বিনোদন ডেস্ক : নিরজা দেখলেন শচিন রেমশ টেন্ডুলকার, যুবরাজ সিংহ। তাছাড়াও আমির খান, হৃত্বিক রোশন, অনিল কপূররাও নিরজার স্ক্রিনিং দেখলেন। কে এই নিরজা? নিরজা ভানোটের কাহিনী পড়লে, আপনিও হয়তো ভারতের এই সাহসিনীকে মনে মনে কুর্নিশ জানাবেন।
১৯৮৬-র ৫ সেপ্টেম্বর অভিশপ্ত বিমান প্যান অ্যাম- ৭৩-র ফ্লাইট পার্সার ছিলেন ২৩ বছর বয়সী নিরজা। মোট ৩৬০জন যাত্রী নিয়ে মুম্বাই থেকে করাচি, ফ্র্যাঙ্কফুর্ট হয়ে নিউ ইয়র্ক যাওয়ার কথা ছিল বিমানটির।
করাচির জিন্নাহ আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরের টারম্যাকে দাঁড়িয়ে থাকার সময় নিরাপত্তারক্ষীদের ছদ্মবেশে এসে বিমানটি হাইজ্যাক করে ৪ জঙ্গি। যেহেতু সেই সময় বিমানে পাইলট বা কো-পাইলট কেউই ছিলেন না, পার্সার হিসাবে বিমান এবং যাত্রীদের সমস্ত দায়িত্ব ছিল নিরজার উপরে।
লিবিয়ার একটি জঙ্গি সংগঠনের ওই ৪ জঙ্গির মূল উদ্দেশ্যই ছিল আমেরিকার নাগরিকদের হত্যা করা। আমেরিকান যাত্রীদের চিহ্নিত করার জন্য জঙ্গিরা তাদের পাসপোর্টগুলি নিরজাকে সংগ্রহ করতে বলে। বুদ্ধিমান নিরজা জঙ্গিদের মতলব বুঝতে পেরেই আমেরিকান যাত্রীদের পাসপোর্টগুলি লুকিয়ে ফেলেন।
বিমানের দখল নেওয়ার প্রায় ১৭ ঘণ্টা পরে যাত্রীদের উপর গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। একই সঙ্গে বিমানটি উড়িয়ে দেওযার জন্য বেশ কিছু বিস্ফোরক বেঁধে দেয় জঙ্গিরা। জঙ্গিদের হাত থেকে যাত্রীদের রক্ষা করতে বিমানের আপতকালীন দরজা খুলে যাত্রীদের বার করে দিতে শুরু করেন নিরজা।
চাইলেই নিজের প্রাণ বাঁচাতে সবার প্রথমে বেরিয়ে আসতে পারতেন নিরজা। যদিও, ওই সাহসিনী তা করেননি। শেষ পর্যন্ত জঙ্গিদের গুলিবৃষ্টির থেকে ৩টি শিশুকেআড়াল করতে গিয়ে নিজের প্রাণ দেন নিরজা।
ওই ঘটনায় সবমিলিয়ে ২০জন যাত্রী নিহত হন। কিন্তু নিরজার সাহস ও বুদ্ধিমত্তার জন্যেই যে প্রাণহানি বাড়েনি, ভারত, পাকিস্তান এবং আমেরিকাও তা স্বীকার করে। ওই সাহসিনীকে মরণোত্তর অশোক চক্র দিয়ে সম্মানিত করে ভারত।
এখনও পর্যন্ত নিরজাই সর্বকনিষ্ঠ অশোক চক্র সম্মান প্রাপক। ২০০৪ সালে নিরজার সম্মানে একটি বিশেষ স্ট্যাম্প প্রকাশ করে ভারতীয় ডাক বিভাগ।২০০৫ সালে আমেরিকা নিরজাকে মরণোত্তর ‘জাস্টিস ফর ক্রাইমস অ্যাওয়ার্ড’ সম্মান প্রদান করে। নিরজার ভাইয়ের হাতে এই সম্মান তুলে দেওয়া হয়। নিরজার নাম ভূমিকা অভিনয় করছেন সোনাম কাপুর।
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস