বিনোদন ডেস্ক : কিছুদিন আগেই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ঋষভ শেঠি পরিচালিত ‘কানতারা : চ্যাপ্টার ১’। সিনেমাটি মুক্তির পর প্রেক্ষাগৃহে রীতিমতো ঝড় তুলেছে। শুধু তাই নয়, ভেঙে চলেছে একের পর এক সিনেমার বক্স অফিস রেকর্ড। সেইসঙ্গে দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
কিন্তু এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে এক অবিশ্বাস্য পথচলা। শুনলে অবাক হবেন, এই সিনেমাটির অভিনেতা ও পরিচালক ঋষভের আসল নাম প্রশান্ত শেঠি, যে কি না এক সময় তিনি পানির বোতল ও চা পাতা বিক্রি করে সংসার চালাতেন। যার যাত্রা মোটেই সহজ ছিল না।
কাকতালীয়ভাবে সিনেমার জগতে প্রবেশ করেন তিনি।
বেঙ্গালুরুর একটি ফিল্ম স্কুলে পানি সরবরাহ করতে গিয়ে কোর্সের খোঁজ পান, আর সেদিনই ভর্তি হয়ে যান—সেই ঘটনাই বদলে দেয় ঋষভের জীবন।
২০১২ সালে ‘তুগলক’ সিনেমায় ছোট চরিত্রে অভিনয় দিয়ে তার যাত্রা শুরু। ২০১৪ সালে রক্ষিত শেঠি পরিচালিত ‘উলিদাভরু কান্দন্থ’-তে দুর্দান্ত অভিনয়ের পর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। অভিনয়ের পাশাপাশি পরিচালক হিসেবে তার অভিষেক ঘটে ২০১৬ সালের ‘রিকি’-র মাধ্যমে।
যদিও ছবিটি প্রত্যাশামূলক সাফল্য পায়নি। কিন্তু পরবর্তী ছবি ‘কিরিক পার্টি’ যেখানে অভিনয় করেছিলেন রক্ষিত শেঠি ও রাশমিকা মান্দানা। বাণিজ্যিকভাবে ছবিটি সফল হয়। সমালোচকদেরও প্রশংসা কুড়িয়েছিল। এই ছবিই ঋষভকে দক্ষ পরিচালক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। এরপর বেল বটম (২০১৯) ও গরুড় গমন বৃশভ বেহন (২০২১)-এ তার অভিনয় দর্শককে মুগ্ধ করে।
শোবিজে অভিষেকের দশ বছরের মাথায় তিনি নির্মাণ করেন অ্যাকশন থ্রিলার সিনেমা ‘কানতারা’। সিনেমাটি তুমুল আলোচনায় চলে আসে এবং কন্নড় সিনেমার ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বাধিক আয় করা ছবিগুলোর মধ্যে জায়গা করে নেয়।
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, ছবিটিতে পরিচালক নিজেই মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। তার নির্দেশনা ও অভিনয় উভয়ই দর্শক ও সমালোচকমহলে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিল। এই ছবির জন্য তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার লাভ করেন। যিনি একটা সময় জীবিকা নির্বাহের জন্য পানির বোতল বিক্রি করতেন তার জন্য সেই সাফল্য যেন এক স্বপ্নপূরণের এক রূপকথার গল্পের মতো।
২০১৯ সালে দ্য নিউজ মিনিট-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঋষভ শেঠি বলেছিলেন, ‘গ্র্যাজুয়েশন শেষ করার পর আমি কলেজ জীবনে করা কয়েকটি ছোট ব্যবসা থেকে কিছু টাকা জমিয়েছিলাম। জগ্গেশ স্যারের একটি সাক্ষাৎকার মনে পড়ে গেল, যেখানে তিনি বলেছিলেন, কীভাবে সিনেমায় সুযোগ পেয়েছিলেন। আমি ভেবেছিলাম, আমিও সেই পথেই পা বাড়াব। আমার মিনারেল ওয়াটারের ক্যান সরবরাহ করার একটি ব্যবসা ছিল। একদিন আমাকে বেঙ্গালুরুর মল্লেশ্বরমে এক অনুষ্ঠানে পানি সরবরাহ করতে বলা হয়। পরে জানলাম, সেটি ছিল একটি ফিল্ম স্কুলের উদ্বোধন। সেখানেই আমি কোর্সের সব তথ্য জেনে নিই এবং সেদিনই ভর্তি হয়ে যাই। এটা ছিল এক অদ্ভুত কাকতালীয় ঘটনা।’
প্রসঙ্গত, সদ্য মুক্তি পাওয়া ‘কান্তারা: চ্যাপ্টার ১’ সিনেমাটি ছিল তিন বছর আগে মুক্তি পাওয়া ‘কানতারা’ সিনেমার প্রিক্যুয়াল। মুক্তির ১২ দিনেই প্রায় ৬০০ কোটির মত আয় করেছে ছবিটি। শুধু ভারতেই আয় করেছে ৪৩৯ কোটি রুপি। সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস