শুক্রবার, ০১ জুলাই, ২০১৬, ০১:৫৫:৫৭

‘তামিল-তেলুগু আমাদের সংস্কৃতি নয়, বাংলা সংস্কৃতির দিকে তাকাতে হবে’

‘তামিল-তেলুগু আমাদের সংস্কৃতি নয়, বাংলা সংস্কৃতির দিকে তাকাতে হবে’

বিনোদন ডেস্ক : একটা সময় ছিল যখন বাংলা সিনেমা তাকিয়ে থাকতো হিন্দি সিনেমার দিকে। হিন্দিকে অনুকরণ করতো। বিল্ডিংয়ের মাথা থেকে লাফিয়ে নীচে পড়ছে হিরো। ভিলেনের হাত থেকে নায়িকাকে বাঁচাতে ওটা করতেই হতো। এছাড়াও কিছু দৃশ্য ছিল কম্পালসারি। যেমন হিরোইনকে একবার স্নানঘরে দেখাতেই হত। শাওয়ার চলছে। শাওয়ারের জলে দুহাত দিয়ে মাথার চুল ভেজানোর দৃশ্য।

ভালো লাগার অভিব্যক্তি চোখেমুখে। গায়ে টাওয়েল জড়ানো। তারপর কাপড়ছাড়ার দৃশ্য। ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল তখন পায়ের দিকে। ভেজা টাওয়েলটা নীচে পড়ে গেল টুপ করে। নায়িকার পা দুটো সিক্ত। এসব হিন্দি থেকে আমদানি। উত্তম কুমারকে কখনও লাফাতে হয়নি বিল্ডিংয়ের মাথা থেকে। সুচিত্রা সেনকে টাওয়েল জড়িয়ে আবেদন (appeal) দেখাতে হয়নি। শুধু বাইকের পিছনে বসে - “এই পথ যদি না শেষ হয়ে”র পথ আজও শেষ হয়নি।

আসলে অনুকরণ করার প্রয়োজন পড়তো না। এত স্ট্রং চিত্রনাট্য থাকত, এত বাস্তবোচিত গল্প থাকত, যে কোনও দিন প্রয়োজন পড়েনি। সে আমলে মারপিটের দৃশ্যের জন্য আলাদা করে বাজেট রাখতে হত না। Visual Effects বা Graphic Arts-এর জন্যেও বাজেট থাকত না। এখন ছবি তৈরি হয় এসব কিছুর বাজেট ধরে। কটা পদ-সঙ্গীত (item song), কতজন সহনৃত্যশিল্পী (co-dancers), কটা বিদেশের দৃশ্য (foreign location) এসবকিছু ছবি তৈরির আগেই স্থির হয়ে যায়। অনুপ্রেরণার কেন্দ্রে অবশ্য একটা পরিবর্তন ঘটেছে। বম্বে থেকে সরে প্রেরণা এখন দক্ষিণভারতে সিনেমা থাকে। কখনও চেন্নাই, কখনও হায়দরাবাদ। তেলুগু ইন্ডাস্ট্রি এখন বাম্পার চলছে।

কিন্তু এভাবে আর কতদিন? ইনাডু ইন্ডিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঠিক সেই কথাটিই উঠে এলো ওপার বাংলা ভিনেতা ভিক্টর ব্যানার্জির মুখে। তিনি বললেন, “ও সব তেলুগু, তামিল আমাদের সংস্কৃতি নয়। ওভাবে চলবে না বেশিদিন। আমাদের নিজেদের সংস্কৃতির দিকেই আমাদের তাকাতে হবে।”

বাংলা, হিন্দি, অসমীয়া, ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ, জার্মান - মোট ৬টি ভাষায় অভিনয় করেছেন ভিক্টর ব্যানার্জি। অভিনয় করেছেন শ্যাম বেনেগল, মৃণাল সেন, সত্যজিৎ রায়, রোমান পোলানস্কি, জেমস আইভরি, ডেভিড লিন, জেরি লন্ডন, রাম গোপাল ভার্মাদের ছবিতে। চাঁচল জমিদার পরিবারে জন্ম ভিক্টরের। নাম ছিল পার্থ সারথি ব্যানার্জি। দীর্ঘ সাড়ে ৪ দশকের বেশি সময় ধরে রয়েছেন অভিনয় জগতে। ১৯৭০ সালে উত্তম কুমার, রঞ্জিত মল্লিক অভিনিত “দুই পৃথিবী” থেকে যাত্রা শুরু। আর আজ ২০১৬। ৪৬টা বছরে ৫০টি ছবিতে কাজ করেছেন।

বাংলা সিনেমার এই ঋদ্ধ শিল্পী হঠাৎই শুটিং এসে হাজির বর্ধমানের এক জমিদার বাড়িতে। চকদিঘির জমিদার বাড়ি। সেকালের আভিজাত্যের স্মৃতি এই সিংহ রায় বাড়ির গায়ে আজও লেগে আছে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মহাশয় নাকি এবাড়িতে এসেছেন বহুবার। এসেছেন আরও অনেক জ্ঞানীগুণিজন। ভিক্টর ব্যানার্জি তাদেরই নবতম সংযোজন।

১ জুলাই ২০১৬/এমটি নিউজ২৪/এসবি/এসএস

Follow করুন এমটিনিউজ২৪ গুগল নিউজ, টুইটার , ফেসবুক এবং সাবস্ক্রাইব করুন এমটিনিউজ২৪ ইউটিউব চ্যানেলে