বিনোদন ডেস্ক : এক সময়ের আলোচিত-সমালোচিত মডেল ও অভিনেত্রী সানাই মাহবুব শোবিজকে বিদায় জানিয়ে আবু সালেহ মুসা নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংসারী হয়েছিলেন। এরপর বিভিন্ন সময় স্বামীর সঙ্গে ছবি পোস্ট করতে দেখা যায় তাকে। মাঝেমধ্যে দুজনে লাইভে এসেও নেটিজেনদের সঙ্গে সময় ভাগ করে নিতেন।
বিয়ের এক বছরের মাথায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমমে দাম্পত্য সমস্যা ও বিচ্ছেদের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এদিকে জানা যাচ্ছে ফের বিয়ে করেছেন এই সমালোচিত নায়িকা। তবে সানাইয়ের পরিবার বলছে, বিয়ের বিষয়টি তারা জানে না।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সোহেল এফ খান (৪৫) সুইডেন প্রবাসী ব্যবসায়ীর সঙ্গে ১ কোটি ১ লাখ ১ টাকা দেনমোহরে তার বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে। বিয়ের খবরটি নিশ্চিত করেছেন সানাই নিজেই।
সানাই মাহবুব বলেন, ‘পারিবারিক জটিলতার কারণে বিয়ের বিষয়ে এখনি বিস্তারিত জানানো সম্ভব হচ্ছে না। জানুয়ারিতে আনুষ্ঠানিকভাবে হতে পারে তখন বিস্তারিত জানাবো। বিয়েতে দেনমোহর ছিল ১ কোটি ১ লাখ ১ টাকা। তবে এক টাকাও উসুল করা হয়নি। পুরোটাই বাকি। আর দেনমোহরের টাকার বিষয়টি আমি কোনো জোরাজোরিও করিনি পুরোটাই তার ইচ্ছেতেই হয়েছে। এক বছর হয়েছে আমাদের পরিচয়ের। পরিচয়ের পর আমাদের মধ্যে একটা ভালো বোঝাপড়া ও বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছে। একপর্যায়ে আমরা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগের স্বামীর বিষয়ে তো আপনারা আগেই জেনেছেন। আমরা আলাদা হয়ে গেছি অনেকদিন আগে।’
এদিকে সানাইয়ের মা মাকসুদা খাতুন মেরি বলেন, ‘নতুন করে কোনো বিয়ের বিষয় জানা নেই। এটা ভুল কথা আমার মেয়ে চাকরি করে। আর আমার জামাইয়ের চাকরি চলে গেছে এজন্য রাগ করে এগুলো বলতেছে। আমি টিচার মানুষ চাকরি শেষের পথে মিথ্যা বলবো না আমার জামাই একটু অলস। সানাই রাগ করে এগুলো লিখছে যাতে করে জামাই কাজ করে। তবে আমার জামাই খুব ভালো ছেলে, তবে ওর ব্রাক ব্যাংকের চাকরিটা হয়ত ফেরত পাবে। জামাইয়ের পরিবারের সবাই ভালো মানুষ।’
সানাইয়ের স্বামী আবু সালেহ মুসা বলেন, ‘আমরা তো একসঙ্গে একই বাসায় আছি। সানাই চাকরি করছে। তার মশারি টাঙানো থেকে সব কাজ করে দেই। নতুন করে বিয়ের বিষয় কেমনে কি বুঝতেছি না। আসলে মিডিয়া জগতের মানুষ গুলোর ভাইরাল নেশা। এটাও হতে পারে তার কারো সাথে সম্পর্ক থাকতে পারে। ও যেখানে চাকরি করে সেখানে তো বিভিন্ন কাস্টমারের সঙ্গে কথা বলে। আগে এসব খোঁজ রাখতাম এখন রাখি না।
২০২২ সালের ২৭ মে পারিবারিক আয়োজনে কাউকে না জানিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে চেয়েছিল সানাইয়ের পরিবার। পরে ঠিকই জানাজানি হয়ে যায়। সানাইয়ের পৈতৃক নিবাস নীলফামারীতে। তার স্বামী মুসার বাড়িও একই জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের দক্ষিণ দুরাকুঠি এলাকায়।
যদিও এর আগে সানাই সাবেক এক মন্ত্রীকে বিয়ে করছেন এমন খবর প্রকাশ পেয়েছিল ২০১৯ সালে। সেসময় একটি সংবাদমাধ্যমকে আলোচিত এই অভিনেত্রী নিজেই সে খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছিলেন, পারিবারিকভাবেই বিয়ে করতে যাচ্ছি। (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে আমাদের বাগদান হয়ে গেল। আমার বাসাতেই আয়োজন হলো। সবার কাছে দোয়া চাই আমার নতুন জীবনের জন্য।
তারপর সে বিয়ে নিয়ে তেমন কিছু আর শোনা যায়নি। ওই খবর প্রকাশের তিন বছর পর আবু সালেহকে এ অভিনেত্রী। আবু সালেহর সঙ্গে বিয়ে ভাঙার বছরখানেক পর ফের বিয়ের পিঁড়িতে বসলেন সানাই।
সানাইয়ের জন্ম ঢাকার ধানমন্ডিতে হলেও তার পৈত্রিক নিবাস নীলফামারীতে। পড়াশোনার জন্য তিনি বেশ কিছুদিন রংপুরে ছিলেন। তার বাবা-মা উচ্চপদস্থ বেসরকারি কর্মকর্তা। সানাই এখন ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করেন। নাবিলা, স্মার্টেক্স, নাগরদোলা ইত্যাদি ফ্যাশন হাউজে মডেল হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর বিভিন্ন টেলিভিশন চ্যানেলে উপস্থাপিকা হিসেবেও কাজ করেছেন।
এরপর ২০১৬ সালের নভেম্বর মাসে ঢাকার গুলশান ক্লাবে একটু ফ্যাশন শো চলাকালীন সময়ে বাংলাদেশি চলচ্চিত্র নির্মাতা গাজী মাহবুবের সাথে সানাই এর পরিচয় হয়। গাজী মাহবুব তখন তার নির্মাণাধীন চলচ্চিত্র ভালোবাসা ২৪×৭ এর জন্য সানাইকে চিত্রনায়িকা হিসেবে পছন্দ করেন। এই চলচ্চিত্রে সানাই এর বিপরীতে অভিনয় করেন জায়েদ খান। এরপর তিনি সুপ্ত আগুন, সাহসী যোদ্ধা, ময়নার ইতিকথা, প্রতিশোধ, প্রতীক্ষাসহ প্রায় ৮টি চলচ্চিত্রে চিত্রনায়িকা হিসেবে অভিনয় করার জন্য চুক্তিবদ্ধ হন।