বিনোদন ডেস্ক : বর্ষবরণের এমন রূপ শেষ কবে দেখেছেন মনে পড়ে? পহেলা বৈশাখ এসেছে অথচ পান্তা-ইলিশের আয়োজন নেই, বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাওয়া যেন বাঙালির একটা রীতি হয়ে গেছে। তবে এই রীতির ঘোর বিরোধী জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা দিলারা হানিফ পূর্ণিমা ও অভিনেতা আব্দুন নূর সজল।
চিত্রনায়িকা পূর্ণিমা মনে করেন, পহেলা বৈশাখে পান্তা ভাত এবং ইলিশ ভাজা খাওয়াটা হুজুগে কর্মকাণ্ড ছাড়া আর কিছু নয়। নববর্ষ উদযাপনের সঙ্গে পান্তা-ইলিশের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এই অভিনেত্রী বলেন, ‘কয়েক বছর থেকে পান্তা-ইলিশ প্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ। ইলিশের প্রজনন মৌসুম চলায় বিভিন্ন মহল থেকে আহ্বান আসছে এই প্রথা বন্ধ করার।’
পূর্ণিমা আরও বলেন, ‘জাটকা ও মা ইলিশ রক্ষায় পহেলা বৈশাখে ইলিশ খাওয়া নিরুৎসাহিত করছে সরকার। পহেলা বৈশাখে ইলিশ না খাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও। এবারও অনেকে ইলিশ ছাড়া পহেলা বৈশাখ পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।’
এদিকে ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা সজল মনে করেন, আইন করে পহেলা বৈশাখে পান্তা ভাত আর ইলিশ ভাজা খাওয়া বন্ধ করা উচিত। বাংলা বর্ষবরণ উপলক্ষে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন অভিনেতা।
সজল বলেন, ‘বাঙালি আবহমান কাল ধরে বর্ষবরণে নানা উৎসব পালন করে আসছে। এই উৎসবে পান্তা-ইলিশ খাওয়া যুক্ত হয়েছে অনেক পরে এসে। এই রীতি আইন করে বন্ধ করা হোক।’
প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন, গোষ্ঠী, নামিদামি ক্লাব, হোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলো পান্তা-ইলিশের আয়োজন করে থাকে। চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন দিয়ে এবং রং-বেরঙের লিফলেট বের করে হোটেল কর্তৃপক্ষ ক্রেতা আকর্ষণের চেষ্টা করে।
এ প্রসঙ্গে সজল বলেন, ‘এসব মানুষের সামাজিক দায়বদ্ধতা বলতে কিছুই নেই। অতি লাভের আশায় এই ব্যবসায়ী শ্রেণি নববর্ষে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার প্রথা চালু করেছে। বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছে শুনেছি, এ প্রথা খুব বেশিদিন আগের নয়।’
তবে শুধু সজল-পূর্ণিমা নন, পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার পক্ষে নন অনেকেই। কারণ, বৈশাখ ঘনিয়ে আসলে যে হারে ইলিশের দাম বাড়ে, তাতে মধ্যবিত্ত আর নিম্নবিত্তের কপালে জোটে না দেশের জাতীয় এই মাছটি। কিন্তু প্রথা একবার চালু হলে বন্ধ হওয়াও মুশকিল।