বিনোদন ডেস্ক : সালমান শাহকে শেষবারের মতো দেখতে যাননি শাবনূর। এই নিয়ে নানা সময়ই প্রশ্ন ওঠে। কিন্তু সেই প্রশ্নের একেকজন একেকভাবে দেন। আসলে কেন শাবনূর দেখতে যাননি।
এ বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন অভিনেত্রী ডলি জহুর। এক সাক্ষাৎকারে ডলি জহুর জানান সেদিন তিনি ছিলেন শাবনূরের বাসায়। শাবনূরের বাড়ির টেলিফোনে আসা ফোনকলে জানতে পারেন সালমান মারা গেছেন।
সেদিনের কথা বলতে গিয়ে ডলি জহুর বললেন, ‘আমরা যারা একসঙ্গে শুটিং করছিলাম, যারা মেকআপ নিয়েছিলাম তাদের সবার স্কিন এলার্জি হয়েছিল।
আমার তো মুখ, কিন্তু শাবনূরের গলার কাছে যেহেতু খোলা থাকে, সেখানেও মেকআপ নিতে হয়। তাই ওর এলার্জিটা অনেক বেশি। ও সিঙ্গাপুরের চিকিৎসা করাতে গেল। তো সিঙ্গাপুর থেকে দুই তিন আগে ফিরেছে, আমার মনে হলো ওকে যে প্রেসক্রিপশনটা দিয়েছে সেটা দেখি।
সেই ভেবে আমি বাড়িতে বলে বের হলাম। ওদের বাসা কাছেই, সেদিন ছিল শুক্রবার। রাস্তাও ফাঁকা, আমি গ্রিন রোড ভুতের গলি থেকে বের হয়ে রিকশা নিয়ে ওদের বাসায় গেলাম।’
বাসায় থাকার সময়ই একটা ফোন এলো। শাবনূর সেই ফোন ডলি জহুরকে ধরতে বলেছিলেন, এমনটাই জানিয়ে ডলি জহুর বলেন, ‘একটা ফোন এলো, শাবনূর আমাকে বললো আন্টুস তুমি ফোনটা ধরো, ও আমাকে আন্টি বলে না আন্টুস বলে।
আর ও ল্যান্ড ফোন ধরে না। একটা ছেলে ফোন দিয়ে ওই পাশ থেকে জিজ্ঞেস করলো, ‘কে ভাবি নাকি?’ ফোন দিয়েছে মণ্ডল নামে একজন ডিরেক্টর। সে মার গলা শুনেই চিনে ফেলেছে। আসলে তখন আমরা এমনই ছিলাম, গলা শুনেই চিনে ফেলতাম। মণ্ডল বললেন, ‘ভাবি আপনি জানেন, সালমানকে হলি ফ্যামিলিতে নিয়ে আসছে, ও অ্যাকসিডেন্ট করেছে। আমি এখনই পরিচালক সমিতি যাচ্ছি খোঁজ নিতে।’ অবাক হলাম। আমি বললাম, ‘তুই আমাকে গিয়ে এক্ষুনি জানা।’
ডলি জহুর বলেন, ‘শাবনূর পাশ থেকে শুনে বললো কী হয়েছে, ওকে বললাম, সালমান নাকি অ্যাকসিডেন্ট করেছে। সে শুনে বললো, ‘না ও কেন অ্যাকসিডেন্ট করবে।’ এরপর মণ্ডল নয়, ফোন করলো দিলু ভাই। আমি কণ্ঠ শুনেই চিনে ফেললাম,বললাম- ‘আমি ডলি জহুর বলছি।’ দিলু ভাই বললেন, ‘ও ভাবি আপনি ওখানে, শুনছেন নাকি?’ আমি বললাম ‘হ্যাঁ, শুনলাম; কী খবর বলেন তো। উনি বললেন, ‘খবর বেশি ভালো না। হলি ফ্যামিলি রাখে নাই। ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যাচ্ছি।’ আমি বললাম, ‘ও আচ্ছা। আমাকে জানায়েন ভাই।’’
এই ঘটনা শুনে শাবনূর নার্ভাস হয়ে যান, ‘ডলি জহুরেরও হাত কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যায়-সে মুহূর্তের পরিস্থিতি জানিয়ে ডলি জহুর বলেন, আমার হাত কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে গেছে। হলি ফ্যামিলিতে রাখলো না, এদিকে শাবনূর শুনে চিল্লাচিল্লি শুরু করলো, প্রচণ্ড নার্ভাস হয়ে গেছে। বারবার বলছিল, আন্টুস আন্টুস যেতে হবে। আমি বলি চুপ থাক, দেখি, শুনি। ওকে বকাও দিলাম। আমরা অপেক্ষা করছি, তারপর শাহ আলম কিরণ ফোন দিলো। ও ফোন রাখারই পরই কে যেন ফোন দিলো, বললো- ‘ও নাই।’ তারপরে শাবনূরের চিল্লানি শুরু হলো। ওর চিৎকার কান্নাতে আমি না অথর্ব হয়ে গেছি।
নির্মাতা এহতেশাম শাবনূরকে নিয়ে বের হতে নিষেধ করেন ডলি জহুরকে। এমনটা জানিয়ে ডলি জহুর বলেন,‘শাবনূর অনেক কান্নাকাটি করছিল, বাসা থেকে বের হতে চাইছিল। কিন্তু ওর মা বাসায় নেই, আমি কিভাবে বের হই। এরপর এহতেশাম দাদু ফোন দিয়ে বললেন, নূপুরকে বাসা থেকে বের হতে দিও না। ওর মা মনে হয় বাসায় নেই। তুমি ওকে আটকে রাখো। শাবনূর পাগলামি শুরু করেছে। আমাকে বারবার বলছে। তখন আমার হাত পা অবশ হয়ে আসতেছে, ওর কেমন লাগতেছে বলেন, ওর তো কো আর্টিস্ট। সেদিন ওর বাসায় সারাদিন ছিলাম, রাত ১২ টা পর্যন্ত ছিলাম।’