স্পোর্টস ডেস্ক: ধোনি একাই ভারতকে কাপ জেতাননি। দলের বাকিদেরও অবদান ছিল। কার্যত এমন ভাষাতেই হরভজন সিং এবার সবক শেখালেন এক ক্রিকেট সমর্থককে। যেদিন ভারত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে হেরে বসল, সেদিনই মেজাজ হারাতে দেখা গেল ভাজ্জিকে।
ভারতের হারের শোকে এক সমর্থক ধোনির ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছিলেন, “কোনও কোচ ছিল না, মেন্টর ছিল না। এমনকি সিনিয়র প্লেয়াররা অংশ নিতে অসম্মত হওয়ায় তরুণরা খেলেছিল। তার আগে ওর একটি ম্যাচেও নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা ছিল না। আর এই ছেলেটাই সেরা সময়ের অস্ট্রেলিয়াকে সেমিফাইনালে হারিয়েছিল। ক্যাপ্টেন হওয়ার ৪৮ দিনের মাথাতে টি-২০ জিতিয়ে ছিলেন।”
২০০৭ সালে টি-২০ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পুরো কৃতিত্বই ধোনিকে দিয়ে দেওয়ায় সেই সমর্থকের ওপরে ক্ষুব্ধ হন হরভজন। সেই পোস্টই শেয়ার করে ভাজ্জি শ্লেষের সুরে পাল্টা লেখেন, “হ্যাঁ, যখন ম্যাচ হচ্ছিল, এই ছেলেটাই একা খেলছিল। বাকি ১০ জন তো খেলছিল না। তাই সে একাই ওয়ার্ল্ড কাপ জিতেছে।”
ভাজ্জি আরও লেখেন, “আয়রনি হল, অস্ট্রেলিয়া সহ বাকি দেশ যখন বিশ্বকাপ জেতে গোটা দেশকেই কৃতিত্ব দেওয়া হয়। আর ভারতে জিতলে বলা হয়, ক্যাপ্টেন ওয়ার্ল্ড কাপ জিতেছে। যেটা একটা দলগত খেলা। জয় যেমন একত্রে হয়, হারও হয় একসঙ্গে।”
ঘটনাচক্রে, ভারতীয় ক্রিকেটে ব্যক্তিপূজা ইস্যুতে এর আগে একইভাবে সরব হয়েছিলেন হরভজনের জাতীয় দলের সতীর্থ গৌতম গাম্ভীর-ও। এক সাক্ষাৎকারে গাম্ভীর বলেছিলেন, “আমাদের দেশে দলের প্রতি অবসেশন নেই। আমরা সবসময় একজন ব্যক্তিকে দলের থেকে বড় ভাবি।”
তিনি বলেন, “ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের মত দেশে ব্যক্তির আগে দলকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। ভারতীয় ক্রিকেটের স্টেকহোল্ডাররা মিডিয়া থেকে ব্রডকাস্টার- সকলেই পিআর এজেন্সিতে তৈরি হয়েছে। ওঁরা সারা দিন ধরে স্রেফ তিনজনকে দেখায়।”
গৌতম বলেন, “যদি আমার সঙ্গে অন্য কেউ হাফসেঞ্চুরি করে, তাহলে মিডিয়া যদি একজনকেই তুলে ধরে তাহলে সকলেই ভাববে সেই একমাত্র তারকা। অন্য ক্রিকেটারকে খাটো করা হয় এতে। কারা একজন ক্রিকেটারকে খাটো করে? সম্প্রচারকারী চ্যানেল, বিশেষজ্ঞরা, সামাজিক গণমাধ্যম করে।”
গাম্ভীর আরও বলেন, “যদি বারবার একজনের পারফরম্যান্সই তুলে ধরা হয়, অটোমেটিকভাবে অন্যকে খাটো করা হয়। দুজনেই যদি একই ধরণের প্রতিভা সম্পন্ন হয়, এবং একজনকেই যদি বারবার দেখানো হয়, তাহলে অন্যজন বরাবর প্রচারে আসবে না। ব্যক্তি পূজার এই ট্র্যাডিশনের জন্যই ভারত দীর্ঘদিন কোনও আইসিসি খেতাব পায়নি।”