বিনোদন ডেস্ক : একসময়ের পর্দার সুপারহিট জুটি শাকিব-অপুর বাস্তব জীবনও যেন সিনেমার গল্প। একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি হিট দেওয়া সিনেমায় কাজ করা, লুকিয়ে প্রেম, অতঃপর লুকিয়ে বিয়ে, তারপর বিচ্ছেদ!
এখনো চর্চায় তাদের অতীতের দাম্পত্য জীবন ও বর্তমান বন্ধুত্ব। ২০০৮ সালের ১৮ এপ্রিল বিয়ে হয়েছিল শাকিব খান ও অপু বিশ্বাসের। ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জন্ম হয় তাঁদের সন্তান আব্রাম খান জয়ের।
শাকিব-অপু দুজনই সন্তান জন্মের বিষয়টি গোপন রাখেন। ২০১৭ সালের ১০ এপ্রিল একটি টিভি চ্যানেলের সরাসরি অনুষ্ঠানে এসে বিয়ে ও সন্তানের খবর ফাঁস করেন অপু বিশ্বাস। পরের বছর ২০১৮ সালের ১২ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁদের।
এই সাবেক দম্পতিকে ঘিরে হয়ে গেছে অনেক কিছু।
তাঁদের বিচ্ছেদ জানাজানি হলেও বিয়ে নিয়ে তেমন তথ্য জানেন না ভক্তরা, দেখা হয়নি বিয়ের ছবিও। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অপু বিশ্বাস বিয়ে প্রসঙ্গে কথা বলেন। তবে বিস্তারিত তেমন কিছু বলেননি তিনি। তাঁদের বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন প্রযোজনা ব্যবস্থাপক মামুনুজ্জামান মামুন।
শাকিব-অপুর বিয়ে প্রসঙ্গে এবার মুখ খুললেন তিনিও। মামুন শুধু বিয়ের সাক্ষীই নন, শাকিব-অপুর বিয়ের জোগাড়যন্ত্রও তাঁর করা। তিনিই লুকিয়ে রেখেছিলেন কাজিকে। কেননা হুট করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শাকিব-অপু। মামুনকে কাজি ডাকতে বললেও তিনি ভরসা পাচ্ছিলেন না। তার ধারণা ছিল, যেকোনো সময় মত বদলাবেন তারা।
মামুন বলেন, ‘মনে প্রাণে আছো তুমি’ ছবির শুটিং চলা অবস্থায়ই শাকিব-অপু বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। তখন মিরপুর শাহ আলী মাজার রোডের একটি বাসায় থাকতেন অপু দিদি। হঠাৎ করেই একদিন শাকিব ভাই তার কালো রঙের গাড়িতে করে আমাকে সেখানে নিয়ে গেলেন। সেখানেই তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। পরে দুজন বিষয়টি আমাকে জানালেন এবং কাজি ডাকতে বললেন।
আমি শাকিব ভাইকে বললাম, বিয়ে তো অনেক বড় ব্যাপার, ভেবেচিন্তে কাজটি করেন। দিদিকেও একই কথা বললাম। কিন্তু দুজনই সিদ্ধান্তে অটল। তারা বললেন, ‘বিয়ের সংবাদ গোপন থাকবে। একসময় বড় অনুষ্ঠান করে সবাইকে জানাব আমরা।’ বিয়ের পুরো বিষয়টি তখন শুধু অপুর মেজো বোন লতা ও শাকিবের চাচাতো ভাই মনির জানতেন। লতাও আমাকে বললেন, ‘তারা যখন চাইছে, তখন আপনি কাজি ডাকেন।’
বিয়ের কাজি প্রসঙ্গে মামুন বলেন, আমি এর মধ্যে ফরিদপুরে শাকিব ভাইয়ের বাড়ির কাছ থেকে মজিবুর রহমান নামের এক কাজি সাহেবকে নিয়ে আসি। তারা সিদ্ধান্ত বদলাতে পারেন ভেবে কাজি সাহেবকে ঢাকায় এনে দুই দিন গোপন করে রাখলাম! দেরি দেখে অপু আমাকে বললেন, ‘কাজি আনছেন না কেন? শাকিব কি আমাকে বিয়ে করতে চাইছে না?’ আবার শাকিব ভাইয়েরও একই জিজ্ঞাসা, ‘অপু কি আমাকে বিয়ে করতে চাইছে না?’ বাধ্য হয়ে শাকিব-অপুর বিয়ের প্রস্তুতি শুরু করেন মামুন।
মামুন বলেন, এরপর বাধ্য হয়ে আমি তাদের বিয়ের প্রস্তুতি নিতে শুরু করলাম। বিয়ের আগের দিন শাকিব ভাই অপু দিদির জন্য একটি হীরার সেট ও একটি লেহেঙ্গা কিনেছিলেন। শাকিব ভাই এখন যে বাসায় থাকেন, ওই বাসায় বিয়ের ব্যবস্থা করা হলো। আসরের নামাজের ঠিক আগে আগে বিয়ে পড়ানোর সিদ্ধান্ত হলো।
আমি কাজি সাহেবকে নিয়ে গেলাম। এরই মধ্যে অপু দিদি ও তার বোন লতা এসে হাজির হলেন। বিয়ের সময় আমি অপু দিদির উকিল বাবা হিসেবে কাবিননামায় স্বাক্ষর করি। লতাও অপুর পক্ষে স্বাক্ষর করেন। আর শাকিব ভাইয়ের চাচাতো ভাই মনির স্বাক্ষর করেন তার পক্ষে। বিয়ের দেনমোহরটা বড় অঙ্কেরই হয়েছিল। অঙ্কটা না হয় নাই বললাম। তবে ওই সময় অপু দিদি বলেছিলেন, ‘দেনমোহর দিয়ে কী হবে, সংসারটাই বড়।’ বিয়ের ঘণ্টা দুয়েক পর অপু ও লতা তাদের বাড়িতে চলে যান।
তবে শেষ পর্যন্ত টেকেনি তাঁদের বিয়ে। ২০১৮ সালের ১২ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিবাহবিচ্ছেদ হয় তাঁদের।