বিনোদন ডেস্ক: ভারতে কয়েক লক্ষ গ্রাম রয়েছে। জনসংখ্যা প্রায় ১৩০ কোটির কাছাকাছি। তবে সেই গ্রামগুলির মধ্যে এমন অনেক গ্রাম আছে যা অন্যান্য গ্রামের থেকে অনেকটাই আলাদা। আর তা অভিনব বৈশিষ্ট্যের কারণে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে।
তেমনই একটি গ্রামের নাম সামনে এসেছে। যে গ্রামে সমস্ত মহিলারাই বিধবা। হ্যাঁ, ঠিকই শুনেছেন। যে গ্রামটার কথা বলা হয়েছে য়েটা রাজস্থানে রয়েছে। রাজস্থানের বুন্দি জেলায় অবস্থিত বুধুপুরা গ্রামটিকেই বিধবাদের গ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
সবথেকে অবাক করা বিষয় হল, এই গ্রামের অধিকাংশ পুরুষই মারা গেছেন। এমনকি, এই মৃত্যুর বিষয়ে সবাই অবগত হলেও কোনো সঠিক উদ্যোগ না নেওয়ায় রীতিমতো বিধবাদের গ্রামে পরিণত হয়েছে এই এলাকা।
এই গ্রামটি রাজস্থানে অবস্থিত রয়েছে। রাজস্থানের বুন্দি জেলায় অবস্থিত বুধুপুরা গ্রামটিকেই বিধবাদের গ্রাম হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। সেখানকার খনিতে কাজ করতে গিয়ে বেশিরভাগ পুরষের মৃত্যু ঘটেছে। পাশাপাশি, সেখানকার জনসংখ্যার অধিকাংশই সিলিকোসিস রোগে আক্রান্ত।
আর এই রোগই ক্রমাগত কেড়ে নিচ্ছে প্রাণ। মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজস্থানের বুধপুরা গ্রামে বড় আকারের বেলেপাথর ভাঙার কাজ করা হয়। এদিকে, পাথর ভাঙার সময় সেখান থেকে নির্গত সিলিকা ধুলোর আকারে শ্রমজীবী মানুষের শরীরের ভেতরে গিয়ে তাদের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়।
এমনকি, তারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হয়ে যায়। এমতাবস্থায়, সময়মতো চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু ঘটে তাদের। বুধপুরা গ্রামের ৪০ বছর বয়সি জুম্মা বাই একটি পাথর খাদানে কাজ করেন। দুই দশক আগে স্বামীকে হারিয়েছেন তিনি।
এখন তার তিন মেয়েও খাদানে কাজ করে সংসার চালায়। যখন তিনি হাতুড়ি দিয়ে বড় পাথরে আঘাত করে, তখন তিনি তার মাথায় থাকা ঘোমটা দিয়ে মুখ ঢেকে রাখেন। তারা দৈনিক ১০ ঘন্টা এই কাজ করেন। পাশাপাশি, জুম্মার সাথে থাকা বাকি মহিলাদের অধিকাংশরই স্বামী সিলিকোসিসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
জুম্মা বাইয়ের মতো বুধপুরা গ্রামের শতাধিক মহিলা তাদের স্বামীকে হারিয়েছেন। আর তারপরেই সংসার চালাতে তারা নিজেরাই এই কাজ করছেন। এমনকি, সিলিকোসিসে তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন।
এই প্রসঙ্গে এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, সেখানকার রোগীদের শ্বাসকষ্টজনিত রোগ বেশি হয়। প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষই সিলিকোসিস নামক একটি গুরুতর রোগে ভুগছেন। এমতাবস্থায়, যতক্ষণে এই রোগীদের রোগ শনাক্ত হয় ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে যায়।
তাই, সঠিক চিকিৎসারও সুযোগ থাকে না। এদিকে, এই পাথর খাদানে কাজের কারণে শত শত পরিবারের জীবন নষ্ট হলেও সরকার বা খাদান মালিকদের কাছ থেকে তেমন কোনো সাহায্য মেলেনা বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে, কিছু সংস্থা তাদের সাহায্য করতে এগিয়ে আসে।