বিনোদন ডেস্ক: বাহুবলী, আরআরআরসহ বেশ কিছু চলচ্চিত্র দিয়ে ভারতের দক্ষিণি সিনেমা বিশ্বব্যাপী আলোচিত হয়েছে। দেশটির দক্ষিণি সিনেমা এখন সবচেয়ে প্রশংসিত শিল্পগুলোর একটি। অথচ, একসময় কেউ দক্ষিণের অভিনেতা, পরিচালক ও টেকনিশিয়ানদের চিনতেন না।
আর এখন প্রভাস, রামচরণ, যশ, আল্লু অর্জুন, জুনিয়র এনটিআর, বিজয়ের ভক্ত ছড়িয়ে আছে সারাবিশ্বে। একটি শিল্পের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি সিনেমাই যথেষ্ট। আর এসএস রাজামৌলির বাহুবলী সেটাই প্রমাণ করেছে। এই ব্লকবাস্টার সিনেমার মাধ্যমে দক্ষিণি চলচ্চিত্র শিল্প ভারতের সীমানা অতিক্রম করেছে।
এরপর দক্ষিণের আরও কয়েকটি সিনেমা বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছে। আর তার মাধ্যমে প্যান-ইন্ডিয়া শব্দটির জন্ম হয়েছে। বাহুবলী, আরআরআর, কেজিএফ, কানতারা, পুষ্পা, পোন্নিয়িন সেলভান ২, সীতা রামমের মতো হিট সিনেমাগুলো শুধু দক্ষিণি সিনেমাকে পরিচিতি এনে দেয়নি, বরং এসব সিনেমার কলাকুশলীদের বিশ্বব্যাপী খ্যাতি এনে দিয়েছে।
যেমন- বাহুবলীর পর বিশ্বব্যাপী প্রভাসের ভক্ত তৈরি হয়। তিনি খুব দ্রুত প্যান-ইন্ডিয়া তারকা হয়ে ওঠেন। প্রভাসের পরে অনেক সেলিব্রিটি এই পথ অনুসরণ করেন এবং বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক যেসব তারকা বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছেন এবং ভারতীয় সিনেমার দিশা বদলে দিয়ে প্যান-ইন্ডিয়া সুপারস্টার হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন।
প্রভাস: বাহুবলীতে অভিনয় করা প্রভাস তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির বাইরে খুব বেশি পরিচিত ছিলেন না। সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী সাড়া ফেলার পর ভারতের বাইরে প্রভাসের নাম দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এখনতো সিনেমাপ্রেমীদের কাছে প্রভাস খুব পরিচিত একটি নাম। বাহুবলীতে তিনি অমরেন্দ্র বাহুবলীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন।
বর্তমানে প্রভাসের কেবল ভারতে নয়, বিশ্বব্যাপী বিশাল ভক্ত ছড়িয়ে আছে। প্যান-ইন্ডিয়া চলচ্চিত্রের মাধ্যমে প্রভাসের ভক্তের সংখ্যা বাড়তেই আছে। যদিও তার সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া সিনেমা আদিপুরুষ সদ্য মুক্তি পেয়েছে। তারপরও তার প্রতিটি সিনেমা এখন বড় প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হয়।
জুনিয়র এনটিআর: প্রভাবশালী ফিল্মি ও রাজনৈতিক পরিবার থেকে এসেছেন জুনিয়র এনটিআর। তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনেতা হিসেবে তার আছে দারুণ ক্যারিয়ার। তেলেগু ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি অনেকগুলো ব্লকবাস্টার সিনেমা উপহার দিয়েছেন।
এসএস রাজামৌলি তার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট? জুনিয়র এনটিআর এসএস রাজামৌলির পরিচালনায় অভিনেতা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন। আবার তার পরিচালিত আরআরআর সিনেমার মাধ্যমে নিজেকে প্যান-ইন্ডিয়ান সুপারস্টার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
কোমারাম ভিম চরিত্রে জুনিয়র এনটিআরের অভিনয় তাকে তেলেগু রাজ্যের বাইরে ও ভারতের সীমান্ত অতিক্রম করে খ্যাতি এনে দিয়েছে। তিনি শুধু প্যান-ইন্ডিয়া খ্যাতি অর্জন করেননি, হলিউডের অনেক চলচ্চিত্র নির্মাতা ও অভিনেতা তার প্রশংসা করেছেন।
রাম চরণ: মেগাস্টার চিরঞ্জীবীর ছেলে রাম চরণ তেলেগু চলচ্চিত্র শিল্পে আগেই নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। তিনি রঙ্গস্থলম ও মাগধিরা সিনেমা দিয়ে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। আরআরআরে আল্লুরি সীতারাম রাজু চরিত্রে অভিনয় করেছেন বিশ্বব্যাপী খ্যাতি পেয়েছেন।
এই সিনেমা তাকে ভারতের বাইরে জনপ্রিয়তা এনে দিয়েছে। রাম চরণ গুড মর্নিং আমেরিকার মতো হলিউড শোতে হাজির হন। আসলে আরআরআরের জাদু এতটাই দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলেছিল যে, রাম চরণ ও জুনিয়র এনটিআর হলিউড থেকে অফার পেয়েছিলেন।
যশ: যশ এমন একটি নাম, যে নামটি কেবল কেজিএফ দিয়ে বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়ে উঠেছে। কেজিএফের আগে যশকে কর্ণাটক সীমান্তের বাইরের দর্শকরা চিনতেন না। যাইহোক, তার রকি ভাই চরিত্র তাকে প্যান-ইন্ডিয়া সুপারস্টার করে তুলেছে। তিনি রকি চরিত্রে অভিনয় করে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তা পেয়েছেন।
সিনেমাতে তার আচরণ, শৈলী ও সংলাপ খুবই সাড়া ফেলেছিল। যশ রকি চরিত্রে এতটাই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন পর্দার বাইরেও তার সিগনেচার লুক হয়ে উঠেছে রকি। কেজিএফের পর এই অভিনেতা এখনো তার পরবর্তী সিনেমার ঘোষণা করেননি। কারণ প্যান-ইন্ডিয়া তারকা হয়ে ওঠায় তার পরবর্তী সিনেমা নিয়ে সবার প্রত্যাশা বেশি।
আল্লু অর্জুন: পুষ্পা দ্য রাইজ সিনেমা দিয়ে বিশ্বব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেছেন আল্লু অর্জুন। তার সিনেমার গানে নেচেছে ভারতসহ বিভিন্ন দেশের সিনেমাপ্রেমীরা। এমনকি এই সিনেমার কয়েকটি সংলাপও মানুষের মুখে মুখে ঘুরেছে।
আল্লু অর্জুনের লুক ও অভিনয় সবাইকে তার ভক্ত করে তুলেছে। পুষ্পার মাধ্যমে তিনি ভারতীয় সীমানা অতিক্রম করেছেন এবং প্যান-ইন্ডিয়া বাজারে শীর্ষ তারকা হিসেবে নিজের অবস্থান তৈরি করেছেন। সুকুমার পরিচালিত 'পুষ্পা ২' দিয়ে ফিরবেন এই অভিনেতা।