বিনোদন ডেস্ক : বান্দরবানের থানচি উপজেলায় ‘নাদান’ সিনেমার শুটিংয়ে গিয়ে বিপাকে পড়ে অভিনেতা শ্যামল মাওলাসহ পুরো শুটিং ইউনিট। বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে শহরের সোনালী ও কৃষি ব্যাংকের শাখায় ডাকাতি করেছে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী।
এসময় ঘটনাস্থলের ঠিক পাশেই একটি হোটেলে অবস্থান করছিল ‘নাদান’ সিনেমার পুরো টিম। যেখানে ছিলেন অভিনেতা শ্যামল মাওলা, তার স্ত্রী মাহা সিকদার, পরিচালক ফরহাদ চৌধুরী, অভিনেতা এরফান মৃধা শিবলু, চিত্রনায়ক সাইফ খান ও অভিনেত্রী সায়মা স্মৃতিসহ অনেকে।
পুরো ঘটনায় ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে পুরো শুটিং টিম। সেখানকার অভিজ্ঞতা জানিয়ে অভিনেত্রী সায়মা স্মৃতি এক গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বান্দরবানের থানচির একদমই দুর্গম এলাকায় শুটিং করতে এসেছি আমরা। প্রায় ৭০ ভাগই শুটিং শেষ আমাদের। অল্প কিছু গল্প বাকি। আর এমন সময়ে। এক ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হলাম, যা ভাবনাতেও ছিল না। সারাটা দিন যে কী একটা পরিস্থিতিতে কেটেছে, সেটা বোঝানো সম্ভব নয়। যেন চোখের সামনেই নিজের মৃত্যু দেখতে পাচ্ছিলাম।’
এই অভিনেত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের এখানে সন্ত্রাসীরা গান ফায়ার করেছে। যা চোখের সামনে থেকে স্পষ্ট দেখেছি। ওই সময় প্রতিটা সেকেন্ডে বুক ধড়পড় করছিল।’
সায়মা বলেন, ‘বুধবার বিকেলের দিকে একটা লেকে অল্প পরিসরে শুটিংয়ের জন্য গিয়েছিলাম আমরা। সেখানে যাওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই স্থানীয়রা আমাদের শুটিং দেখার জন্য ভিড় জমায়। জেনেছি এর আগে সেখানে আমাদের মতো ওপেন শুটিং হয়নি। তো কিছুক্ষণ শুটিং করার পরই কয়েকটি গাড়ি আসে এবং তারা তিনটি গান ফায়ার করে। ওই সময় স্থানীয় কয়েকজন আমাদের বলছিল যে, আপনারা শিগগিরই চলে যান। প্রাণে বাঁচতে চাইলে চলে যান। পরে আমরা যে অবস্থায় ছিলাম, তখন দৌড়াদৌড়ি শুরু করি। কিন্তু কোনো গাড়ি ছিল না। পরে বিজিবির সহায়তায় আমরা কোনোভাবে ওই জায়গা ত্যাগ করি। তারপর বান্দরবান শহরে আসি।’
এদিকে এ ঘটনার পরপরই ঢাকায় ফিরে এসেছে শ্যামল মাওলা ও তার স্ত্রী মাহা সিকদার। বৃহস্পতিবার দুপুরে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে বিষয়টি জানিয়েছেন মাহা নিজেই। একইসঙ্গে এই ঘটনায় যারা তাদের নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন ও পাশে ছিলেন, তাদের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন অভিনেত্রী।
প্রসঙ্গত, গেল মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত নয়টার দিকে ৭০ থেকে ৮০ জনের একটি সশস্ত্র দল রুমাতে সোনালী ব্যাংকে লুটপাট চালায়। এসময় তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে ১৪টি অস্ত্র লুট করে এবং সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এর একদিন পরেই থানচিতে দুইটি ব্যাংকে ডাকাতি করে একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী।