবাজার: এ বার আপনাকে একটু অন্য প্রসঙ্গে প্রশ্ন করি?
জয়া আহসান: নিশ্চয়ই।

আনন্দবাজার: ‘রাজকাহিনী’মুক্তি পাওয়ার পর, বাংলাদেশে আপনাকে নিয়ে তোলপাড় হয়ে যায়। পুরোটাই ‘রাজকাহিনীতে আপনার আর রুদ্রনীল ঘোষের ওই দৃশ্যটার জন্য।
জয়া আহসান: (গম্ভীর ভাবে) হুমমম...

আনন্দবাজার: সেই সিনে কিছু ডায়লগ ছিল যাতে ‘যোনি’, ‘স্তন’ — এই শব্দগুলো ছিলো?
জয়া আহসান:  হ্যাঁ, ভীষণ পাওয়ারফুল ডায়লগ ছিল সেগুলো। তবে আমি মনে মনে খুব পরিষ্কার ছিলাম। অনেক বার স্ক্রিপ্টটা পড়েছিলাম। রিহার্সাল করেছিলাম। আমি মনে করি ওই সিনটার প্রতি ফুল জাস্টিস করতে পেরেছি। আর আমি এখানে সৃজিতকেও কৃতিত্ব দেব, যে ভাবে ও পুরো সিনটা বা ডায়লগগুলো লিখেছিল। আর যারা এটা দেখে এত আপত্তি তুলছে, তারা যদি পুরো সিনেমাটা দেখত তা হলে হয়তো ওই সিনটার মাহাত্ম্য বুঝতে পারত। তবে এটার পাশাপাশি বলছি বাংলাদেশের বহু মানুষ কিন্তু ওই সিন এবং পুরো ছবিটা দেখে আমাকে যথেষ্ট বাহবা দিয়েছেন। আমার কাছে সেটাও গুরুত্বপূর্ণ, সমালোচনার পাশাপাশি।

আনন্দবাজার: এই যে আপনার সিন নিয়ে এত আপত্তি, এটা নিয়ে তো আপনি আগে কথা বলেননি?
জয়া আহসান: না, এই প্রথম আনন্দplus-কে জানাচ্ছি। না এখানকার কাগজে বলেছি, না বাংলাদেশের। আমার শুধু এটা মনে হয়েছে, অন্তত কিছু মাইন্ডকে তো আমি লিবারেট করতে পেরেছি। কেউ কেউ তো আছেন যারা এটা থেকে অনুপ্রাণিত হবেন।

আনন্দবাজার: তার মানে আপনিও ‘মুক্তি’ যোদ্ধা?
জয়া আহসান: (স্মিত হাসি) হয়তো এক অন্য প্রকারের মুক্তিযোদ্ধা আমি। আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। এবং আবার  বলছি, ওই সিনটা করা নিয়ে আমার কোনও অপরাধবোধ ছিলো না।

আনন্দবাজার: কিন্তু আপনাকে হুমকি দিয়ে বা আপনার নামে জঘন্য কথা বলে তো  ইউটিউব কিছু ভিডিও আপলোড করা হয়েছিলো?
জয়া আহসান: হ্যাঁ, জানি। আজকে খোলাখুলি ভাবে সব বলতে চাই। আমার নামে কিন্তু কোনও ফতোয়া জারি করা হয়নি। ওটা ভুল খবর ছিল। তবে প্রচুর বেনামী চিঠি, মেল আর এসএমএস-এ হুমকি এসেছিল সেই সময়। আমি ভয়ও পেয়েছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না কাকে বলব।

আনন্দবাজার: তারপর?
জয়া আহসান: তারপর আমাকে বাংলাদেশ সরকার থেকে প্রোটেকশন দেওয়া হয়। সেটার জন্য আমি ওদের কাছে কৃতজ্ঞ।

আনন্দবাজার: সেই সব মেল বা চিঠির মূল বক্তব্য কী ছিলো?
জয়া আহসান: ওই ‘এ বার দেশ ছাড়া করাতে হবে আপনাকে’ জাতীয়…

আনন্দবাজার: যে দিন সকালে এ রকম এসএমএস পাচ্ছেন, সে দিন বিকেলেই হয়তো খবর পেলেন ঢাকাতে একজন ব্লগারকে মেরে ফেলা হয়েছে। পুরো ব্যাপারটা তো ভয়াবহ?
জয়া আহসান: হ্যাঁ, ভয় তো লাগবেই। তবে ওই যে বললাম, সরকার আমাকে প্রোটেকশন দিয়েছিল বলে অনেকটা নিশ্চিন্ত হয়েছিলাম। তবে আবার বলছি, এটা যারা করে তারা কিন্তু একটা ক্ষুদ্র অংশ। আমার বক্তব্য হল, কোনও জিনিস কারও পছন্দ না হতেই পারে, কিন্তু সেটা নিয়ে তো আলোচনা করা যায়। আমরা তো স্বাধীন, গণতান্ত্রিক দেশে থাকি যেখানে সব রকম মানুষ বাস করেন। সবার মত যে মিলতে হবে, তা তো নয়। ইউনিটি ইন ডাইভার্সিটি-টাই তো মূলমন্ত্র। বাকি জিনিসগুলো কি খুব প্রয়োজনের?

আনন্দবাজার: সেই সময় কলকাতা থেকে কেউ ফোন করেনি আপনাকে?
জয়া আহসান: সৃজিত ফোন করেছিলো। এ ছাড়াও কলকাতা থেকে আমার সহ-অভিনেত্রীরা ফোন করেছিলো। বেশ কিছু পরিচালক ফোন করেছিলেন।

আনন্দবাজার: কখনও এটা ভেবে দেখেছেন, ‘রাজকাহিনী’তে সব প্রশংসা নিয়ে গেলেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত, আর আপনার কপালে জুটল যত বিতর্ক?
জয়া আহসান: দেখুন, আমার কপালে কী জুটবে, সেটা তো আমি ছবি বানানোর আগে বুঝিনি। সত্যি বুঝিনি। আমি একটা মাল্টি-স্টারার ছবিতে কাজ করেছি যেখানে অথর ব্যাকড রোলটা ছিল ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর। তো তিনি যে লাইমলাইটটা পাবেন তাতে আর সন্দেহ কী! চ্যালেঞ্জটা অভিনেত্রী হিসেবে তখনই আসবে যখন ছোট রোলেও দর্শক আপনাকে মনে রাখবে। সে দিক থেকে আমি খুব লাকি।

আনন্দবাজার: আপনার ফ্যামিলিকে ‘রাজকাহিনী’ ছবিটা দেখিয়েছিলেন?
জয়া আহসান: মাকে দেখিয়েছিলাম। মা এবং আমার ফ্যামিলি ভীষণ সাপোর্টিভ ছিল। তবে ওদের একটা স্বাভাবিক উদ্বেগ তো ছিলই। মা আমাকে কিছু বলেনি।

আনন্দবাজার: আচ্ছা, কখনও রিহার্সালের সময় কী সিনের আগে বলেননি ‘যোনি’ বা ‘স্তন’ শব্দগুলো চেঞ্জ করার কথা?
জয়া আহসান: না, বলিনি। কেন বলব?

আনন্দবাজার: অনেক হিরোইন তো ডায়লগ বদলাতে ইনসিস্ট করেন।
জয়া আহসান: আমি করিনি। আর ‘যোনি’ বা ‘স্তন’তো নারীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। সেটা নিয়ে এত রাখঢাকের কী আছে বুঝিনি! আর এখানে আমি আমাদের দর্শকদেরও বলছি, একটা শিল্পকর্মকে বাঁচিয়ে রাখতে, সেটাকে ঠিকঠাক অ্যাপ্রিশিয়েট করার ক্ষেত্রে কিন্তু দর্শকদেরও দায় আছে। তারাও যদি সঠিক পারস্পেকটিভে জিনিসটা দেখেন, তা হলে এ রকম ঝামেলা হয় না।

আনন্দবাজার: ‘রাজকাহিনী’র মতো ছবি কি বাংলাদেশে বানানো সম্ভব?
জয়া আহসান: সত্যি বলতে, সম্ভব নয়। ওখানে বোধ হয় এখনও মানুষের রুচিটা ভিন্ন। কলকাতায় দর্শকের রুচিটা তৈরি হয়ে গিয়েছে নানা রকম ছবি দেখার ক্ষেত্রে। ওখানে দর্শকরা এখনও অতটা তৈরি নয়। তবে পুরো ব্যাপারটা খুব দ্রুত বদলাচ্ছে। দারুণ সব কাজ হচ্ছে ওখানেও।

আনন্দবাজার: বাংলাদেশের ইন্ডাস্ট্রির কথা বলবেন? এখানকার মানুষের তো ওই ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে প্রচুর কৌতূহল?
জয়া আহসান: বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রি এখন সত্যি ভালোর দিকে এগোচ্ছে। যদিও বেশির ভাগ ছবি কমার্শিয়াল ঘরনার। সে জন্যই আমাদের মতো শিল্পীরা এপার বাংলায় এসে কাজ করছে।

আনন্দবাজার: প্রচুর ইন্দো-বাংলা জয়েন্ট কোলাবরেশনেরও তো ছবি হচ্ছে?
জয়া আহসান: হ্যাঁ, হচ্ছে। কিন্তু তাতে কতটা লাভ হচ্ছে, আমার জানা নেই। কারণ, আমি সেই রকম ছবি এখনও অবধি করিনি। আর যেটা দেখি, হয় সেই ছবিগুলো বাংলাদেশে চলছে, এখানে ফ্লপ। অথবা ভাইস ভার্সা। তাই জয়েন্ট কোলাবরেশন নিয়ে আমি হয়তো অতটা আশাবাদী নই। তবে আমাদের ওখানকার একটা ব্যাপার এখন খুব ভালো। আমাদের সরকার নানা ইন্ডিপেন্ডেন্ট ছবিকে দুর্দান্ত সাপোর্ট করছে। তা ছাড়া বাংলাদেশের কিছু ছবির মান হয়তো খারাপ, কিন্তু ছবি বানানোর ক্ষেত্রে অনেস্টিটা সাংঘাতিক।

আনন্দবাজার: আমি ব্লগারদের মৃত্যু নিয়ে আর একটু কিছু কি বলতে পারি?
জয়া আহসান: বাংলাদেশে ব্লগারদের মৃত্যু সত্যি খুব দুর্ভাগ্যজনক। আমাদের দেশ তো এমন দিন দেখার জন্য স্বাধীন হয়নি। ধর্ম অনেকেই মানে। অনেকে আবার মানেও না। আমি মানি। যারা মানে আর যারা মানে না তাদের মধ্যে ‘বহস’ হতে পারে। সুস্থ মতবিরোধ থাকাটা তো ভাল জিনিস। দু’পক্ষই ভিন্ন মত পোষণ করেও তো পাশাপাশি থাকতে পারে। তাই নয় কি? হত্যাটা কি কোনও সলিউশন? মনে হয় না। এটা কাম্যও নয়।

আনন্দবাজার: আপনি তো বাংলাদেশের এমন একজন নাগরিক যিনি ভারতের যে কোনও জায়গায় যেতে পারেন। কখনও মনে হয়নি দিল্লি গিয়ে তসলিমা নাসরিনের সঙ্গে দেখা করি?
জয়া আহসান: খুব ইচ্ছে হয়। সুযোগ পাইনি। ওনার ব্যাপারে প্রায় সব খবরই আমরা রাখি। আমি তো রাখি।

আনন্দবাজার: চূর্ণী গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘নির্বাসিত’ দেখেছিলেন?
জয়া আহসান: না, ‘নির্বাসিত’ দেখিনি। তবে ওনার নির্বাসিত হওয়াটা মেনে নিতে কষ্ট হয় আমার। আমাদের সবার সঙ্গে সবার মত না-ও মিলতে পারে। সেটাই স্বাভাবিক, সেটাই ন্যাচারাল, কিন্তু সেটার জন্য একজন মানুষ তার নিজের দেশে ফিরতে পারবেন না  এটা বড় দুঃখের। খুব কষ্টের।

আনন্দবাজার: কলকাতার ইনিংস তো শুরু হয়েছিল অরিন্দম শীলের ‘আবর্ত’ দিয়ে। তা হলে, বাংলাদেশ বিমান না অরিন্দম শীল এ দেশে আপনাকে আনার জন্য কে বেশি রেসপনসিবল?
জয়া আহসান: (হাসি) নিঃসন্দেহে অরিন্দম শীল। যখন অরিন্দমদা অ্যাপ্রোচ করেন, তখন তিনি কোনও ছবি পরিচালনা করেননি। আমি একটু অ্যাপ্রিহেনসিভ ছিলাম। তবে ‘আবর্ত’র জন্যই এই জায়গাটা পেয়েছি।

আনন্দবাজার: এখানে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, যিনি আপনার সঙ্গে ‘আবর্ত’তে কাজ করেছেন বা সৃজিত কী অরিন্দম শীল — সবাই কিন্তু আপনাকে দুর্দান্ত অভিনেত্রী বলে থাকেন?
জয়া আহসান: এটার জন্য আমি কৃতজ্ঞ ওদের কাছে। আমি ভাল অভিনেত্রী কি না জানি না, তবে কাজটা অসম্ভব মন দিয়ে করি।

আনন্দবাজার: শুনেছি বাংলাদেশে থাকলে সৃজিত প্রায়ই আপনাকে ফোন করেন?
জয়া আহসান: (হাসি) ও তো বন্ধু। আমাকে ফোন করতেই পারে।

আনন্দবাজার: একসঙ্গে ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের পার্টিতেও এসেছিলেন গত বছর?
জয়া আহসান: হ্যাঁ, গিয়েছিলাম ওর সঙ্গে পার্টিতে।

আনন্দবাজার: তার আগের দিন পরমব্রত আপনার ফোন নম্বর নিয়েছিলেন বলে, সৃজিত নাকি মনকষাকষি করেছিলেন পরমের সঙ্গে?
জয়া আহসান: (হাসি) তাই নাকি? এটা জানি না।

আনন্দবাজার: সৃজিত তো বিয়েও করতে চেয়েছিলেন আপনাকে?
জয়া আহসান: আমাকে বিয়ে করতে চেয়েছিলো কি না জানি না। তবে ও জিজ্ঞেস করেছিলো, কবে আমি বিয়ে করব? বা বিয়ে নিয়ে আমার মত কী? এই আর কী।

আনন্দবাজার: আপনার কথা বললেই কিন্তু ব্লাশ করেন সৃজিত?
জয়া আহসান: ও কিন্তু ভাল অভিনেতা। অনেকের কথা শুনলেই হয়তো ব্লাশ করে। আমি খুব ঘরকুনো। আটপৌরে।

আনন্দবাজার: কবিতা পড়েন?
জয়া আহসান: না, কবিতা অত পড়ি না। আমার বেশি পছন্দ গদ্য।

আনন্দবাজার: প্রিয় লেখক কে?
জয়া আহসান: প্রিয় লেখক যদি বলতে হয়, তা হলে তিনজনের নাম করব। রশিদ করিম, হাসান আজিজুল হক, আখতারুজ্জামান ইলিয়াস। এ ছাড়া সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তো আছেনই।

আনন্দবাজার: আচ্ছা, অন্য প্রসঙ্গে ফিরি। নতুন কী কাজ করছেন কলকাতায়?
জয়া আহসান: শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা চলছে ওর পরের ছবির ব্যাপারে।

আনন্দবাজার: আপনি কি ‘কণ্ঠ’ ছবিটার কথা বলছেন? সেই ছবিতে তার মানে আপনি আর কোয়েল?
জয়া আহসান: কোয়েলের ব্যাপারটা আমি ঠিক জানি না। ওটা শিবপ্রসাদ বলতে পারবে।

আনন্দবাজার: এই ইন্টারভিউ বেরোনোর পর তো কলকাতার নায়িকারা আপনাকে নিয়ে ইনসিকিওর্ড হয়ে যাবেন?
জয়া আহসান: কেন?

আনন্দবাজার: একে ‘বাস্তু-শাপ’য়ের প্রিমিয়ারে আপনাকে দেখে অনেক নায়ক-পরিচালক চমৎকৃত হয়ে গিয়েছেন। তার উপর সৃজিতের পরে শিবপ্রসাদের ছবি। ইনসিকিওর্ড তো হওয়ারই কথা?
জয়া আহসান: এ বাবা, এরকম করে বলবেন না। কলকাতার সবাই খুব ভাল অভিনেতা-অভিনেত্রী। কলকাতার অ্যাভারেজ অভিনয়ের মানটাই অনেক বেশি। আর সবাই তো আমার বন্ধু। কেউ আমাকে নিয়ে ইনসিকিওর্ড নয়।

আনন্দবাজার: কলকাতার সমসাময়িক তিনজন অভিনেত্রীর নাম বলুন, যাদের অভিনয় আপনার ভাল লাগে।
জয়া আহসান: প্রথমেই বলব সোহিনী সরকারের কথা। অনন্যা চট্টোপাধ্যায়ের অভিনয়ও দারুণ লাগে। আর প্রিয়াঙ্কা।
আনন্দবাজার: আর হিরোদের মধ্যে? পরম, যিশু, আবীর এই তিন জনের মধ্যে হট কোশেন্টে কে এগিয়ে থাকবেন?
জয়া আহসান: এই রে! এটার উত্তর দেওয়া একটু মুশকিল। আবীর আমার প্রথম হিরো। পরম ভাল অভিনেতা। এখন তো বাংলাদেশেও ছবি করছে ও। আর যিশুদা আজকে তো অভিনেতা হিসেবে অন্য জায়গায় চলে গিয়েছে বহু বছরের অভিজ্ঞতার সাহায্যে। এটাই আমার অ্যাসেসমেন্ট। প্লিজ একটু ডিপ্লোম্যাটিক থাকতে দিন।

আনন্দবাজার: আচ্ছা, এই যে কলকাতায় একা থাকেন এটা তো সবাই জানেন। নায়ক থেকে পরিচালক- আপনাকে ডিসটার্ব করেন না?
জয়া আহসান: এমা, ডিসটার্ব করবে কেন! আর আজকেই আমি একা। না হলে আমার মা থাকেন। আমার বাকি আত্মীয়স্বজনও থাকেন। মোটেই একা থাকি না তাই ডিসটার্বেন্সের প্রশ্নই ওঠে না। আমি এই বেশ ভাল আছি। সিঙ্গেল।

আনন্দবাজার: বয়ফ্রেন্ড নেই বলছেন?
জয়া আহসান: (হাসি) একেবারে নেই।

আনন্দবাজার: এটা শুনলে সৃজিত ছাড়াও কলকাতার কিছু নায়ক খুশি হবেন। হোয়াটসঅ্যাপ আর এসএমএসের ঝড় বয়ে যাবে। আজকে দুপুরেই প্রোপোজও করতে পারেন আপনাকে কেউ কেউ?
জয়া আহসান: আমাকে তো কেউ কিছু পাঠায় না। (হাসি) অনেক দিন তো শুনিনি কিছু। দেখি এই ইন্টারভিউটা বেরোনোর পর কী হয়, জানাব আপনাকে।
২৩ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে