‘উড়তা পাঞ্জাবে’ কাঁচি কেন? সেন্সর বোর্ডের কাছে হাইকোর্টের প্রশ্ন

বিনোদন ডেস্ক : শহিদ কারিনা জুটির ‘উড়তা পাঞ্জাব’ ছবিটি নিষিদ্ধ করেছে ভারতীয় সেন্সর বোর্ড। তবে ৯০টি দৃশ্য কর্তন করার শর্তে ছবিটির সেন্সর দেয়া হবে বলে জানিয়ে দিয়েছিল সেন্সরবোর্ড। আর এ নিয়ে হাইকোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে।

এদিকে শহিদ কারিনা জুটির ‘উড়তা পাঞ্জাব’ ছবির বিভিন্ন দৃশ্যে সেন্সর বোর্ডের কাঁচি চালানোর সিদ্ধান্তের কারণ আজ (শুক্রবার) জানতে চেয়েছে বম্বে হাইকোর্ট।

ছবির ১৩টি বিষয়ে কাটছাঁট করার নির্দেশ দিয়েছে পহলাজ নিহালনির সেন্সর বোর্ড। বিচারপতি এস সি ধর্মাধিকারীর বেঞ্চ এ বিষয়ে বলিউডের অন্য একটি ছবির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জানায়, সম্প্রতি ‘গো গোয়া গন’ ছবিতেও মাদক-সমস্যা দেখানো হয়েছে। বিচারপতির প্রশ্ন, ‘যদি গোয়ার ক্ষেত্রে মাদকের বাড়াবাড়ি নিয়ে আপত্তি না থাকে, তবে ‘উড়তা পাঞ্জাব’র ক্ষেত্রে আপত্তি কেন?’

‘উড়তা পাঞ্জাব’ ছবিতে পাঞ্জাব, জালন্ধর, চণ্ডীগড়, অমৃতসর, লুধিয়ানার নাম এবং নির্বাচন, সাংসদ, বিধায়ক, সংসদের মতো শব্দগুলি মুছে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে সেন্সর বোর্ড। যার প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট জানতে চেয়েছে, বোর্ড কী করে এ ধরনের শব্দ ছেঁটে ফেলার নির্দেশ দেয়?

বোর্ডের আইনজীবী জানান, পাঞ্জাবের বাসিন্দাদের কথা মাথায় রেখে এবং ছবির অশালীন ভাষার প্রেক্ষিতে বোর্ড কিছু কাটছাঁট করার নির্দেশ দিয়েছে। এ নিয়ে আগামিকাল আবারও শুনানি হবে।

যে ১৩টি বিষয় ছেঁটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে সেন্সর বোর্ড, তার একটি প্রতিলিপি ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, ওই নির্দেশ মানলে ছবিতে অন্তত ৮৯ বার কাঁচি চালাতে হবে।

বোর্ডের নির্দেশের ব্যাপারে ছবির প্রযোজক অনুরাগ কাশ্যপ ফেসবুকে জানিয়েছেন, এর আগেও ছবি নিয়ে তিনি সমস্যায় পড়েছেন। কিন্তু এবার তাকে ‘ব্ল্যাকমেল’ করা হচ্ছে।

ঘটনাচক্রে, আজ একটি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে তথ্য এবং সম্প্রচারমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছেন, বিভিন্ন ছবিকে ছাড়পত্র দেওয়ার নিয়মে শীঘ্রই সংস্কার আনা হবে।

মন্ত্রী বলেন, ‘শ্যাম বেনেগাল কমিটির রিপোর্টের প্রথম ভাগ হাতে পেয়েছি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই নিয়মের পরিবর্তন করা হবে। প্রকৃত শব্দ হচ্ছে সার্টিফিকেশন, সেন্সরশিপ নয়।’

তিনি এ-ও স্বীকার করেন, সেন্সর বোর্ডে কিছু ‘রক্ষণশীল’ লোক রয়েছেন। ওই অনুষ্ঠানে জেটলির সামনেই অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাউত বলেন, ‘শিল্পীদের স্বাধীনতা অত্যন্ত জরুরি।’

সেন্সর বোর্ড পুনর্গঠন কমিটির প্রধান শ্যাম বেনেগাল গতকালই ছবিটি দেখেছেন। তিনি বলেন, ‘ছবিতে একটি সমস্যা দেখানো হয়েছে। তার অর্থ এই                   নয় যে ছবিটি পাঞ্জাব-বিরোধী।’ তবে সেন্সর বোর্ডের কাটছাঁটের নির্দেশ নিয়ে তিনি মন্তব্য করতে চাননি।  

অভিযোগ উঠেছে, ভোটমুখী পাঞ্জাবে শিরোমণি অকালি দল-বিজেপি’র সরকারের ভাবমূর্তির কথা মাথায় রেখে ছবিতে কাটছাঁট করতে বলেছেন সেন্সর বোর্ডের প্রধান নিহালনি। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতে নিহালনি জানিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘চামচা’ হতে তার আপত্তি নেই। কেন্দ্রীয় যোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ আজ বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজেকে দেশের প্রধান সেবক হিসাবে বর্ণনা করেন। প্রধান সেবকের কোনও চামচার প্রয়োজন নেই।’
১০ জুন, ২০১৬/এমটিনিউজ২৪/এসপি/এমএন