বিনোদন ডেস্ক : টলিপাড়ার ব্যস্ততম অভিনেত্রীদের একজন অপরাজিতা আঢ্য। দুই যুগেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ার অভিনেত্রীর। যদিও শোবিজাঙ্গনে নামডাক তৈরির আগেই মাত্র ১৯ বছর বয়সে সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার অতনু হাজরাকে বিয়ে করেন তিনি।
বিয়ের পর স্বামীকে নিয়ে ২৭ বছর কাটিয়ে ফেলেছেন এই অভিনেত্রী। কিন্তু এখনও সন্তানের মা হতে পারেননি। কেনো এখনও সন্তানের মুখ দেখেননি অপরাজিতা-অতনু দম্পতি, সে বিষয়েই সম্প্রতি একটি ইউটিউব চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন তিনি।
অপরাজিতা আঢ্য বলেন, ‘আমি বায়োলজিক্যাল মাদারে বিশ্বাসী নই। কারণ আমি মনে করি, শুধু জন্ম দিলেই মা-বাবা হওয়া যায় না। আমাদের জীবনে এরকম অনেকগুলো বছর গেছে, যখন আমি ও আমার স্বামী একে-অপরকে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় দেখেছি।
ও যখন ঢুকছে, আমি তখন ঘুমাচ্ছি। আমি যখন বাড়ি ফিরছি, তখন ও ঘুমাচ্ছে। ঘুমের মধ্যে একজন অন্যজনকে বিদায় দিয়েছি। একদিন ও বলল, আমি বিরক্ত হয়ে গেছি। তারপর ও আর্লি রিটারমেন্ট নিয়ে নিল। আমি তো সেটা পারব না, আমি আরো কাজ করতে চাই, তাই কাজ করছি।’
একান্নবর্তী পরিবারে জন্ম ও বেড়ে ওঠা অপরাজিতা আঢ্যর। বিয়ের পরও পেয়েছেন একান্নবর্তী পরিবার। এ তথ্য উল্লেখ করে অপরাজিতা আঢ্য বলেন, ‘আমাদের সন্তান নিয়ে সেভাবে প্ল্যানিং কখনো করা হয়নি বা হয়ে ওঠেনি বা হয়তো কোনো শারীরিক প্রতিবন্ধকতা ছিল, সে কারণেও হতে পারে। সেটা নিয়ে আমরা কোনো দিনই খুব একটা মাথা ঘামাইনি। আমাদের বাড়িতে অনেক বাচ্চা, তারা আমাদের মা-বাবা বলে মনে করে। তাই আমাদের মনে খেদ বা দুঃখ বা অনিশ্চয়তা কখনো তৈরি হয়নি।’
বায়োলজিক্যাল সন্তানের মা না হলেও ৪৬ বছর বয়সি অপরাজিতার একটি পাতানো মেয়ে রয়েছে। তার নাম গার্গি। সে পেশায় ব্যাংকার। অপরাজিতা-অতনুকে মা-বাবা বলে ডাকেন। গার্গির আসল বাড়ি হাওড়ায়। ১৬-১৭ বছর বয়স পর্যন্ত নিজের বাবা-মায়ের কাছেই থাকতেন। তারপর চলে আসেন অতনু-অপরাজিতার কাছে। গার্গির বয়স এখন ৩০ বছর।
গত ২৭ বছরে অনেক কিছু বদলে গেলও শুধু একটা জিনিসই বদলায়নি তার জীবনে। সেটা হল অপরাজিতার পদবী। এখনও তিনি অপরাজিতা আঢ্য, হাজরা পদবী ব্যবহার করেন না।
এ বিষয়ে এক সংবাদমাধ্যমকে সাক্ষাৎকারে অপরাজিতা বলেছিলেন, তার এই পদবীটা একান্ত নিজের। এই পদবীটার সঙ্গেই তিনি বড় হয়েছেন। তাই বিয়ের পর হঠাৎ করে ‘হাজরা’ পদবী ব্যবহার করতে চাননি। তাই এখনও নিজের বাবার বাড়ির পদবীই ব্যবহার করে চলেছেন।
বর্তমানে অপরাজিতা কাজ করছেন জল থই থই ভালোবাসা সিরিয়ালে। এখানে তিনি কোজাগরী চরিত্রে অভিনয় করছেন। তিন সন্তানের মা কোজাগরীর জীবনের নানান চড়াই-উৎরাই ঘিরেই এগিয়েছে সিরিয়ালের গল্প।
ছোটপর্দার বাইরেও অভিনয় ক্যারিয়ারে অনেক জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। তার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র হলো—‘চুপ কথা’, ‘গয়নার বাক্স’, ‘ওপেনটি বায়োস্কোপ’, ‘বেলা শেষে’, ‘প্রাক্তন’, ‘সমান্তরাল’ প্রভৃতি।