ব্রাহ্মণবাড়িয়া: তানজীবা বিনতে তানভীর পরেন ঢাকার নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছয় বন্ধুর সঙ্গে বেড়াতে গিয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে। কে জানত, সেটাই তার শেষ আনন্দ!
গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় আশুগঞ্জের চরসোনারামপুর এলাকার মেঘনা নদীর পাড়ে সবাই মিলে আনন্দ করছিলেন। এ সময় সেলফি তুলতে গিয়ে হঠাৎ তানজীবা নদীতে পড়ে যান। ডুবে যান পানিতে। এরপর আজ রোববার বিকেলে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
এই নির্মম মৃত্যুর ঘটনা এখানেই শেষ নয়। তানজীবা পানিতে ডুবে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাকে বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দেন নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইশরাকুল মেহরাব। কিন্তু বান্ধবীকে বাঁচাতে গিয়ে তিনিও পানিতে ডুবে যান। এখনো তার খোঁজ মেলেনি।
মেঘনা নদীতে এই করুণ মৃত্যুর কাহিনী গড়ায় আরও অনেক দূর! তানজীবা ও ইশরাকুলকে পানিতে ডুবে যেতে দেখে তাদের বাঁচাতে একে একে নদীতে লাফ দেন ঘুরতে যাওয়া নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি পাঁচ শিক্ষার্থীও। কিন্তু তারাও পানিতে ডুবে যান। তবে ভাগ্যের জোরে পরের পাঁচজন বেঁচে যান। ঘটনার পরই স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
নৌবাহীনির ১২ সদস্যের ও ফায়ার সার্ভিসের ৯ সদস্যের দুটি ইউনিট আজ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে উদ্ধার কাজ শুরু করে। ডুবুরি দলগুলো গতকাল রাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছলে বৈরি আবহাওয়া ও প্রবল স্রোতের কারণে উদ্ধার কাজ শুরু করতে পারেনি। আজ দুপুরে ডুবুরি দলের যৌথ চেষ্টায় উপজেলার রেল ব্রিজের কাঠপট্টি নদীতে ভাসমান অবস্থায় সানজিদার লাশ উদ্ধার কর হয়।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আশুগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌসুমী বাইন হিরা। তিনি বলেন, নিখোঁজ আরেক শিক্ষার্থীর সন্ধানে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঘটনার পর থেকেই আশুগঞ্জের ইউএনও মৌসুমী বাইন হিরা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলম তালুকদার ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজের তদরকি করছেন। ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিস আশুগঞ্জ ও ভৈরবের ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌছে উদ্ধার কাজ শুরু করে।