বিনোদন ডেস্ক: জবাব দিতে না পেরে দুর্নীতি ইস্যুতে মিডিয়ার উপরই চোটপাট সাংসদ নুসরাত জাহানের। এদিন কলকাতায় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠক করে নুসরাত তোপ দাগলেন, মিডিয়া ট্রায়াল চলছে। আরও বললেন, 'না জেনে কাউকে অ্যালিগেশন দেবেন না। অর্ধসত্য খুব ভয়ংকর।'
সাংবাদিক বৈঠক করে নুসরাত দাবি করেন, 'শুটিংয়ের জন্য আউটডোরে ছিলাম। তাই গতকাল আমি আসতে পারিনি। আমি কৈফিয়ৎ দিতে এখানে আসিনি। ব্যাখ্যা তারা দেয়, যারা ভুল করে। যাদের মনে অন্যায় থাকে। আমি আপনাদের কাছে এসেছি, কারণ মিডিয়া ট্রায়াল চলছে। এটি আদালতের বিচারাধীন বিষয়। এখন যে কোর্ট কেসে পেন্ডিং আছে, সেই জুডিশিয়াল ম্যাটারে ইন্টারফেয়ার করা কোনও সভ্য সমাজের কাজ নয়।'
নুসরাতের দাবি, 'এই কোম্পানি থেকে ২০১৭ সালের ১ মার্চ আমি রিজাইন করি। আমার বাড়ি দুর্নীতির টাকা দিয়ে কেনা নয়। এই কোম্পানি থেকে আমি লোন নিই। ১ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ২৮৫ টাকা লোন নিই। ২০১৭ সালের ৬ মে সুদসহ ১ কোটি ৪০ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৫ টাকা ফেরৎ দিই এই কোম্পানিতে।
সব ব্যাংক ডিটেইলস ও রেকর্ড আমার কাছে আছে। আমি কোনওদিনই এরকম কোনও কাজ না করেছি, না করব। ৩০০ শতাংশ চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, দুর্নীতির সঙ্গে আমি কোনওভাবেই জড়িত নয়। কোম্পানি আমাকে লোন দিয়েছিল। সেই লোন আমি সুদ সহ ফেরৎ দিয়েছি। ব্যাংক ডিটেইলস-এ তার ভেরিফায়েড প্রমাণ আছে। এখানে কোনওভাবেই কোনও রাজনৈতিক বিষয় নেই। রাজনীতির কোনও যোগ নেই।'
নুসরাতের দাবিতেই সব 'হিসাব' মিলছে না! কারণ যখন এই অপরাধটা হয়েছে, তখন ২০১৪ সালে তিনি কোম্পানির একজন অন্যতম ডিরেক্টর। ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত তিনি ওই কোম্পানির একজন অন্যতম ডিরেক্টর ছিলেন। ৩ বছর, ২০১৭ সালের মধ্যে ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা ছিল! এদিকে ওই সময় তিনি ওই কোম্পানি থেকে লোন নিয়ে তার ফ্ল্যাটটি কেনেন।
ফলে প্রশ্ন উঠছে, তিনি ব্যাংক থেকে লোন না নিয়ে কেন কোম্পানি থেকেই লোন নিলেন? পদত্যাগ করলেই সব দায়মুক্ত হওয়া যায়? এই সব প্রশ্নের কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি তৃণমূল সংসাদ নুসরাত জাহান। বদলে প্রশ্নের সরাসরি উত্তর এড়িয়ে গিয়ে দায় চাপানোর চেষ্টা করলেন মিডিয়া ট্রায়ালের উপর।
মাত্র ৭ মিনিটেই সাংবাদিক বৈঠক শেষ করে প্রেস ক্লাব ছাড়েন প্রশ্নবাণে বেসামাল নুসরাত। নুসরাত জাহানের বিরুদ্ধে ২৪ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগে সরব রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপি। অভিযোগ, ফ্ল্যাট দেওয়ার নামে এই বিপুল অঙ্কের টাকা আত্মসাৎ করেছেন নুসরাত।
'প্রতারিত ব্যক্তিরা' অভিযোগ জানিয়েছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টেটে (ইডি)। নুসরাত জাহানের বিরুদ্ধে ২৪ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। সোমবার সন্ধ্যায় বেশ কয়েকজন প্রবীণ নাগরিক ইডির দফতরে হাজির হয়ে নুসরাত জাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। অভিযোগকারীদের সঙ্গে ইডির দফতরে গিয়েছিলেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পাণ্ডাকেও।