বিনোদন ডেস্ক : প্রতিটি দেশই থাকে সেন্সর বোর্ড। সেন্সর বোর্ডের অনুমতি ছাড়া কোন চলচ্চিত্রই প্রদর্শনী করতে পারে না। সেন্সর বোর্ড থেকে অনেক ছবি নিষদ্ধও করা হয়।
তাই বলে নিষিদ্ধ মানেই পুরো বিশ্বে নিষিদ্ধ নয়। এমন কিছু ছবি আছে যা নিজ দেশে নিষিদ্ধ হয়েও কাঁপিয়েছে পুরো বিশ্ব। যেসব ছবিগুলো এখনও দাগ কেটে আছে সিনেমাপ্রেমিদের অন্তরে।
যে ছবিগুলোকে ভিত্তিহীনভাবেই কোন রকম যুক্তিছাড়াই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল নিজ নিজ দেশে। তেমনই কিছু ছবির কথা তুলে ধরা হলো নিচে।
১। ২০১০ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল ‘অ্যা সার্বিয়ান ফিল্ম’। এ সিনেমাটি ব্রাজিল, নিউজিল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, স্পেনে নিষিদ্ধ ছিল। এতে সার্বিয়ান সরকারের প্রতি অনেকটাই নেতিবাচক মনোভাব দেখানো হয়েছিল। যার ফলে নিজের দেশ তো বটেই, পুরো পৃথিবীতেও নানারকম কাঁটাছেড়ার পর মুক্তি পেতে বেশ সমস্যা হয়েছিল। তবে এই সিনেমাটি কেউ একবার দেখলে সে আর সার্বিয়া যেতে চাইবে না।
২। ১৯২৫ সালে নির্মাণ হয়েছিল ‘ব্যাটলশিপ পটেমকিন’। এটি ফ্রান্স, জার্মানি, ফিনল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেনে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এ ছবিটি বিগত ৯০ বছর আগে পুরো বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছিল। এখনও ছবিটির গ্রহণযোগ্যতা একটুও কম নয়। তবে এ ছবিটির মধ্যে অসংগতি রয়েছে এমন আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।
৩। ১৯৩০ সালে নির্মাণ হয়েছিল ‘অল কোয়াইট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট’। ছবিটিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ফ্রান্স, অস্ট্রিয়া, আমেরিকা, অষ্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও ইতালিতে। যুদ্ধের বিরুদ্ধে প্রচন্ড শক্তিশালী মনোভাবের এই চলচ্চিত্রটি নাজি শাসকদের পছন্দ হয়নি।
৪। ১৯৭৫ সালে নির্মাণ করা হয় ‘স্যালো’ চলচ্চিত্রটি। েএ চলচ্চিত্রটি ইতালি, ফিনল্যান্ড, অষ্ট্রেলিয়া, জার্মানি, নিউজিল্যান্ড, নরওয়েতে নিষিদ্ধ। । পিয়েরে পাওলো পাসোলিনির শেষ ও সেরা মাস্টারপিস হিসেবে খ্যাত এই বিখ্যাত চলচ্চিত্রটিকে সবাই মনে রাখবে। খুব অবাক ও অদ্ভূতভাবে চলচ্চিত্রটি তৈরির কিছুক্ষণ বাদেই খুন হন পিয়েরে পাওলো। তার খুনের ব্যাপারটা তখন বেশ সাড়া জাগায় ভক্ত মহলে।
৫। ১৯৮১ সালে নির্মিত হয় ‘দ্য ইভিল ডেড’। এ ছবিটি সিঙ্গাপুর, ফিনল্যান্ড, ইউকে, জার্মানি, আইসল্যান্ড, আয়ারল্যান্ডে নিষিদ্ধ। স্যাম রাইমি নির্মিত সর্বকালের সেরা এই হরর মুভিটি মুক্তির পরপরই সাড়া ফেলেছিল পুরো পৃথিবীতে।
৬। ১৯৭১ সালে নির্মাণ করা হয়েছিল ‘অ্যা ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ’ ছবিটি। এটি আয়ারল্যান্ড, ইউকে, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, স্পেন, দক্ষিণ কোরিয়াতে নিষিদ্ধ। তবে বাধ্য হয়ে ছবিটির মুক্তিকে বন্ধ করতে চেয়েছিলেন নির্মাতা স্ট্যানলি নিজেই। কারণ নিজের পরিবারের ওপর একের পর এক মৃত্যুর হুমকি আসছিল। পরে অবশ্য ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল। আর বিভিন্ন দেশে নিষেধাজ্ঞা নিয়েও বেশ ভালো ফল করেছিল।
৭। ১৯৭২ সালে ‘লাস্ট হাউজ অন দ্য লেফট’ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ হয়েছিল। এটি ইউকে, সিঙ্গাপুর, আইসল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, নরওয়ে, জার্মানি, অষ্ট্রেলিয়াতে নিষিদ্ধ করা হয়। ১৯৬০ সালে অস্কার পুরষ্কার প্রাপ্ত ইঙ্গমার বার্গম্যানের মাইটি দ্য ভার্জিন স্প্রিং এর ওপর ভিত্তি করে নির্মিত এ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন ওয়েস ক্র্যাভেন।
৮। ১৯৭২ সালে ‘লাস্ট ট্যাঙ্গো ইন প্যারিস’ সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছিল। এরপর এ ছবিটি ইউকে, চিলি, দক্ষিণ কোরিয়া, পর্তুগাল, অষ্ট্রেলিয়া, ইতালি, কানাডা, সিঙ্গাপুরে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটি দেশে নিষিদ্ধ হওয়া এই চলচ্চিত্রটিতে আমেরিকার একজন মাঝ বয়সী হোটেলিয়ার আর সদ্য তারুণ্যে ভরপুর এক তরুণীর ভালোবাসার গল্প নিয়ে গড়ে ওঠে চলচ্চিত্রটি।
৯। ১৯৭৮ সালে ‘আই স্পিট অন ইউর গ্রেভ’ শিরোনামে নারীবাদের উপর চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা হয়। পরে এ ছবিটি নিষিদ্ধ করা হয় অষ্ট্রেলিয়া, ফিনল্যান্ড, ইউকে, আয়ারল্যান্ড, জার্মানি, নরওয়ে, আইসল্যান্ড, কানাডা, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও চীনে।
১০। ১৯৭৯ সালে নির্মিত হয়েছিল ‘মন্টি পাইথনস লাইফ অব ব্রায়ান’ চলচ্চিত্রটি। এটি নরওয়ে, সিঙ্গাপুর, আয়ারল্যান্ডে নিষিদ্ধ করা হয়। ব্রায়ান কোহেন নামক এক ইহুদীর জীবন নিয়ে তৈরি এ চলচ্চিত্র। ছবিটি সারা বিশ্বে মুক্তির পরপরই ঝড় তুলে।
৩১ জানুয়ারি, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন