বিনোদন ডেস্ক : জীবনের ৪৫টি বসন্ত পেরিয়ে আজ ৪৬ বছরে পা দিলেন নব্বইয়ের দশকের তুমুল জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূর। ঢাকাই সিনেমার ইতিহাসে সবচেয়ে জনপ্রিয় ঢালিউড নায়িকা হিসেবে এখনো বিবেচনা করা হয় শাবনূরকে।
নানামাত্রিক চরিত্রে অভিনয়দক্ষতা দেখিয়ে শাবনূর যেভাবে দর্শকদের মন জয় করে নিয়েছেন, এতে তাকে আদর্শ হিসেবে মানেন এই প্রজন্মের অনেক নায়িকা। বাংলা চলচ্চিত্রের বহু প্রতিভাধর সেই চিত্রনায়িকার আজ জন্মদিন।
জন্মদিনের বিশেষ মুহূর্তে দেশের এক সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে জীবনের চরাই-উতরাই ও নানা রকম অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছেন শাবনূর। কথা বলেছেন আগামীর পরিকল্পনা নিয়েও। জন্মদিনে সবার দোয়া চেয়ে শাবনূর চলচ্চিত্র জগতের কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করেন।
ব্যক্তিজীবন নিয়ে বলতে গিয়ে কিছুটা আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন শাবনূর, ‘দীর্ঘ দেড় যুগের ক্যারিয়ারে যত ঝড়ঝাপটা আমার ওপর এসেছে, যত স্ক্যান্ডাল আমাকে ফেস করতে হয়েছে, পৃথিবীর অন্য কোনো শিল্পীকে বোধ করি অতটা করতে হয়নি।
আমার প্রথম ছবি ‘চাঁদনী রাতে’র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, নায়ক সালমান শাহ, নায়ক রিয়াজ, ফেরদৌস, এক বিদেশি নাগরিককে আমার সঙ্গে জড়িয়ে মিথ্যা সম্পর্কের গুঞ্জন, সালমানের হত্যা/আত্মহত্যার জন্য অভিযুক্ত হওয়া, একাধিকবার এফডিসির বিভিন্ন সমিতি কর্তৃক ব্যান হওয়া, উফ! কী ফেস করতে হয়নি আমাকে! একই সঙ্গে পারিবারিক নানা টানাপড়েনে অতিষ্ঠ ছিল আমার জীবন।
বিশেষ করে স্বামীর সঙ্গে আমার ডিভোর্স, অন্য যে কেউ হলে বোধ হয় পাগল হয়ে যেত, সমস্যা ভুলে থাকার জন্য মাদকের আশ্রয় নিত বা আত্মহত্যা করত। আমি কিন্তু সব নেগেটিভকে মনের জোরে পাশ কাটিয়ে জীবনটাকে পজিটিভবলি গড়ে তুলতে পেরেছি বলে সুখ আমার সঙ্গে বিট্রে করতে পারেনি।’ স্বামী অনিক মাহমুদের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে ২০২০ সালেই।
নতুন করে আর সংসার পাততে চান না জানিয়ে শাবনূর বলেন, ‘আমার আর সংসারী হওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। বিয়ের পর স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়া যেকোনো নারীর জন্য ভয়ংকর অভিজ্ঞতা। এ কারণেই বাধ্য হয়ে স্বামীকে ডিভোর্স দিতে হয়েছে আমার। অনেকে মনে করেন, একবার কারো প্রতারণার শিকার হলে আর কোনো পুরুষ মানুষকে বিশ্বাস বা বিয়ে করা যায় না। এটি ভুল ধারণা।
ভালোমন্দ পৃথিবীর সব কিছুতেই আছে। তাই বলে ভালো মানুষ যে আর পাওয়া যাবে না, তা কিন্তু নয়। তবে আমার আর বিয়ের ইচ্ছা না থাকার কারণ হচ্ছে একমাত্র পুত্র আইজানকে প্রতিষ্ঠা করা। সত্যিকারের মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা।’
পর্দায় ফেরা প্রসঙ্গে শাবনূর বলেন, ‘গত বছর রঙ্গনা নামে এক ছবিতে অভিনয়ের কাজ শুরু করেছিলাম। নানা কারণে ছবিটির কাজ এখনো শেষ হয়নি। শিগগিরই কাজে ফেরার ইচ্ছা আছে। চলচ্চিত্রের সময়টা এখন আবারও ভালোর দিকে যাচ্ছে। আমার বিশ্বাস, শিল্পের প্রতি আন্তরিক ও চলচ্চিত্রের সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে ছবির ব্যবসা আবারও ঘুরে দাঁড়াবে, আরো ভালো অবস্থানে যাবে। তখন অনেকে আবারও চলচ্চিত্র নির্মাণে ফিরবে।’
জন্মদিনে সবার দোয়া চেয়ে শাবনূর বলেন, ‘আজ আমার জন্মদিনে সবার দোয়া চাই আমার ও আমার সন্তান আইজানের জন্য। ওকে যেন মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি, আমরা দুজনই যেন প্রকৃত সুখী হয়ে জীবনের শেষ দিনগুলো মহাসুখে কাটাতে পারি।’