আন্তর্জাতিক ডেস্ক: অমিতাভ বচ্চনের সঞ্চালনায় ভারতের জনপ্রিয় রিয়্যালিটি শো ‘কৌন বনেগা ক্রোড়পতি’-কেবিসি। প্রতিযোগীদের সঙ্গে অমিতাভ বচ্চনের গল্প-আড্ডার পাশাপাশি জমে ওঠে কুইজ লড়াই। খুব শিগগির শুরু হতে যাচ্ছে কেবিসি-১৫। এদিকে নতুন সিজন শুরুর আগে সামনে এসেছে কেবিসি-৫ এর পাঁচ কোটির বিজয়ী সুশীল কুমারের বর্তমান জীবনের করুণ কাহিনী।
বিহারের বাসিন্দা কম্পিউটার অপারেটর ও গৃহশিক্ষক সুশীল কুমার ২০১১ সালে কেবিসির মঞ্চে পাঁচ কোটি রুপি জিতে নিয়েছিলেন। কিন্তু এক কানাকড়িও নিজের কাছে রাখতে পারেননি। সব টাকা হারিয়ে তিনি হয়েছেন দেউলিয়া। নিজের জীবনের সেই করুণ কাহিনী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজেই জানিয়েছেন তিনি।
তিনি জানান, ২০১৫-১৬ সালটা ছিল তার জীবনের একটা চ্যালেঞ্জিং অধ্যায়। মোটা টাকা পকেটে আসতেই চাকরিটাও ছেড়ে দেন। তখন প্রচুর অনুদান দিয়েছিলেন, যার বেশিরভাগটাই ছিল অপ্রকাশিত। এই ধরনের অনুদানে মাসে প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। এরপর অনেকে লোক তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেন। তিনিও অনেক সময় প্রতারিত হয়েছেন।
তিনি বলেন, যেটা আমি অনেকদিন পর বুঝতে পেরেছিলাম। স্ত্রীর আমাকে বারবার সাবধান করতো। কিন্তু, স্ত্রীর কথা শুনিনি। উল্টো ভাবতাম, স্ত্রীই বুঝতে পারছেন না। এর ফলে একটা সময় অশান্তি চরমে পৌঁছায়।
জীবন কীভাবে অন্ধকারের অতল গহ্বরে তলিয়ে গিয়েছিল সেই কথা জানান সুশীল। সেই সঙ্গে আরও জানান, দিল্লিতে সেই সময় একটা ভালো কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন। তিনি এক বন্ধুর সঙ্গে ব্যবসা শুরু করেছিলেন। সে জন্য তাকে প্রায় প্রতি মাসেই কয়েক দিনের জন্য দিল্লি যেতে হত। একটা সময় জামিয়া মিলিয়ার কিছু মিডিয়া ছাত্রদের সঙ্গে তার পরিচায় হয়। সেখান থেকে সিনিয়রদের সঙ্গে এরপর জেএনইউতে গবেষণারত ছাত্র এবং কিছু থিয়েটার শিল্পীদের সঙ্গে পরিচিতির গণ্ডিটা প্রসারিত হয়।
তারা যখন কোনও বিষয় নিয়ে কথা বলতেন—নিজেকে কুয়োর ব্যাঙ বলে মনে হতো সুশীলের। তাদের সঙ্গে গোল টেবিল বৈঠকে বসলেই চলত ধূমপান আর মদ্যপান। এভাবে ধীরে ধীরে মদ্যপানে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন। এতে ব্যবসাও ধসে পড়তে থাকে। একসময় দেউলিয়া হয়ে যান তিনি।
বিহারের বাসিন্দা সুশীল ২০২০ সালে জীবনের সেই কঠিন সময়ের কথা সবার সামনে এনেছিলেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ফেমাস হওয়ার থেকে ভালো মানুষ হওয়া অনেক ভালো। বর্তমানে একজন পরিবেশকর্মী ও সমাজকর্মী হিসেবে কাজ করছেন। কেবিসির নতুন সিজন শুরুর আগে আবারও আলোচনায় এসেছে কেবিসি-৫ বিজয়ীর জীবনের সেই করুণ কাহিনী।